Friday, 8 October 2021

আফগানিস্তানে জুমার নামাজের সময় বিস্ফোরণ, নিহত ৫০

আফগানিস্তানে জুমার নামাজের সময় বিস্ফোরণ, নিহত ৫০



আফগানিস্তানে উত্তরাঞ্চলীয় কুন্দুজ প্রদেশে শুক্রবার জুমার নামাজের সময় একটি মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫০ জন নিহত হয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।  

কুন্দুজ সেন্ট্রাল হাসপাতালের একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন,  এ পর্যন্ত ৩৫ জনের লাশ  ওই হাসপাতালে এসেছে। এছাড়া ৫০ জন আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসা দিয়েছেন তারা। 

ডক্টর উইদআউট বর্ডার (এমএসএফ) পরিচালিত আরেকটি হাসপাতালের আরেকজন চিকিৎসক জানান, তাদের হাসাপাতালে ১৫ জনের লাশ নিয়ে আসা হয়েছে।

তালেবানে তথ্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপমন্ত্রী জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বিস্ফোরণের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আজ কুন্দুজের রাজধানীর খানাবাদ বানদার এলাকার একটি মসজিদে বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। মসজিদটি শিয়া মতাবলম্বীদের।  বিস্ফোরণে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছে।

কুন্দুজের স্থানীয় ব্যবসায়ী জলমাই অলোকজাই বিস্ফোরণের পর হাসপাতালে গিয়েছিলেন আহতদের রক্ত দেওয়ার জন্য। তিনি সেখানকার পরিস্থিতিকে ভয়াবহ বলে উল্লেখ করেছেন। 

বিস্ফোরণের সময় সেখানে অন্তত তিনশ’ মুসল্লি ছিল বলে ঘটনাস্থলে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরা জানিয়েছেন। 

এমএফএস হাসপাতালের এক কর্মী বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন,  নিখোঁজ আত্মীয়ের কয়েকশ’ মানুষ হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হয়েছেন। তবে ফের বিস্ফোরণের আশঙ্কায় সশস্ত্র তালেবান যোদ্ধারা তাদের আটকে দিচ্ছে। 

এদিকে সেখানে শতাধিক মানুষ হতাহত হয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। আফগানিস্তানে জাতিসংঘ সহায়তা মিশন জানিয়েছে, আজ মসজিদের ভেতরে হামলায় শতাধিক মানুষের হতাহত হয়েছে। 

তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি।
নিজের নোবেল পাওয়ার খবর শুনে কলদাতাকে ধমকালেন আবদুলরাজাক!

নিজের নোবেল পাওয়ার খবর শুনে কলদাতাকে ধমকালেন আবদুলরাজাক!



এ বছর সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন তানজানিয়ার সাহিত্যিক আবদুলরাজাক গুরনাহ। তবে নিজের নোবেল পাওয়ার খবর কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না সদ্য বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পাওয়া এই সাহিত্যিক। নোবেল কর্তৃপক্ষের দেয়া ফোনকে এতটাই অবিশ্বাস হচ্ছিল যে, তিনি রীতিমতো কলদাতাকে ধমক দিয়েছিলেন।

আবদুলরাজাক তখন চা তৈরি করছিলেন। ঠিক এমন সময় তার ফোন বেজে ওঠে। ফোন ধরে নোবেল পাওয়ার কথা শুনে বিশ্বাস না করে উল্টো বিরক্ত হন তিনি। মজার এই ঘটনাটি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে নিজেই জানিয়েছেন আবদুলরাজাক।

সাক্ষাৎকারে আবদুলরাজাক বলেন, ‘ঘটনাটি মধ্যাহ্নভোজের কিছুক্ষণ আগের। নিজের জন্য চা তৈরি করছিলাম আমি। ঠিক সেই সময় ফোন বেজে ওঠে। ভাবলাম, কোনো বিক্রয় প্রতিনিধি হবে হয়তো। ফোন ধরলাম। ফোনে এক ব্যক্তি বললেন, হ্যালো, আপনি সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন। আমি বললাম, দূর হও! আমাকে একা থাকতে দাও।’

