Sunday, 8 August 2021

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের উদ্যোগে শুরু হচ্ছে "বঙ্গমাতা অক্সিজেন সেবা" কর্মসূচি

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের উদ্যোগে শুরু হচ্ছে "বঙ্গমাতা অক্সিজেন সেবা" কর্মসূচি




বাংলাদেশ ছাত্রলীগের উদ্যোগে দেশব্যাপী শুরু হচ্ছে "বঙ্গমাতা অক্সিজেন সেবা"। বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মদিন উপলক্ষে এ কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।


বঙ্গমাতার জন্মদিবসের প্রারম্ভে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি এ তথ্য জানানো হয়।


এতে বলা হয়, ৮ আগস্ট সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙ্গালী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর সহধর্মিণী, মহিয়সী নারী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার রত্নগর্ভা মাতা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী। বঙ্গমাতা ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোয়াপ্লগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নীরব দক্ষ সংগঠক হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের প্রতিটি ধাপে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন এবং বঙ্গবন্ধুকে হিমালয়সম আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। বঙ্গবন্ধু, বাঙ্গালী ও বাংলাদেশ যেমন একই সূত্রে গাঁথা, তেমনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবও পরষ্পর অবিচ্ছেদ্য নাম। বাঙালির নিরন্তন প্রেরণার চিরন্তন উৎস, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর পুরো রাজনৈতিক জীবনে ছায়ার মতো পাশে ছিলেন তিনি। ১৯৭৫ সালের কালোরাতে তিনি জাতির পিতার হত্যাকারীদের হাতে নির্মমভাবে মৃত্যুবরণ করেন। আটপৌঢ়ে সাধারণ বাঙালি গৃহবধূ কিন্তু তীক্ষ্ণ বুদ্ধি সম্পন্ন, ধৈর্যশীল, সংগ্রামী এবং স্নেহ-ভালোবাসার আধার ছিলেন বঙ্গমাতা। জাতির পিতার অনুপস্থিতিতে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মাতৃতুল্য স্নেহে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে আগলে রেখেছিলেন। বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এবং করোনা মহামারীর কারণে দেশ ও জাতির এই ক্রান্তিকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ দেশব্যাপী একযোগে চালু করতে যাচ্ছে "বঙ্গমাতা অক্সিজেন সেবা"।


স্থানঃ মধুর ক্যান্টিন তারিখঃ ০৮/০৮/২০২১ সময়ঃ বিকেল ৫ ঘটিকা।

এ কর্মসূচিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সকল নেতাকর্মীকে যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।



লালাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান পীর ইকবালের মাতৃবিয়োগঃ দাফন সম্পন্ন, বিভিন্ন মহলের শোক

লালাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান পীর ইকবালের মাতৃবিয়োগঃ দাফন সম্পন্ন, বিভিন্ন মহলের শোক



দক্ষিন সুরমা উপজেলার ৬নং লালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পীর ফয়জুল হক ইকবালের মাতা সানোয়ারা খানম চৌধুরী শনিবার (৭ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় নগরীর একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন, ইন্না-লিল্লাহি.... রাজিউন।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তিনি এক পুত্র, এক কন্যা, নাতি নাতনীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।


মরহুমার জানাযার নামাজ শনিবার (৭ আগস্ট) বাদ মাগরিব বাগেরখলা পীরবাড়ীস্হ নিজ বাড়ীতে অনুষ্ঠিত হয়। পরে মরহুমার লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানাযার নামাজে উপস্থিত ছিলেন সিলেট ৩ আসনের জাতীয় পার্টি মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আলহাজ্ব আতিকুর রহমান আতিক, আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব।

জানাজা পূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরীর সাবেক আমীর এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, দক্ষিন সুরমা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা লোকমান আহমদ, সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফারুক আহমদ, যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় শ্রমিকলীগের সাধারন সম্পাদক জুয়েল আহমদ, সিলেট জেলা বিএনপি নেতা অধ্যক্ষ জিল্লুর রহমান শোয়েব, হযরত আবু দৌলত শাহ জাকারিয়া মডেল মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাওলানা ফারুক আহমদ, সাবেক চেয়ারম্যান খায়রুল আফিয়ান চৌধুরী প্রমুখ
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যূদয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা রেণুর অবদান

