Sunday, 20 February 2022

যে কারণে যেভাবে হত্যার পর ছয় টুকরা করা হয় প্রবাসীর স্ত্রীকে!

যে কারণে যেভাবে হত্যার পর ছয় টুকরা করা হয় প্রবাসীর স্ত্রীকে!


কেন, কীভাবে হত্যা করা হয়েছিল সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের প্রবাসীর স্ত্রী শাহনাজ পারভীন জোসনাকে- সেই তথ্য বের করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। একটি ফার্মেসি থেকে জোসনার ছয় টুকরো লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতারের পর হত্যাকাণ্ডের রহস্য জানাল সিআইডি।

এ ঘটনায় শুক্রবার গ্রেফতার করা হয় ফার্মেসির মালিক জিতেশ চন্দ্র গোপ, তার বন্ধু অনজিৎ চন্দ্র গোপ ও অসীত চন্দ্র গোপকে।

শনিবার দুপুরে সিআইডির সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণ দেন সিআইডির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তাধর।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর থানার পৌর এলাকার ব্যারিস্টার আবদুল মতিন মার্কেটের অভি মেডিকেল হল নামের একটি ওষুধের দোকান থেকে শাহনাজ পারভীন জোসনার ছয় টুকরো লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। জোসনা জগন্নাথপুর থানার নারকেলতলা গ্রামের সৌদি প্রবাসী ছরুক মিয়ার স্ত্রী। এ ঘটনায় ওই দিনই নিহতের ভাই হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে জগন্নাথপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।

সিআইডি জানায়, শাহনাজ জোসনা ২০১৩ সাল থেকে জগন্নাথপুর পৌর শহরে নিজের বাসায় দুই ছেলে, এক মেয়ে, বৃদ্ধা মা ও ভাই-বোনদেরকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে মুক্তাধর জানান, ওষুধপত্র কেনার সুবাদে অভি মেডিকেল হলের মালিক জিতেশের সঙ্গে জোসনার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। জোসনা কিছুদিন ধরে গোপন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি জিতেশ জোসনার মায়ের প্রেশার মাপার জন্য তাদের বাড়িতে যান। তখন জোসনা তার গোপন সমস্যার কথা জিতেশকে জানালে তিনি তাকে দোকানে যেতে বলেন। ওই দিন বিকালে জোসনা জিতেশের দোকানে গেলে তাকে দোকানে কাস্টমার রয়েছে বলে অপেক্ষা করতে বলে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন।

মুক্তাধর আরও জানান, অনেক রাত হলে বাসায় যাওয়ার জন্য জোসনার অস্থিরতা বেড়ে যায়। তখন ওই ফার্মেসির মধ্যে তাকে একটি ঘুমের ওষুধ খেতে দেন জিতেশ। এতে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন জোসনা। তখন জিতেশ, তার দুই বন্ধু অনজিৎ এবং অসীত গোপ তাকে ধর্ষণের পরিকল্পনা করেন। জিতেশ তার ফার্মেসিতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার কক্ষে জোসনাকে বসিয়ে রাখেন। সেখানে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লে তাকে ঘরে রেখে ফার্মেসির তালা বন্ধ করে বাইরে চলে যান জিতেশ।

এরপর রাত গভীর হলে আশপাশের দোকান যখন বন্ধ হয়ে যায় তখন জিতেশ ও তার দুই বন্ধু ফার্মেসি খুলে এনার্জি ড্রিংকস পান করে ধর্ষণ করেন।

বিষয়টি শাহনাজ তার পরিবারকে জানিয়ে দেবেন বললে জিতেশ ও তার বন্ধুরা তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে এবং মুখে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে ওই ফার্মেসিতে থাকা ফল কাটার ছুরি দিয়ে লাশটি দুই হাত, দুই পা এবং বুক পেটসহ ছয়টি টুকরা করেন। এরপর দোকানে থাকা ওষুধের কার্টুন দিয়ে খণ্ডিত অংশগুলো ঢেকে রেখে ফার্মেসিতে তালা লাগিয়ে চলে যান। পরে খণ্ডিত লাশ পাশের একটি মাছের খামারে ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু ভোর হয়ে যাওয়ায় এবং লোকজন চলে আসায় তারা সেই কাজটি করতে পারেননি।