মূলত নিজের পুরস্কার জেতার খবর কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না আবদুলরাজাক। সেই ফোনে বিশ্বাস না করলেও পরে অবশ্য তিনি বিশ্বাস করেছিলেন, সাহিত্যের নোবেল যে তার হাতেই উঠেছে।

আবদুলরাজাক গুরনাহ নোবেল পেয়েছেন তার লেখা ‘প্যারাডাইস’ নামের একটি উপন্যাসের জন্য। বৃহস্পতিবার নোবেল বিজয়ী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করে সুইডিশ অ্যাকাডেমি।

ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জাঞ্জিবার দ্বীপে ১৯৪৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন আবদুলরাজাক গুরনাহ । ১৯৬০ দশকের শেষের দিকে শরণার্থী হিসেবে তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন ইংল্যান্ডে। তিনি এখন পর্যন্ত মোট ১০টি উপন্যাস লিখেছেন। এ ছাড়া তার লেখা বেশ কয়েকটি ছোটগল্পও রয়েছে।

আবদুলরাজাক নিজে শরণার্থী থাকায় তার লেখায় জীবন্ত হয়ে উঠেছে শরণার্থীদের জীবনের নানা জটিলতা। পাশাপাশি ঔপনিবেশিকতার দুর্দশাও দারুণভাবে প্রতিভাত হয়েছে তার লেখায়।
কলামিষ্ট মনজুর খানের মাতৃবিয়োগে সিলেট কেন্দ্রীয় লেখক ফোরামের শোক প্রকাশ

কলামিষ্ট মনজুর খানের মাতৃবিয়োগে সিলেট কেন্দ্রীয় লেখক ফোরামের শোক প্রকাশ

সিলেট কেন্দ্রীয় লেখক ফোরামের সিনিয়র সহ সভাপতি, বিশিষ্ট লেখক-কলামিস্ট মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খানের মাতা সাহেদা খানমের মৃত্যুতে সিলেট কেন্দ্রীয় লেখক ফোরামের সভাপতি আবু মালিহা, সাধারণ সম্পাদক শফিক আহমদ শফি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। 

এক শোকবার্তায় নেতৃবৃন্দ মরহুমার রূহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। 

উল্লেখ্য, মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খানের মাতা বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় দক্ষিণ সুরমা পাঠানপাড়া খানবাড়িস্থ নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন।

জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প

জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প


জাপানের রাজধানী টোকিও এবং আশপাশের এলাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। 

বৃহস্পতিবার রাতে আঘাত হানা ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ১। এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর না পাওয়া গেলেও বাসিন্দাদের নিরাপদে থাকার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন।

জাপানের আবহাওয়া সংস্থার প্রাথমিক তথ্য বলছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল রাজধানী টেকিওর পূর্বাঞ্চলের চিবা শহর। 

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৪১ মিনিটের দিকে এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়েছে চিবার ৮০ কিলোমিটার ভূগর্ভে। তবে ভূমিকম্পে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহত কিংবা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

ভূমিকম্পের পর টোকিও শত শত বাড়িঘর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি টোকিওতে যে কয়েকটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে তার মধ্যে বৃহস্পতিবারেরটি তুলনামূলক শক্তিশালী ছিল।

ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল সিলেটসহ পুরো দেশ

ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল সিলেটসহ পুরো দেশ


সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ৩১ মিনিটে হালকাভাবে ভূমিকম্প শুরু হয়ে কিছু সময় স্থায়ী থাকে। যদিও অনেকেই এ ভূকম্পন টের পায়নি।

তবে রিখটার স্কেলে এর মাত্রা কত বা এর উৎপত্তি স্থল কোথায় তা তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।