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যূদয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা রেণুর অবদান

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যূদয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা রেণুর অবদান
মো. আব্দুল মালিক

কবি বলেছেন, -
‘রাজা করিতেছে রাজ্য শাসন, রাজারে শাসিছে রানী।
রানীর দরদে ধুইয়া গিয়াছে, রাজ্যের যত গ্লানি।’
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আক্ষরিক অর্থে বাংলার রাজা না হলেও তিনি ছিলেন বাঙালি জাতির মুকুটহীন সম্রাট। শেখ মুজিবুর রহমান একদিনে বঙ্গবন্ধু বা জাতির জনক বা সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হন নাই। তিনি ধাপে ধাপে খ্যাতির এই শীর্ষে আরোহন করেছেন। আর এই শীর্ষে আরোহণের পিছনে যে মানুষটি তাঁকে ছায়ার মতো অনুসরণ করেছিলেন, আগলে রেখেছিলেন, সাহস যুগিয়েছিলেন, উৎসাহ-উদ্দীপনা, বুদ্ধি পরামর্শ দিয়েছিলেন, নিজের জীবনের সুখ সাচ্ছন্দ্য বিসর্জন দিয়ে আর্থিক সাহায্য করেছিলেন তিনি আর কেউ নন- তিনি হলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব। যার ডাক নাম রেণু।


শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আপন চাচাতো বোন। পিতা-মাতা মারা যাওয়ায় দাদা শেখ কাশেম তাঁর দুই নাতনি ফজিলাতুন নেছা ও জিন্নাতুন নেছাকে দুই ভাতিজার সাথে বাল্য বিয়ে দেন। তখন ফজিলাতুন নেছার বয়স ছিল মাত্র তিন বছর। পাঁচ বৎসর বয়সে ফজিলাতুন নেছা রেণু আসেন বঙ্গবন্ধুর পরিবারে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মা-বাবা ভবিষ্যৎ পুত্রবধু ফজিলাতুন নেছাকে বঙ্গবন্ধুর যোগ্য সহধর্মিনী হিসেবে গড়ে তুলতে থাকেন। তাঁদের সেই পরিশ্রম বৃথা যায় নি। বঙ্গবন্ধু ছাত্রাবস্থায়ই সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি অষ্টম শ্রেণির ছাত্র থাকাকালীন প্রথম জেলে যান এবং মাত্র ৫৫ বছর ০৪ মাস ২৭ দিন জীবনের মধ্যে বিভিন্ন মামলায় প্রায় ৮ বছর ৫ মাস ২৩ দিন জেলে অতিবাহিত করেন। এই জেল জীবনে বঙ্গবন্ধুর খোঁজ খবর নেয়া, তাঁকে জেল থেকে বের করা, আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলার জন্য নেতাকর্মীদের সংগঠিত করা, পরামর্শ দেয়া, নেতাকর্মীরা জেলে গেলে তাদের পরিবারের খোঁজ নেয়া সর্বোপরি নিজের পরিবার সামলানো- এ ছিল এক বিরাট চ্যালেঞ্জ এবং ভীষণ দূর্বিসহ জীবন। তখন বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে কেউ বাসা ভাড়া দিতে রাজি হতো না, দিলেও কিছুদিনের মধ্যে ছেড়ে দিতে হতো। আত্মীয় স্বজনরা পর্যন্ত সম্পর্ক রাখতে চাইতো না পাছে সরকারের রোষানলে পড়তে হয় এই ভয়ে। কিন্তু বঙ্গমাতা এতো সব সমস্যার মধ্যেও কখনো ভেঙ্গে পড়েন নি, হতাশ হন নি বা বঙ্গবন্ধুকে ছেড়ে যান নি। বিশ্বের ইতিহাসে এমন নির্যাতিত-নিপীড়িত নেতার স্ত্রী স্বামীকে ছেড়ে চলেগেছেন এমন প্রমানও আছে। বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছেলেমেয়েদের যথাযথ শিক্ষার ব্যবস্থা করেছেন, আত্মীয় স্বজন, নেতাকর্মীদের খোঁজ-খবর রেখেছেন। তাদের বিপদে আপদে এগিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধুকে জেল থেকে বের করার জন্য বারবার আদালত পাড়ায় ও আইনজীবীর চেম্বারে গেছেন কিন্তু কখনো স্বামীর মুক্তির জন্য স্বৈরাচারী সরকারের সাথে, অপশক্তির সাথে আপোষ করেন নি।

বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা আন্দোলনে ভীত হয়ে স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকার তাঁকে ফাঁসি কাষ্টে ঝোলানোর জন্য আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় গ্রেফতার করে জেলে পুরে। এদিকে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা নেতাকর্মীদের নিয়ে এমন তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন যার ফলে সরকার বাধ্য হয় বিরোধী দলীয় নেতাদের সাথে গোলটেবিল আলোচনায় বসতে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া সেই গোলটেবিল বৈঠক অর্থহীন হবে বিধায় আইয়ুব খান বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে মুক্তি দিতে চান। এদিকে আওয়ামীলীগের প্রথম সারির নেতারাও বঙ্গবন্ধুর প্যারোলে মুক্তির জন্য রাজি। কিন্তু বাদ সাধলেন বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব। তিনি খবর পেয়ে দ্রুত ছুটে যান জেলে। বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করে তিনি জানতে চান, বঙ্গবন্ধু প্যারোলে মুক্তি নিয়ে জেল থেকে বেরিয়ে আসতেছেন কি না ? বঙ্গবন্ধু জবাবে বলেন, এ ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত নেই নি। তখন বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুকে বলেন,- “তুমি মুক্তি পেলে দুনিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশী খুশি হবো আমি। কিন্তু আমি বলছি তুমি প্যারোলে মুক্তি নিয়ে জেল থেকে বের হবে না। সরকার যদি তোমাকে বেকসুর খালাস দেয় তো বের হবে, নতুবা বের হবে না এটা আমার সাফ কথা।” বঙ্গবন্ধু তাঁর কথায় রাজি হলেন, তিনি প্যারোলে মুক্তি নিলেন না। পরে সরকার বাধ্য হয়ে তাঁকে ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি জেল থেকে মুক্তি দেয় এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি পল্টনে ছাত্রনেতারা তাঁকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করেন। সেদিন যদি বঙ্গবন্ধু প্যারোলে মুক্তি নিয়ে জেল থেকে বের হতেন তাহলে হয়তো তিনি জীবনে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত হতে পারতেন না।
সত্তরের নির্বাচনের পর পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠী যখন ক্ষমতা হস্তান্তরে টাল বাহানা শুরু করে তখন শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালির আন্দোলন সংগ্রাম। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে জাতির উদ্দেশ্যে অতি গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারণী বক্তব্য রাখবেন। এ নিয়ে তখন পূর্ব পাকিস্তানে টান টান উত্তেজনা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বঙ্গবন্ধুকে বলে দেয়া হয়েছে, তিনি যেন স্বাধীনতা ঘোষনা না করেন। পাকিস্তান সরকার বোমারু বিমান নিয়ে প্রস্তুত বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করলেই রেসকোর্স ময়দানেই বিমান হামলা করবে। এদিকে বাঙালি জাতি উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছেন, বঙ্গবন্ধু কখন আসবেন, কখন স্বাধীনতার ঘোষনা দিবেন। ৭ই মার্চের আগ থেকেই অনেক নেতাকর্মী, শুভানুধ্যায়ী, বিরোধীদলীয় নেতা বঙ্গবন্ধুকে পরামর্শ দিচ্ছেন, চাপ দিয়ে যাচ্ছেন- বঙ্গবন্ধু যেন রেসকোর্স ময়দানে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এই সময় বঙ্গবন্ধু ছিলেন উভয় সংকটে। রেসকোর্স ময়দানে যাবার আগে বঙ্গবন্ধু তাঁর বেড রুমে গেলেন তাঁর সহধর্মিনী, দুঃখ সময়ের বন্ধু, সাহস ও পরামর্শ দাতা বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছার কাছে। বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুকে বলেন,“তোমাকে কে কী বলল সে সবে তুমি কান দিও না, তুমি যা ভালো মনে কর তাই বলবে। মনে রাখবে ইয়াহিয়ার বাহিনী প্রস্তুত হয়ে আছে তোমার বক্তব্যের পর পরই বাঙালির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য।” বঙ্গমাতার এই সতর্ক বাণী বঙ্গবন্ধুকে তাঁর জীবনের সবচেয়ে সংকটময় মুহুর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতায় যে সাহায্য করেছিল তা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে অতি সতর্কতার সহিত বাঙালি জাতিকে পূর্ণ পরিস্থিতি বর্ণনা করলেন, পূর্ণাঙ্গ দিক নির্দেশনা দিলেন এবং কৌশলে স্বাধীনতার ঘোষণাও দিয়ে দিলেন। অথচ পাকিস্তান সরকার বা তাদের মোড়ল যুক্তরাষ্ট্র ও গণচীন বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতা ঘোষনার জন্য দায়ী করতে পারলো না, বাঙালি জাতির উপর ঐ মুহর্তে আক্রমণ করতে পারলো না।