সংবাদ সম্মেলনে মুক্তাধর বলেন, এ ঘটনার পর সিআইডির এলআইসি শাখার একাধিক দল আসামি গ্রেফতারের জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায়। শুক্রবার রাজধানীর ভাটারা থানার নুরেরচালা এলাকায় অভিযান চালিয়ে জিতেশকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর জগন্নাথপুর থানার পৌর এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় অনজিৎ এবং অসীত গোপকে।

গ্রেফতার জিতেশ চন্দ্র গোপ কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার শহিলা গ্রামের যাদব চন্দ্র গোপের ছেলে, অনজিৎ চন্দ্র গোপ একই এলাকার রসময় চন্দ্র গোপের ছেলে ও অসীত চন্দ্র গোপ নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার সুয়াইর অলিপুর গ্রামের পতিত পবন গোপের ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- সিআইডির বিশেষ সহকারী পুলিশ সুপার রাকিবুল ইসলাম ও মোহাম্মদ শাহজাহান খান। 
আসেন খেলি, আমি খেলতে চাই: শামীম ওসমান

আসেন খেলি, আমি খেলতে চাই: শামীম ওসমান


নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, চারিদিকে গন্ধ পাচ্ছি। আগে থেকেই আমি গন্ধ পাই এবং যা বলি তা হয়। জানি গতকাল গাজীপুরে কোথায় মিটিং হয়েছে। জানি নারায়ণগঞ্জে কোথায় মিটিং হয়েছে। এই নারায়ণগঞ্জে খান সাহেব ওসমান আলীর বাড়িতে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল। আপনারা যদি খেলতে চান। আসেন খেলি, আমি খেলতে চাই। কারণ আমরা খেলতে খেলতে এ জায়গায় এসেছি।

তিনি বলেন, আমার বিয়ের আগের দিন মা বলল বাসা থেকে বের হবে না। এমন সময় শুনলাম নেত্রীর ওপর গুলি হয়েছে। বসে থাকতে পারিনি। যা ছিল সেটা নিয়েই বের হলাম। পুলিশ চারিদিক দিয়ে ঘিরে ফেলেছে। পরে আমি বললাম আজকে অ্যারেস্ট কইরেন না। কালকে আমার বিয়ে। পরে আমাকে ছেড়ে দেন। বাচ্চা জন্মের সময় জেলে ছিলাম। আমাদের জন্মের সময় আমার বাবা জেলে ছিলেন। তাই আমাদের নিয়ে খেলতে আইসেন না।

শনিবার বিকালে শহরের কালিরবাজারে জেলা সরকারি গ্রন্থাগারে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামীম ওসমান এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, তিনটি কারণে আমি টার্গেট হয়েছিলাম। নারায়ণগঞ্জে একটা নিষিদ্ধ পল্লি ছিল। সেখানে ইজ্জত বিক্রি হতো। নারায়ণগঞ্জে পুলিশ তখন পেত ৪৫ টাকা। ৫০টা মদের দোকান ছিল। ১৪ থেকে ১৫ হাজার লোক ছিল। আমি কাবা শরিফ ছুঁয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, আমি আপাকে বললাম আমি এই শপথ করেছি। তিনি বললেন- তুমি করো। আমি বললাম বাধা আসবে, তিনি বললেন বাধা আসবেই। তখন সবাই মিলে সাড়ে তিন কোটি টাকা দিল। আমার বড়ভাই সেলিম ওসমান দিলেন দেড় কোটি টাকা। সেই টাকা দিয়ে তাদের পুনর্বাসিত করেছি। পতিতালয় উচ্ছেদ করা, গোলাম আযমকে নারায়ণগঞ্জে নিষিদ্ধ করা এবং যে রাতে ক্যু হবার কথা ছিল সেটি রুখতে সেদিন নির্দেশিত হয়ে লংমার্চ ঠেকিয়েছিলাম। এই তিনটি কারণে আমি টার্গেট হয়েছি। তারা নেই কিন্তু তাদের তাবেদাররা এখনো আমাকে টার্গেট করছে।

শামীম ওসমান বলেন, চাষাঢ়ার হলটির নাম জিয়া হল ছিল না। সেটা টাউন হল ছিল। আমি সেটাকে মুক্তিযোদ্ধাদের নামে করেছিলাম। পরবর্তীকালে এসে আবার দেখলাম সেটা জিয়া হল। কারো নাম নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই। এটা জেলা প্রশাসকের প্রপার্টি। এখানে কমিটি নেই, যারা ছিলেন মারা গেছেন। আমি চেয়েছিলাম এটা ওয়ান স্টপ সার্ভিস হবে। তারা সবকিছু এখানে পাবে।