এর আগে চলতি বছরের ২৫ মে সিলেটে ৫ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। যার উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৩৬৬ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অর্থাৎ সিলেটের পূর্বে। ১৪ এপ্রিলের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেটের ডাউকি ফল্টের পার্শ্ববর্তী জৈন্তাপুর এলাকায়। এছাড়া ২৭ জানুয়ারি ৪ দশমিক ১ ও পরদিন ৪ দশমিক ৯ মাত্রায় ভূকম্পন অনূভত হয়। এরপর ২১ জুন (রোববার) বিকাল ৪টা ৪৯ মিনিটে ৫ দশমিক ১ মাত্রায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর প্রায় ১২ ঘণ্টা ব্যবধানে সোমবার (২২ জুন) ভোর ৪টা ৪০ মিনিটের দিকে দ্বিতীয় দফা ভূমিকম্প অনুভূত হয়। যার মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৮।

সর্বশেষ গত ৭ জুলাই সিলেটসহ দেশের কয়েকটি জেলায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। সে ভূমিম্পের মাত্রা ছিলো পাঁচ দশমিক ২। যার উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ২৪২ কিলোমিটার উত্তরে ভারতের লক্ষিপুর।
ডাঃ গিয়াস উদ্দিন স্মরণে ইনসাফ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির দোয়া মাহফিল

ডাঃ গিয়াস উদ্দিন স্মরণে ইনসাফ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির দোয়া মাহফিল



বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের গিয়াস মেডিকেল হলের সত্ত্বাধিকারী, গরীবের ডাক্তার নামে খ্যাত ডাঃ গিয়াস উদ্দিন স্মরণে দক্ষিণ সুরমার নাজিরবাজারস্থ ইনসাফ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির উদ্যোগে এক আলোচনা ও দোয়া মাহফিল ৫ অক্টোবর মঙ্গলবার রাতে মরহুমের সর্বাজপুরস্থ নিজ বাড়িতে অনুষ্ঠিত হয়।

ইনসাফ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি নোমান আহমদের সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিল পূর্ব আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ৬নং লালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ খায়রুল আফিয়ান চৌধুরী। 

সোসাইটির অর্থ সম্পাদক জসিম উদ্দিনের পরিচালনায় আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট সমাজসেবী ও রাজনীতিবিদ, সাবেক ইউপি সদস্য কামারুজ্জামান খান ফয়সল, রোটারী ক্লাব অব সিলেট সিটির সেক্রেটারী রোটারিয়ান এস.এ শফি, বিশিষ্ট সংগঠক ছাত্রনেতা হাফিজ ইউসুফ নিজামী, সোসাইটির উপদেষ্টা জয়নুল হক আলম, মরহুমের ভাই মহিউদ্দিন, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ আশফাক আহমদ, সোসাইটির সেক্রেটারী তোফায়েল আহমদ, সহ সভাপতি খায়রুল ইসলাম সুমেল, সাংগঠনিক সম্পাদক আমিম আহমদ, সমাজসেবী তোতা মিয়া প্রমুখ। 

মরহুম ডাঃ গিয়াস উদ্দিনের বিদেহি আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন হাফিজ ইউসুফ নিজামী।