বিধির লিখন না যায় খন্ডন। পাকিস্তানী হায়েনারা ২৫ মার্চ রাতে বাঙালি জাতির উপর অতর্কিত আক্রমণ করে বসে। তবে সেই আক্রমণে পাকিস্তানীরা বিশ্ববাসীর নিকট আক্রমণকারী হিসেবে চিহ্নিত হয়, বঙ্গবন্ধু বা বাঙালিকে দোষ দিতে পারে নি। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের সেই ভাষণ বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ একশত ভাষণের মধ্যে প্রথম দশে অবস্থান করেছে এবং ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভূক্ত হয়ে বাঙালি জাতির গৌরব বহুগুণ বৃদ্ধি করেছে।

পাকিস্তান সেনাবাহিনী ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী করে রাখে। সেখানে সামরিক আদালতে বিচার করে তাঁকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। উক্ত কারাগারে তাঁর জন্য কবরও খুড়েঁ রাখা হয়। আর এদিকে বঙ্গমাতা সন্তানদের নিয়ে এ বাড়ি থেকে ও-বাড়ি আশ্রয় নিতে থাকেন। পরে পাকিস্তানী সৈন্যরা তাঁদের গ্রেফতার করে ধানমন্ডির ১৮নং রোডের ১টি বাড়িতে বন্দী করে রাখে। এই বন্দী জীবনেও তাঁকে দুঃখসহ দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। তারপরও তিনি ধৈর্য হারান নি। একদিকে হাসপাতালে অসুস্থ শয্যাশায়ী শ্বশুড়-শাশুড়ির সেবা করা, সন্তানদের দেখাশোনা, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জৈষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান জয়ের জন্ম লাভ, পাকিস্তানী সৈন্যদের গঞ্জনা শোনা, অপরদিকে স্বামী ও দু’পুত্র শেখ কামাল ও শেখ জামালের চিন্তায় মগ্ন- এই সময় তাঁকে একটা অমানষিক চাপ সহ্য করতে হয়েছে। দীর্ঘ ০৯ (নয়) মাসের বন্দী অবস্থায় যেকোনো মুহুর্তে তাঁর মৃত্যু ছিল অনিবার্য। এভাবে বেগম শেখ ফজিলাতুননেছা রেনু শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু, জাতির জনক এবং সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি হতে অবদান রেখেছিলেন।
আবারো কবির ভাষায় বলতে হয়:
‘এ বিশ্বে যাহা কিছু মহিয়ান চির কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর।’
কবির কবিতার সূত্র ধরে বলতে হয় স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে অবদান রেখেছিলেন তাঁর অর্ধেকের দাবীদার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব। এভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে এই মহীয়সী নারী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। ইতিহাসের গবেষকরা একদিন নিশ্চয়ই যথাযথভাবে বঙ্গমাতা বেগম শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের মূল্যায়ন জাতির সামনে তুলে ধরবেন।