তিনি আরও বলেন, আমার ছোট বাচ্চারা যারা আছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই- একটা মানুষ কাজ করলেই প্রশান্তি হয় না। এখানে জেলা প্রশাসন আছেন। তাদের ছাড়া আমি পারব না। সত্য লেখা দায়িত্ব সাংবাদিকদের। জনগণের ভোটে পাশ করেছি তাই কাজ করা আমাদের দায়িত্ব। নারায়ণগঞ্জের ৯০ শতাংশ কাজ আমাদের হাত দিয়ে এসেছে। তোলারাম কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য পদত্যাগ করেছিলাম। ডিএনডির জন্য সংসদে মন্ত্রীকে বলেছিলাম আমি পদত্যাগ করব না হয় আপনি পদত্যাগ করবেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে কিছু জিনিস চেয়েছিলাম। তখন বলল তুমি কী চাও। আমি বললাম ডিএনডি, লিংক রোডসহ কয়েকটি প্রজেক্ট চেয়েছি এবং তিনি দিয়েছেন। তখন তিনি বললেন এটুকুই তোমার চাওয়া। এতে তোমার লাভ কী। তখন বললাম মৃত্যুর পরে যেন মানুষ আমার জন্য কাঁদে। 

Saturday, 19 February 2022

বানিগাজীতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাজিরা বেগম শিলা

বানিগাজীতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাজিরা বেগম শিলা

গোলাপগঞ্জের বুধবারীবাজার ইউনিয়নের বানিগাজী গ্রামের পুড়ে যাওয়া সেই বসতঘর পরিদর্শন করেছেন উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাজিরা বেগম শিলা। শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তিনি খাদ্য সামগ্রী ও শীত নিবারণী কম্বল নিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ান।

এসময় পরিবারগুলোর সাথে তিনি কথা বলেন এবং স্বচক্ষে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া বসতঘর ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দেখে তাদের প্রতি সহানুভূতি জানান।

ঘরের ভিতর পুড়ে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ

পরিদর্শন শেষে নাজিরা বেগম শিলা বলেন, আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করবো উপজেলা পরিষদ এবং সরকারের বিশেষ তহবিল হতে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর জন্য তিনি সমাজের বিত্তবানদের প্রতিও আহবান জানান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলিম উদ্দিন বাবলু, বানিগাজী ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুর নুর, উপজেলা যুবলীগ নেতা তারেক আহমদ, বুধবারীবাজার ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জুনেদ আহমদ লিটন, কুশিয়ারা নিউজ ডটকমের সম্পাদক সালমান কাদের দিপু, সিলেট মহানগর ছাত্রলীগ নেতা তাহের আহমদ প্রমুখ।

ঘরের ভিতর পুড়ে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ

উল্লেখ্য, গতকাল (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বানিগাজী গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী আব্দুল ফয়েজ মাস্টার এবং বুধবারীবাজার ইউনিয়ন যুবলীগের কোষাধ্যক্ষ ও পূবালী ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল হামিদের যৌথ ঘরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় যৌথঘরের ৬টি রুমই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

এছাড়া, অগ্নিকাণ্ডের সময় আগুনের ব্যাপকতায় পার্শ্ববর্তী আব্দুল মুহিতের বসতঘরেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে আব্দুল মুহিতের বসতঘরেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

এ দুর্ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও দু'টি বসতঘরের প্রায় ১৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।


এদিকে, দুর্ঘটনার সময় জরুরী সেবা ৯৯৯-এ কলের ভিত্তিতে দ্রুত সময়ে গোলাপগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস টিম দুর্ঘটনাস্থলে পৌছায়। তবে ফায়ার সার্ভিস টিম আসার পূর্বেই অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ মুহুর্তে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে বৃহত্তর চন্দরপুর এলাকাবাসী এগিয়ে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে আপ্রাণ চেষ্টা করেন। এসময় শতশত মানুষের আপ্রাণ চেষ্টায় আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসলেও দমকল বাহিনী এসেই পুরোপুরি আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর গোলাপগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস টিমের লিডার মোঃ লিয়াকত আলী জানান বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। এলাকাসীর সহযোগিতায় দীর্ঘসময়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলেও জানান তিনি।
গোলাপগঞ্জে নিহত তারিকের দাফন সম্পন্ন