Thursday, 7 October 2021

এবার হ-য-ব-র-ল জালিয়াতি জটিলতার মুখোমুখি নাসির-তামিমা

এবার হ-য-ব-র-ল জালিয়াতি জটিলতার মুখোমুখি নাসির-তামিমা



বিয়ে ও তালাক নিয়ে জাল-জালিয়াতি করে বেকায়দায় পড়ে গেছেন ক্রিকেটার নাসির হোসাইন ও সৌদিয়া এয়ারলাইনসের কেবিন ক্রু তামিমা সুলতানা। এই অনৈতিক কাজে পুরোপুরি সহযোগিতা করে তামিমার মা সুমী আক্তারেরও একই দশা। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) গভীর অনুসন্ধানের পর আদালতে জমা দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন বিশ্লেষণে নাসির-তামিমাদের দেওয়া ডকুমেন্টে ব্যাপক গড়মিল পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে, ‘তালাকের নোটিশ’ ও পুলিশের কাছে জমা দেওয়া ‘ভাড়াটিয়া নিবন্ধন ফরমে’ রয়েছে অস্বাভাবিক রকমের জালিয়াতির তথ্য।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাস্তবিকভাবে তালাক না দিয়েই স্বামী রাকিবের সঙ্গে তামিমা ভয়ঙ্কর জালিয়াতি করেছেন। যার ফলে ক্রিকেটার নাসিরের সঙ্গে ঢাকঢোল পিটিয়ে তামিমার যে বিয়ে হয়েছে সেটি অবৈধ। আর এই অবৈধ বিয়ের সম্পর্কে জড়াতে তারা জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া তালাকনামা তৈরি করেছেন। যে কারণে তাদেরকে নিতে হয়েছে নানান মিথ্যার আশ্রয়। মূলত সত্যকে চাপা দিতে গিয়েই ক্রিকেটার নাসির, কেবিন ক্রু তামিমা ও তার মা সুমি আক্তার এখন হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন। এ-সংক্রান্ত পর্যাপ্ত ডকুমেন্ট আরটিভি নিউজের হাতে রয়েছে।

ডকুমেন্ট ও তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী নাসির-তামিমার যত জালিয়াতি-


তালাকের নোটিশ ও ভাড়াটিয়া নিবন্ধন ফরমের তারিখে গড়মিল:

রাকিবের সঙ্গে তালাক হয়েছে, এমনটা প্রমাণ করতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে ‘স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে তালাকের নোটিস’-এর কপি সাংবাদিকদের হাতে দেওয়া হয়েছে। একইভাবে তদন্ত সংস্থা পিবিআইর কাছেও নাসির-তামিমা যৌথভাবে সেই তালাকের নোটিসের কপি প্রদান করেন। যেটিতে দেখা যায়- ২০১৬ সালের ২৩ ডিসেম্বর রাকিব হাসানকে ‘তালাক’ ঘোষণা দিয়েছেন তামিমা সুলতানা। যে ডকুমেন্টে তামিমার বাসার ঠিকানা উল্লেখ রয়েছে- বাসা নং-৫৩, রোড নং-০৩, উত্তরা সেক্টর-০৫।

অন্যদিকে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা পশ্চিম থানায় নথিভুক্ত করা ‘ভাড়াটিয়া নিবন্ধন ফরমে’ দেখা যায়, তামিমার বাসার ঠিকানা উল্লেখ রয়েছে, বাসা নং-৫৮ এর ষষ্ঠ তলা, রোড নং-০৩, উত্তরা সেক্টর-০৫। যে বাসায় তারা এখনও ভাড়া থাকছেন। আরটিভি নিউজের হাতে প্রমাণ রয়েছে, ওই ‘ভাড়াটিয়া নিবন্ধন ফরমটি’ তামিমার মা সুমি আক্তার নিজ হাতেই লিখে ২০১৯ সালের ১৬ জুন সংশ্লিষ্ট থানার বিট পুলিশের হাতে জমা দিয়েছিলেন। ফরমটিতে উল্লেখ রয়েছে, তারা এই ৫৮ নম্বর বাসায় ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে ভাড়া থাকছেন। বাড়িটির মালিকের নাম রোমন। এই বাড়িতে তাদের সঙ্গে সুমি আক্তারের ভাগ্নে পরিচয় দেওয়া ৩৮ বছর বয়সী বাবু এবং ভাগ্নি পরিচয় দেওয়া ৪০ বছর বয়সী মিলি নামের দুই জনও থাকছেন। তবে তারা আসলেই সুমী আক্তারে ভাগ্নে-ভাগ্নি কি না, সেটি এখনও নিশ্চিত নয়।