৮ই আগস্ট এই মহিয়সী নারীর জন্মদিন। তাঁর ৯১ তম জন্মদিনে এই প্রত্যাশা রইল। এই আগস্ট মাসেই তিনি শাহাদাত বরণ করেন। ১৫ই আগস্টের সকল শহীদানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।


লেখকঃ মোঃ আব্দুল মালিক শিক্ষক, কলামিস্ট। সহ-সভাপতি বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদ, সিলেট জেলা। সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধু গবেষণা সংসদ, সিলেট জেলা।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মদিন আজ

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মদিন আজ



কুশিয়ারানিউজ ডেস্কঃ আজ ৮ আগস্ট, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মমতাময়ী মা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মদিন। 

১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এই মহীয়সী নারী। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে নিষ্ঠুর, বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে তিনি শাহাদাৎ বরণ করেন। মাত্র ৪৫ বছর বয়সে স্বামীর সহযাত্রী হয়ে তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নেন। 


তাঁর ডাক নাম ছিল রেনু। ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারিয়ে স্বজনদের সঙ্গে বেড়ে উঠেন তিনি। মাত্র ৩ বছর বয়সে বাবা শেখ জহুরুল হক ও ৫ বছর বয়সে মা হোসনে আরা বেগম পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন। গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে পড়ার সময় দাদা শেখ কাসেম চাচাতো ভাই শেখ লুৎফর রহমানের ছেলে শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে ফজিলাতুন্নেছার বিয়ে দেন। বিয়ের পর সামাজিক রীতিনীতির কারণে স্কুলের বদলে গৃহশিক্ষকের কাছে লেখাপড়া করেন তিনি। শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছোটবেলা থেকেই গৃহিণী ছিলেন। পরিবারের সদস্যদের প্রতি তিনি সবসময় দায়িত্বশীল ছিলেন। 


জীবদ্দশায় স্বামী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নানা পরামর্শ ও নির্দেশনা দিয়ে লড়াই-সংগ্রামের প্রেরণা যুগিয়েছেন। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধসহ তৎকালীন সব সংগ্রামে তিনি গণমানুষের পক্ষে নিজ অবস্থান ব্যক্ত করেছেন। বঙ্গবন্ধুর জীবনে সমস্যা-সংকটে তিনি যেমন পরিবারের দায়িত্ব পালন করেছেন পরম মমতায়, তেমনি সাংগঠনিক দায়িত্বও পালন করেছেন যথেষ্ট সাহসিকতার সঙ্গে।

বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে মহীয়সী ফজিলাতুন্নেছা মুজিব দিকনির্দেশনা দিয়ে দলীয় নেতা-কর্মী ও অনুসারীদের সক্রিয় রাখতেন। কারাবন্দি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ ও নির্দেশনা নেতা-কর্মীদের জানাতেন। ১৫ আগস্ট বুলেটের সামনে দাঁড়িয়েও বিন্দুমাত্র বিচলিত হননি। হত্যাকারীদের এই জঘন্য কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করেছেন বিপুল বিক্রমে। 

ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, বঙ্গবন্ধুর সব সাহসী পদযাত্রায় বেগম মুজিব ছিলেন সক্রিয় সহযাত্রী। আগরতলা মামলায় বঙ্গবন্ধু কারারুদ্ধ হবার পরে তার প্যারোলে মুক্তির জন্য সক্রিয় ষড়যন্ত্রটি সফল হতে পারেনি বঙ্গমাতার জন্য। বাঙালির স্বাধীনতা ও মুক্তির চূড়ান্ত মাহেন্দ্রক্ষণে বঙ্গমাতাই তার জীবনসঙ্গী বঙ্গবন্ধুকে সঠিক পথ বাতলে দিয়েছিলেন। বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে দলের নেতাসহ বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নানা পরামর্শ ও নির্দেশনা ছিল। সেসব নিয়ে বঙ্গবন্ধু যখন দোটানায় তখন স্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা মুজিবই তাকে বলেছিলেন, কারো নির্দেশনা বা পরামর্শ নয়, তোমার যা মনে আসে তাই বলো। অন্তরের অন্তস্থল থেকে উৎসারিত ১৯ মিনিটের সে ভাষণটি শুধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার অনানুষ্ঠানিক ঘোষণাই ছিল না, পৃথিবীর ইতিহাসের একটি বহুল প্রচারিত ও সেরা ভাষণ হিসেবে বিবেচিত হয়।



মহীয়সী এ নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকীতে জাতি আজ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে তাকে। আওয়ামীলীগ, অঙ্গ-সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতীম ও সমমনা সংগঠনগুলোসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করবে বঙ্গমাতাকে।

কুশিয়ারা নিউজ পরিবারও বঙ্গমাতাকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছে। বাঙ্গালী নারীর মনে বঙ্গমাতার জীবনাদর্শের সফল প্রতিফলন ঘটুক, মহীয়সী নারীর ৯১তম জন্মদিনে এটাই কামনা। আমরা তাঁর রূহের মাগফেরাত কামনা করছি।

Saturday, 7 August 2021

যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে ব্যারিস্টার সুমনকে অব্যাহতি

যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে ব্যারিস্টার সুমনকে অব্যাহতি



নিউজ ডেস্কঃ আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে রাজনৈতিক স্লোগান ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা শরীয়তপুরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেনের সমালোচনা করায় সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে আওয়ামী যুবলীগ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।

ব্যারিস্টার সুমন কেন্দ্রীয় যুবলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি শনিবার (৭ আগস্ট) রাতে সিলেটভিউ-কে কেন্দ্রীয় যুবদলীগের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

২০২০ সালের নভেম্বরে আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক করা হয় সুপ্রিম কোর্টের আলোচিত আইনজীবী ও যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে।


পদ পাওয়ার এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই সমালোচিত হয়ে পদ হারালেন সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী।

উল্লেখ্য, সামাজিক নানা সমস্যা নিয়ে ফেসবুক লাইভ করে আলোচিত ব্যারিস্টার সুমন। ফেসবুকে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা নিয়ে সরব থাকেন তিনি। সর্বশেষ আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে রাজনৈতিক স্লোগান ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা শরীয়তপুরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেনের তীব্র সমালোচনা করেছেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (৬ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে তিনি এ অনুরোধ জানান।

লাইভে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘শেখ কামাল সাহেবের জন্মদিনে শরীয়তপুরের পালং থানার ওসি আক্তার হোসেনের আওয়ামী লীগের দলীয় স্লোগান দেয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এই জিনিসটা দেখার পর আমার কাছে মনে হয়েছে দু-একটা কথা বলা দরকার। আওয়ামী লীগের স্লোগান দেয়ার মানুষ কী এতই কম যে একজন ওসি সাহেবের এই স্লোগান দিতে হবে। আমি খেয়াল করে দেখলাম যে উনি বলছেন আবেগ থেকেই স্লোগান দিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার কথা হচ্ছে, আপনি যখন সরকারি দায়িত্বে থাকবেন কিংবা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন, তখন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে আবেগ দেখানোর সঙ্গে সঙ্গে কিন্তু আপনার বিরুদ্ধে পানিশমেন্ট নিয়ে আসা উচিত। কিন্তু তিনি এখনো ওই জায়গাতে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন।’

আইনজীবী সুমন বলেন, ‘আবেগ দেখানো ভালো। কিন্তু আপনি যখন আবেগ দেখাতে গিয়ে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে দিলেন, তখন সরকারের কিন্তু অনেক ক্ষতি করে দিলেন। অনেক ওসি এবং পুলিশ কর্মকর্তারা দলমতের ঊর্ধ্বে দেশের সেবা করে যাচ্ছেন। এই ওসির কর্মকাণ্ডের কারণে তাদের অবস্থাটা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে?’