গোলাপগঞ্জে নিহত তারিকের দাফন সম্পন্ন


গোলাপগঞ্জে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত তারিক আহমদকে ( ২৬) দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কোন মামলা দায়ের করা না হলেও এর প্রস্তুতি চলছে বলে নির্ভরযোগ্য পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।

জানা যায়, গোলাপগঞ্জ পৌরসভার রণকেলি নয়াগ্রাম এলাকার মৃত তখলিছ আলীর ছেলে তারিক আহমদ ( ২৬)। শুক্রবার ( ১৮ ফেব্রুয়ারি ) বিকালে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নুরপাড়া রাঙাবিছরা গ্রামে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ছুরিকাঘাতে মারাত্মক আহত হন তারিকসহ আরও দু’জন। তাদের হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তারিককে মৃত ঘোষণা করেন। 
 
তাল লাশ ময়না তদন্ত শেষে আজ শনিবার পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাদ আসর জানাজা শেষে তাদের পারিবারিক গোরস্তানে তারিককে দাফন করা হয়।

কয়েকশ’ মানুষ তারিকের জানাজায় উপস্থিত হন এবং অনেকেই তার জীবনের নানা দিক নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন। 

এদিকে তারিক হত্যাকান্ডের ঘটনায় এখনো কোন মামলা দায়ের করা হয়নি বলে তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। দাফন শেষ হয়েছে। আজই মামলা দায়েরের ইঙ্গিত দিয়েছে সূত্রটি। এ ব্যাপারে প্রস্তুতি চলছে।

জানা গেছে, তারিক হত্যাকান্ডের ঘটনায় গোলাপগঞ্জ পৌর এলাকায় শোকের ছায়া বিরাজ করছে। তিনি একজন ক্রীড়া মনস্ক মানুষ ছিলেন। বিশেষ করে স্থানীয় তরুণ সমাজ এ ব্যাপারে গভীর শোকাহত। তারা শুক্রবার বিকেলে প্রতিবাদ মিছিল করেছেন। আগামীতে আরও কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

এ ঘটনায় আহত হয়েছেন রণকেলি নয়াগ্রামের তছন আলীর ছেলে আবু সুফিয়ান (২০) ও পারভেজ আহমদ (২১)। তাদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এখনো তাদের অবস্থার তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। 
যে পার্কে টিকিট কেটে ঢুকলেই মেলে হীরা!

যে পার্কে টিকিট কেটে ঢুকলেই মেলে হীরা!


হীরার প্রতি দুর্বলতা কার না আছে। কিন্তু তা কেনার সামর্থ্য নেই অনেকের। যদি এমন হতো, কোনো হীরার খনিতে গেলেই মিলে যেত হীরা! হ্যাঁ, এমনটাই হচ্ছে আমেরিকায়।

আমেরিকার আরকানসাস স্টেট পার্কে এমনটাই সম্ভব হয়ে উঠেছে। এই পার্কটি অনেকের কাছেই ডায়মন্ডস স্টেট পার্ক নামেও পরিচিত। আরকানসাসের পাইক কাউন্টিতে মারফ্রিজবোরো শহরে প্রায় ৯১১ একর জমিজুড়ে গড়ে উঠেছে এই হীরার পার্ক। যার মধ্যে সাড়ে ৩৭ একর জুড়েই রয়েছে ‘হীরার খনি’।
 
এই পার্কে যে কেউ প্রবেশ করতে পারে। তবে তার জন্য অনলাইনে বা সশরীরে টিকিট কাটতে হবে। অসংখ্য মানুষ হীরা পাওয়ার আশায় এই পার্কটিতে এসে ভিড় জমান। কারণ, আমেরিকার ওই পার্কে মাটি খোঁড়ার পর হীরার দেখা পাওয়া যায়।

তাই যে কেউ চাইলেই এখানে ঢুকে নিজেদের যন্ত্রপাতি নিয়ে হীরার খোঁজে খোঁড়াখুঁড়ি করতে পারেন। অথবা চাইলে এসব যন্ত্রপাতি ভাড়াও নিতে পারেন। তবে একটি শর্ত রয়েছে। এই পার্কে ব্যাটারি বা মোটরচালিত যন্ত্র নিয়ে ঢোকা নিষিদ্ধ।