ভাড়াটিয়া নিবন্ধনের একই ফরমে উল্লেখ রয়েছে, তারা বর্তমান বাসায় আসার আগে উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের ০৯ নম্বর রোডের ১৪ নম্বর বাড়ির চতুর্থ তলায় ১৩ হাজার টাকায় ভাড়া থাকতেন। যে বাড়িটির মালিকের নাম আজাদ খন্দকার।

এমন তথ্য-প্রমাণে প্রশ্ন উঠেছে- তামিমা কী করে জানতেন আগামী ৬ মাস ৯ দিন পর তিনি ১৪ নম্বর সেক্টরের বাসা ছেড়ে ১ জুলাই ২০১৭ তারিখে ৫ নম্বর সেক্টরের বাসায় উঠবেন? আরও প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে তামিমার মা সুমী আক্তারের হাতে পূরণ করা ‘ভাড়াটিয়া নিবন্ধন ফরম’ বলছে, বর্তমান ৫ নম্বর সেক্টরের ৫৮ নম্বর বাসায় আসার আগে তারা ১৪ নম্বর সেক্টরের ১৪ নম্বর বাসায় ভাড়া থাকতেন। তাহলে কেমন করে তামিমা গত ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে ০৫ নম্বর সেক্টরের ৫৩ নম্বর বাড়ি থেকে তালাকের নোটিস পাঠালেন? অথচ পিবিআই তদন্ত করে প্রমাণ পেয়েছে, তামিমারা কখনই এই ৫৩ নম্বর বাড়িতে ছিলেন না। এই ঠিকানাটি তামিমার বাসা হিসেবে একেবারেই ভুয়া।

রাকিবের আইনজীবী ইশরাত হাসান আরটিভি নিউজকে বলেন, সত্য ঢাকতে গিয়ে নাসির-তামিমা ও তার মা সুমী আক্তার ভয়ঙ্কর জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন; যার অকাট্য প্রমাণ সংশ্লিষ্ট মামলাটির তদন্তকারী সংস্থা পিবিআইর প্রতিবেদনের উঠে এসেছে। এ বিষয়ে এবার আদালতই বিচারিক ব্যবস্থা নেবেন বলে আশা করছি।

তিনি আরও বলেন, ক্রিকেটার নাসির হোসাইন এবং কেবিন ক্রু তামিমা সুলতানার বিয়ে বৈধ নয় বলে আদালতে পিবিআই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। যথাযথভাবে তালাক না হওয়ায় তামিমা সুলতানা এখন পর্যন্ত ব্যবসায়ী রাকিব হাসানের স্ত্রী। ফলে, নাসির-তামিমার বিয়ে বৈধ হিসেবে গৃহীত হবে না। নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে রাকিব হাসানের দায়ের করা মামলায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতের কাছে অভিযোগপত্র দাখিল করেছিলো পিবিআই।

ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ক্রিকেটার নাসির হোসাইন, বিতর্কিত বিয়ে করে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত থাকা নাসিরের স্ত্রী পরিচয় দেয়া তামিমা সুলতানা ও তার মা সুমী আক্তারকে আগামী ৩১ অক্টোবর আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসীমের আদালত।

তালাক জালিয়াতির জন্য ঠিকানা লুকোচুরির বিষয়ে পিবিআইর তদন্ত প্রতিবেদনের চৌম্বকীয় অংশ নিচে তুলে ধরা হলো-