সবাইকে সতর্ক করে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘আপনারা জানেন যে সামান্য চাকরিজীবী লীগের কারণে সরকার কতো কঠোর। হেলেনা জাহাঙ্গীরকে সরকার আটক করেছে এমন ভুঁইফোঁড় চাকরিজীবী লীগ সংগঠন করায়। এখন এমন অবস্থা হইছে এ ধরনের ওসি সাহেবরা দুদিন পরে বলবেন একটি পুলিশ লীগ করা যায় কি-না।’

তিনি বলেন, ‘সতর্ক হওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় এখন। পঁচাত্তর সালে আমরা সতর্ক হতে পারিনি বলেই বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি। আপনি যদি দলকে সত্যি ভালোবাসেন, তাহলে দলের প্রতি এমন কোনো আবেগ দেখাতে পারবেন না, এমন কোনো কাজ করতে পারবেন না, যে কারণে দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আপনি যদি পুলিশ ডিপার্টমেন্টের হয়ে কাজ করবেন, তখন এমন কোনো আবেগ দেখাতে পারবেন না, এমন কোনো কাজ করতে পারবেন না, যে কারণে পুলিশ ডিপার্টমেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি পুরো পুলিশ ডিপার্টমেন্টকে বিব্রত করেছেন।’

ব্যারিস্টার সুমন আরও বলেন, ‘আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপির কাছে অনুরোধ করব রাষ্ট্র-দল সবগুলাকে একাকার করার জন্য এবং বিশেষত এই সরকারকে কলঙ্কিত করার জন্য, বিব্রত করার জন্য, পুলিশ ডিপার্টমেন্টকে বিব্রত করার জন্য তার (ওসির) বিরুদ্ধে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অ্যাকশন নিতে হবে। 
অস্ট্রেলিয়ার নাভিশ্বাস তুলে হারল টাইগাররা

অস্ট্রেলিয়ার নাভিশ্বাস তুলে হারল টাইগাররা



স্পোর্টস ডেস্কঃ অবশেষে জয়ের দেখা পেল অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল। পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম তিন টি-টোয়েন্টিতে হেরে আগেই সিরিজ হারায় সফরকারীরা।

শনিবার চতুর্থ ম্যাচে টাইগারদের ৩ উইকেটে হারিয়ে জয়ে ফিরল অস্ট্রেলিয়া। 

এদিন টস জিতে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৯ উইকেট হারিয়ে ১০৪ রান করে বাংলাদেশ।

টার্গেট তাড়া করতে নেমে মাত্র ৩ রানে অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েডের উইকেট হারিয়ে চাপের মধ্যে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।


দলকে চাপমুক্ত করতে চতুর্থ ওভারে সাকিব আল হাসানকে ৫টি ছক্কা হাঁকান ডেন ক্রিষ্টিয়ান। 

এরপর মাত্র ১৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফের কোণঠাসা হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। তবে অ্যাস্টন অ্যাগার ও অ্যাস্টন টার্নারের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত জয়ের কাছাকাছি চলে যায় অসিরা।

জয়ের জন্য শেষ ১৫ বলে প্রয়োজন ছিল মাত্র ৬ রান। খেলার এমন সময় শরিফুলের বলে শামিম হোসেনের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিনত হয়ে সাজঘরে ফেরেন অ্যাস্ট অ্যাগার।

তবে অ্যান্ডু টাইকে সঙ্গে নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন অ্যাস্টন টার্নার।

সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১০৪/৯ (মোহাম্মদ নাঈম ২৮, মেহেদি হাসান ২৩, আফিফ হোসেন ২০, সাকিব ১৫; মিচেল সোয়েসপন ৩/১২, অ্যান্ডু টাই ৩/১৮)।