শতাব্দীপ্রাচীন ওই পার্কে হীরার খোঁজ চলছে সেই ১৯০৬ সাল থেকে। তখন অবশ্য এর মালিকানা ছিল জন হাডলসটনের কাছে। ১৯৭২ সালে একে স্টেট পার্কের মর্যাদা দেয় আরকানসাস ডিপার্টমেন্ট অব পার্কস অ্যান্ড ট্যুরিজম।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯০৬ সালে ২৪৩ একর খামারবাড়ির জমিতে দুটি অদ্ভুত হীরা খুঁজে পান হাডলসটন। কিন্তু তার পরের মাসেই লিটল রক নামে এক বিনিয়োগকারী গোষ্ঠীর কাছে ওই ২৪৩ একরের একাংশ বেচে দেন হাডলসটন এবং তার স্ত্রী সারা।
 
জমি কেনার পর এর মান পরীক্ষা করিয়েছিলেন লিটল রক গোষ্ঠীর কর্ণধার স্যামুয়েল এফ রেবার্ন। তারপর থেকে বহুবার ওই জমিতে বাণিজ্যিকভাবে খননকাজ শুরু হলেও তা সফল হয়নি। যদিও ১৯০৭ থেকে ১৯৩২ সালের মধ্যে জমির উপরিস্তরে ক্ষয়ের পর প্রায়ই তিরিশ ক্যারট বা তার বেশি ওজনের হীরা পাওয়া যেত।

হীরা পাওয়ার খবর হুহু করে ছড়িয়েছিল মারফ্রিজবোরো শহরে। তার খোঁজে ওই জমিতে আশপাশের শহর থেকেও ভিড় বাড়ছিল। কথিত রয়েছে যে, সে সময় হাজার হাজার পর্যটককে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন মারফ্রিজবোরো শহরের হোটেল মালিকেরা।

হীরার টানে ওই জায়গাটি পর্যটকদের কাছেও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। অনেকের দাবি, হীরার খোঁজে আসা পর্যটকেরা ওই জমির আশপাশেই আস্ত একটি তাঁবু শহর গড়ে ফেলেছিলেন। তার নাম দিয়েছিলেন ‘কিম্বার্লি’। পুরোটাই দক্ষিণ আফ্রিকার বিখ্যাত হীরার খনি শহর কিম্বার্লির নামে। যদিও আমেরিকায় কিম্বার্লি শহরের গোড়াপত্তন নিয়ে গল্পে বিশ্বাসী নন অনেকেই। ধীরে ধীরে হীরা খোঁজার উৎসাহীদের সংখ্যাও কমে যায়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ওই জমির মালিকানা নিজের হাতে নেয় আমেরিকা সরকার। এরপর গ্লেন মার্টিন নামে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে তাকে সেখানে খননকাজের অনুমতি দেয়। তবে খনিশ্রমিকদের মজুরির ব্যয়বহুল হওয়ায় সে পরিকল্পনা সফল হয়নি। বিশ্বযুদ্ধের শেষে পূর্বতন মালিককে ওই সম্পত্তি ফিরিয়ে দেয় সরকার। ১৯৫২ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত হীরার খোঁজে সেখানে ভিড় লেগেই ছিল।

১৯৫১ সালে ওই হীরার খনিকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের ভিড়ের ফায়দা তুলতে এগিয়ে এসেছিলেন লেখক তথা প্রোমোটর হাওয়ার্ড এ মিলার এবং তার স্ত্রী মোডিয়ান। দেশজুড়ে প্রচার শুরু করেন তারা। এর ফলও মিলেছিল হাতেনাতে। ভিড় করেছিলেন পর্যটকেরা। ১৯৫৬ সালে ওই গর্ত থেকে ৩৪.২৫ ক্যারট বা ৬.৮৫০ গ্রামের নীল রঙের হীরা খুঁজে পান জন পোলক। এরপর থেকেই এই জায়গা ঘিরে নানা কথা ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে।

ডায়মন্ডস স্টেট পার্কে মূলত সাদা, পিঙ্গল এবং হলদে এই তিন রঙের হীরা পাওয়া যায়। ’৭২ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত সেখানে ৩৩ হাজার ১০০টি হীরার সন্ধান মিলেছে। তবে আপনার যদি হীরা খুঁজতে ভালো না লাগে, তবে এই পার্কটিতে ঘুরেও আসতে পারেন। কারণ, পার্কে হীরার খনি ছাড়াও পিকনিক করার ব্যবস্থা রয়েছে। তাঁবু খাটিয়ে সময় কাটানোর জন্য ৪৭টি নির্দিষ্ট জায়গাও রয়েছে। রয়েছে গিফট শপ এবং ওয়াটার পার্কও। 
ইসি গঠনে সংক্ষিপ্ত তালিকায় ২০ জনের নাম, ফের বৈঠক রোববার

ইসি গঠনে সংক্ষিপ্ত তালিকায় ২০ জনের নাম, ফের বৈঠক রোববার


প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে যোগ্য ১০ জনের নাম সুপারিশের জন্য ফের বৈঠক করেছে সার্চ কমিটি।

শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে এ বৈঠক শুরু হয়ে শেষ হয় দুপুর ১টায়।বৈঠকে নির্বাচন কমিশন গঠনে ৩২২ জন থেকে বাছাই করে ২০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা চূড়ান্ত করেছে সার্চ কমিটি।

সার্চ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব শামসুল আরেফিন। তিনি বলেন, ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করতে আগামীকাল রোববার আবারো বৈঠকে বসবে কমিটি।বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সার্চ কমিটির প্রধান আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

সভায় সার্চ কমিটির সদস্য বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন, লেখক-অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক, মহা হিসাব নিয়ন্ত্রক ও নিরীক্ষক (সিএজি) মুসলিম চৌধুরী এবং সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন উপস্থিত আছেন।

এর আগে শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) প্রথম দফায় বেলা সোয়া ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় দফায় দুপুর ১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত এবং রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিশিষ্টজনদের মতামত নেয় সার্চ কমিটি।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়েছে সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি)। আইন অনুযায়ী, অনুসন্ধান কমিটি গঠনের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে যোগ্য ব্যক্তিদের নাম জমা দেবে।

অনুসন্ধান কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারদের প্রতি পদের জন্য ২ জন করে ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবে। এ ১০ জনের মধ্য থেকে সিইসিসহ পাঁচজনকে দিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি। দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথমবারের মতো আইন অনুযায়ী ইসি গঠিত হচ্ছে।

এর আগে শনিবার নির্বাচন কমিশন গঠনে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে দেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয়।

কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এ অনুসন্ধান কমিটি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ মোতাবেক দায়িত্ব ও কার্যাবলী সম্পন্ন করবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অনুসন্ধান কমিটির কার্যসম্পাদনে প্রয়োজনীয় সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবে। 
যুক্তরাজ্যে ঘূর্ণিঝড় ইউনিসের তাণ্ডবে নিহত ৯

যুক্তরাজ্যে ঘূর্ণিঝড় ইউনিসের তাণ্ডবে নিহত ৯


প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত যুক্তরাজ্য। ঝড়ের তাণ্ডবে উড়ে গেছে একাধিক বাড়ির ছাদ। ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার বেগে প্রবল ঝোড়ো হাওয়ায় ভেঙেছে গাড়ি, উপড়ে গেছে গাছ। ঝড়ে এ পর্যন্ত অন্তত নয় জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে।

আবহাওবিদেরা জানাচ্ছেন, সাম্প্রতিক সময়ে এমন বিধ্বংসী ঝড় যুক্তরাজ্যে দেখা যায়নি। সংবাদমাধ্যম ইভেনিং স্ট্যান্ডার্ড জানিয়েছে, শুক্রবার লিভারপুলে ঝড়ের তাণ্ডবে গাড়ি উলটে মৃত্যু হয়েছে এক বৃদ্ধের। এ ছাড়া আয়ারল্যান্ডে ৬০ বছর বয়সি এক বৃদ্ধার ওপর গাছ ভেঙে পড়লে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। ঝড়ের বেগে লন্ডনের ও-টু অ্যারেনা স্টেডিয়ামের ছাদ উড়ে গেছে। একাধিক বাড়ি তছনছ হয়ে গেছে। বিপর্যস্ত পরিবহণ ব্যবস্থাও।

অন্তর্জালে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিও ক্লিপে দেখা যাচ্ছে, লিভারপুল, কর্নওয়াল, আয়ারল্যান্ড ইত্যাদি স্থানে ঝোড়ো হাওয়ার তাণ্ডব। লন্ডন ও দক্ষিণ ইংল্যান্ডের একাধিক এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা নেই।

পরিষেবা সচল রাখা এবং উদ্ধারকাজ পরিচালনায় কাজ করে যাচ্ছে প্রশাসন। ঝড়ের কারণে একের পর এক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। লন্ডনের গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরগুলোতে সব মিলিয়ে দুই লাখ মানুষ আটকে পড়েন।