সেই দুই বাসার তথ্য-প্রমাণে রাকিব-তামিমা একসাথে ছিলেন

২২/০৪/২০১৭ তারিখে বিবাহ ও তালাক রেজিস্টার পরিচয় দেয়া ‘কাজী’ জসিম উদ্দিন সুমি আক্তারকে তার হাতে সবুজ রঙের লিখিত কাগজ দিয়ে বলে তার মেয়ের তালাক কার্যকরী হয়েছে। উপরোক্ত বক্তব্যের বিষয়ে আমি তদন্তকালীন সময়ে জানতে পারি যে, বাদী রাকিব হাসান এবং বিবাদী তামিমা সুলতানা ও তার পরিবারসহ ২৪/১২/২০১৪ তারিখে বাসা নং ১৪, রোড নং ০৯, সেক্টর ১৪ উত্তরাতে ১৩ হাজার টাকা ভাড়ায় ৪র্থ তলায় উত্তর পার্শ্বে ফ্লাটে ০১/০৭/২০১৭ তারিখ পর্যন্ত ভাড়া ছিলেন।

এবং ০১/০৭/২০১৭ তারিখে তামিমাদের নতুন বাসা নং-৫৮, রোড নং-০৩, সেক্টর-০৫ উত্তরাতে ওঠেন।

অর্থাৎ বিবাদী কর্তৃক বাদীকে তালাকের সময় ২৩/১২/২০১৬ তারিখ ও পরবর্তীতে ২২/০৪/২০১৭ তারিখে ২৭(১)(ঘ) অনুযায়ী তালাক তফউইজ রকমের তালাকের রেজিস্ট্রারী বহিতে রেজিস্ট্রিভুক্ত করার সময় সাক্ষ্য প্রমাণে বাসা নং-১৪, রোড নং-০৯, সেক্টর-১৪ উত্তরাতে ছিল।

থানায় রক্ষিত ভাড়াটিয়ার নিবন্ধন ফরম তথ্য বিবরণীতে দেখা যায়- বিবাদীর মা সুমী আক্তার, স্বামী শহিদুর রহমান ০১/০৭/২০১৭ তারিখে বাসা নং-৫৮, রোড নং-০৩, সেক্টর-০৫ উত্তরাতে বাসা ভাড়া নিয়ে ওঠে।

তামিমাদের আগের বাসা নং-১৪, রোড নং-০৯, সেক্টর-১৪ উত্তরা’র বর্তমান মালিকের সাক্ষ্য এবং বর্তমান বাসা নং-৫৮, রোড নং-০৩, সেক্টর-০৫ উত্তরা’র মালিকের সাক্ষ্য এবং উত্তরা পশ্চিম থানায় রক্ষিত সুমী আক্তারের নিজ হাতে লেখা ভাড়াটিয়া নিবন্ধন ফরম তথ্য বিবরণী মতে- বিবাদী তামিমা সুলতানা ও তার পরিবার মামলার বাদী রাকিব হাসানও একই সাথে ০১/০৭/২০১৭ তারিখে ০৫ নম্বর সেক্টরের ৩ রোডের ৫৮ নম্বর বাড়িতে ওঠে।

অর্থাৎ বিবাদী তামিমা সুলতানা কর্তৃক বাদীকে স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে তালাকের নোটিশ ২৩/১২/২০১৬ তারিখ প্রদান করার সময় বর্ণিত তালাকের নোটিশে উল্লেখিত ঠিকানা বাড়ী নং-৫৬, রোড নং-০৩, সেক্টর-০৫ থানা উত্তরা পশ্চিম ঢাকায় বাদী বা বিবাদীগন কখনই ছিলেন না।

পোস্টাল জালিয়াতি

পিবিআই তদন্ত প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে, রাকিবের গ্রামের বাড়ির ঠিকানা- ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থানার নিশাদনগর পোষ্ট অফিসের সাবপোষ্ট মাস্টার মোহাম্মদ আলী শামিমের জবানবন্দিতে এবং ঢাকা-১০০০ এর ডেপুটি পোষ্টমাস্টার মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজের দেয়া প্রতিবেদনে জানা যায়- ২৬/১২/২০১৬ তারিখে রাকিবের গ্রামের বাড়ির ঠিকানায় তালাকের নোটিশ প্রেরণের সত্যতা পাওয়া যায়নি।

এসব হ-য-ব-র-ল জালিয়াতির বিষয়ে জানতে তামিমার মা সুমী আক্তারের ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।