অস্ট্রেলিয়া: ১৯ ওভারে ১০৫/৭ (ডেন ক্রিস্টিয়ান ৩৯, অ্যাস্টন অ্যাগর ২৭, অ্যাস্টন টার্নার ৯*)।

ফলাফল: অস্ট্রেলিয়া ৩ উইকেটে জয়ী। 
টিকা না পেয়ে টিকা প্রদানকারীদের ঘরে আটকে রাখল জনতা

টিকা না পেয়ে টিকা প্রদানকারীদের ঘরে আটকে রাখল জনতা



নাটোর জেলার সাতটি উপজেলার ৫২টি ইউনিয়ন ও ৮টি পৌরসভায় সারা দেশের মতো চলছে করোনার গণটিকা কার্যক্রম। শহরের একটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত টিকা না পেয়ে টিকা প্রদানকারীদের ঘরে আটকে রাখে জনতা। পরে ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। 

শনিবার সকাল ৯টায় সদর উপজেলার শিবদুর গ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গণটিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল এবং জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ। 

নাটোর পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের শেরে বাংলা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে করোনার টিকা না পেয়ে হট্টগোল শুরু করে সাধারণ মানুষ। সকাল ৯টা থেকে এই কেন্দ্রে মোট ২০০জনকে টিকা প্রয়োগ শুরু হয়। কিন্তু বেলা ১২টার মধ্যেই নির্ধারিত টিকা শেষ হয়ে যায়। এরপরই টিকা না পেয়ে শুরু হয় হট্টগোল। 

দুই থেকে তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে টিকা না পেয়ে হট্টগোল শুরু করেন নারী-পুরুষরা। টিকা শেষ হওয়ার পরও দেড় থেকে দুই’শ নারী-পুরুষ টিকার জন্য অপেক্ষা করেন। এসময় বিক্ষুব্ধ লোকজন স্বাস্থ্য কর্মীদের স্কুলের কক্ষে আটকে রাখে। পরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল আহমেদ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। 


বিক্ষুব্ধ নারী পুরুষ বলেন, কতজনকে টিকা দেওয়া হবে, সে বিষয়ে ওয়ার্ডবাসীদের কোনো স্পষ্ট ধারণা দেওয়া হয়নি। জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে গেলেই টিকা দেওয়া হবে, এমন ঘোষণার কারণে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছে টিকা শেষ। তাহলে কেন দাঁড়িয়ে রাখা হল। তাছাড়া পরবর্তীতে কোনো তারিখে টিকা দেওয়া হবে তারও কোনো নির্দেশনা নেই। 

স্থানীয় কাউন্সিলর নান্নু শেখ জানান, বরাদ্দের চেয়ে লোকজন বেশি যাওয়ার কারণে এই হট্টগোল হয়েছে। পরবর্তীতে যাতে হট্টগোল না হয়, সেজন্য টোকেন সিস্টেম করা হবে। 

নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী জানান, টিকা প্রয়োগের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিল স্থানীয় কাউন্সিলরা। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ৩নং ওয়ার্ড বাদে কোথাও কোনো সমস্যা হয়নি। ৩নং ওয়ার্ডে অব্যবস্থাপনার কারণে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। পরবর্তীতে এই ধরনের হট্টগোল যাতে না হয়, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এদিকে, জেলার ৫২টি ইউনিয়ন এবং ৮টি পৌরসভায় গণটিকা প্রয়োগ শুরু হলেও কোথাও মানা হয়নি স্বাস্থ্যবিধি। সরেজমিনে পৌরসভার তিনটি টিকা কেন্দ্র এবং ইউনিয়ন টিকা কেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে এমন চিত্র ফুটে উঠেছে। গাদাগাদি করে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা নিতে দেখা গেছে নারী-পুরুষদের। স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সচেতন অনেক মানুষ। 

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে টিকা গ্রহণের কারণে স্বাস্থ্যবিধি মানানো সম্ভব হয়ে উঠেনি। পরবর্তীতে যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে টিকা প্রয়োগ করা যায়, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে।