Tuesday, 1 February 2022

‘বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে জোর লবিং চালানো হচ্ছে’

‘বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে জোর লবিং চালানো হচ্ছে’


যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী কংগ্রেসম্যান এবং পররাষ্ট্র বিষয়ক হাউস কমিটির চেয়ারম্যান গ্রেগরি ডব্লিউ মিকস বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চায় না যুক্তরাষ্ট্র। আমরা নিশ্চিত করে বলতে চাই যে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছি না। আমরা এখনো বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের সঙ্গে কাজ করছি।

স্থানীয় সময় সোমবার (৩১ জানুয়ারি) নিউইয়র্কের কুইন্সের একটি রেস্তোরাঁয় একটি তহবিল সংগ্রহের মধ্যাহ্নভোজ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

কংগ্রেসম্যান মিকস একজন প্রখ্যাত আইনজীবী। তিনি ১৯৯৮ সাল থেকে নিউইয়র্ক থেকে মার্কিন প্রতিনিধি ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং ২০২১ সাল থেকে পররাষ্ট্র বিষয়ক হাউস কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছি না। নিষেধাজ্ঞাগুলো একটি সংস্থার কিছু ব্যক্তির ওপর আরোপ করা হয়েছিল, পুরো সংস্থার ওপর নয়। 

সারা বিশ্বের ১১টি দেশের বিরুদ্ধে বাইডেন প্রশাসন গণতন্ত্র ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে অভিযোগ পেয়েছে তার ওপর ভিত্তি করেই এটি করা হয়েছে। তিনি এও বলেন, বাংলাদেশ থেকে আসা আমেরিকার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নে তিনি আনন্দিত। বাংলাদেশের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন বলে উল্লেখ করেন মিকস।

বাংলাদেশের আরও কর্মকর্তা এবং রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এবং বাইরে থেকে জোরালোভাবে লবিং করা হচ্ছে- এ প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসম্যান। তিনি বলেন, আমরা তাদের কথা অনুযায়ী এটি করব না, এটা সম্ভব নয় এবং আমরা সবকিছু যাচাই-বাছাই করে সঠিক পদক্ষেপ নেব।

মিকস জানান, মানবাধিকার পরিস্থিতি ও অন্যান্য বিষয় দেখতে তিনি এ বছর বাংলাদেশ সফর করবেন। তার আগে তিনি স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং এশিয়া-প্যাসিফিক বিষয়ক কংগ্রেস সাব-কমিটির সঙ্গে কথা বলবেন। প্রয়োজনে তিনি বাংলাদেশ ইস্যুতে কংগ্রেসে শুনানির ব্যবস্থাও করবেন। 

এদিকে তহবিল সংগ্রহের মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেওয়া প্রবাসী বাংলাদেশিরা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সাজাপ্রাপ্ত খুনি রাশেদ চৌধুরী ও বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী যুদ্ধাপরাধী আশরাফুজ্জামান খানকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান কংগ্রেসম্যান মিকসের কাছে। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন।

অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ, মোর্শেদ আলম, ড. প্রদীপ রঞ্জন কর, প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, শাহ মো. বখতিয়ার আলী, ইন্জিনিয়ার ফরাসত আলী, কাজী মনির হোসেন, মিসেস হোসনে আরা, রুমানা আক্তার, জালাল উদ্দিন জলিল, শহিদুল ইসলাম, ইন্জিনিয়ার হাসান, সাখাওয়াত আলী, এমএ সালাম, ডা. মাসুদুল হাসান, এমদাদ চৌধুরী, ফাহিম রেজা নূর, মমতাজ শাহনাজ, আহনাফ আলম ও দীলিপ নাথ প্রমুখ। কংগ্রেসম্যান মিকসের কাছে দুটি স্মারকলিপি প্রদান করেন উপস্থিত বাংলাদেশিরা।

Monday, 31 January 2022

শেষ বিদায়ে হাজার হাজার মানুষের ভালবাসায় সিক্ত ইকবাল চৌধুরী

শেষ বিদায়ে হাজার হাজার মানুষের ভালবাসায় সিক্ত ইকবাল চৌধুরী


শেষ বিদায়ে হাজার হাজার মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি,  অ্যাড. ইকবাল আহমদ চৌধুরী। শেষ বিদায় জানাতে এই প্রবীণ রাজনীতিবিদের  জানাযায় হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে।

সোমবার বিকেল ৫টায় উপজেলার সরকারি এমসি একাডেমি স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার কয়েক হাজার মানুষের ঢল নামে। এসময় শেষ বিদায় জানাতে কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসনিক, বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দ সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হন। সেখানেও পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। 

জানাজার নামাজ শেষে ইকবাল আহমদের নিজ গ্রাম রফিপুরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফণ সম্পন্ন করা হয়।
 
এর পূর্বে দুপুর আড়াইটায় তাঁর কর্মস্থল উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে তাঁর প্রতি উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার হাজারো মানুষ শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
 
এর আগে বাদ জোহর সিলেট হযরত শাহজালাল (রঃ) মাজার মসজিদ প্রাঙ্গণে ১ম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।

Sunday, 30 January 2022

হাড়কাঁপানো শীত আরও কয়েক দিন

হাড়কাঁপানো শীত আরও কয়েক দিন


দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চতুর্থ দিনের মতো অব্যাহত আছে শৈত্যপ্রবাহ। রোববার আরও তিন জেলায় শৈত্যপ্রবাহ বিস্তার লাভ করেছে। এ নিয়ে ১১ জেলাসহ কয়েকটি বিভাগে তীব্র শীতের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এই শৈত্যপ্রবাহ আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

অন্যদিকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রারও ওঠানামা করছে। তেঁতুলিয়া ও রাজারহাটে শনিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রোববার পরিস্থিতি আরেকটু অবনতি হয়েছে। তেঁতুলিয়ায় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে শৈত্যপ্রবাহের প্রভাবে হাড়কাঁপানো শীতে কাবু হয়ে পড়েছে প্রায় সারা দেশের মানুষ। ঘনকুয়াশা ও তীব্র ঠান্ডায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। শীতবস্ত্র বা গরম কাপড়ের অভাবে প্রান্তিক জনপদে শীতার্ত মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। শীতের তীব্রতায় জনজীবন অনেকটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। 

আবহাওয়াবিদরা জানান, দুই-এক দিনের মধ্যে এই পরিস্থিতির উন্নতি ঘটতে পারে। পাশাপাশি আগামী ৫ দিনের মধ্যে বৃষ্টি হতে পারে। সেই হিসাবে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও এক সপ্তাহের মধ্যে আবারো শীতের প্রকোপ বাড়তে পারে।

আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান জানান, গোপালগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাঙ্গামাটি, ফেনী, মৌলভীবাজার, যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল ও ভোলা জেলা এবং সীতাকুণ্ড উপজেলাসহ রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের সব জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ চলছে। 

এবার শীতে গত শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল কুড়িগ্রামে, ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গত মাসে একবার তাপমাত্রা ৬ দশমিক ১ ডিগ্রিতে নামে। তবে তাতে বড় এলাকাজুড়ে শীতের দাপট দেখা যায়নি।
এড. ইকবাল চৌধুরীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী ও ওবায়দুল কাদেরের শোক

এড. ইকবাল চৌধুরীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী ও ওবায়দুল কাদেরের শোক


গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এমপি এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি।

আজ রোববার ( ৩০ জানুয়ারি ) আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সড়ক যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের শোক প্রকাশের বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানানো হয়।

শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ইকবাল আহমদ চৌধুরীর পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোক সন্তপ্ত পরিবার, পরিজন, আত্মীয়-স্বজন সহকর্মী, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

অপর এক শোকবার্তায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মরহুম ইকবাল আহমদ চৌধুরীর আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন এবং তাঁর শোক সন্তপ্ত পরিবার, পরিজন , আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মী, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

উল্লেখ্য, শনিবার (২৯ জানুয়ারি) মধ্যরাতে সিলেট মহানগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ইকবাল আহমদ চৌধুরী ( ইন্নালিল্লহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। 

তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
এড.ইকবাল চৌধুরী’র মৃত্যুতে নুরুল ইসলাম বেলালের শোক

এড.ইকবাল চৌধুরী’র মৃত্যুতে নুরুল ইসলাম বেলালের শোক


বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মিডল্যান্ডস আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা নুরুল ইসলাম বেলাল।

এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, রাজনীতির মহান শিক্ষক এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুতে আমরা হারালাম স্বচ্ছ পরিচ্ছন্ন একজন রাজনীতিবিদ ও সত্যিকারের নিবেদিত প্রাণ একজন আওয়ামীলীগ নেতাকে।

তিনি আরোও বলেন, ইকবাল আহমদ চৌধুরী গোলাপগঞ্জ উপজেলা রাজনীতির অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছেন, তাঁর অবদান ছিলো স্মরণীয়। তাঁর অভাব কখনো পূরণ হওয়ার নয়, তিনি তাঁর কর্মের মাধ্যমে আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন। 

শোক বার্তায় তিনি মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন

উল্লেখ্য, গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী শনিবার রাত ১২টা ২০ মিনিটে সিলেট নগরীর মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। 

মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিলো ৮০ বছর। তিনি আত্মীয়-স্বজন, রাজনৈতিক কর্মী-সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষীসহ অগণিত গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।

তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি-সহ বাধ্যর্ক জনিত বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন। তাঁর শারিরীক অবস্থা অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

আগামীকাল সোমবার বাদ জোহর সিলেটের দরগাহ হযরত শাহজালাল (রহঃ) জামে মসজিদে প্রথম জানাজা এবং বাদ আসর নিজ উপজেলা গোলাপগঞ্জ সরকারি এম,সি একাডেমি মাঠে দ্বিতীয় জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।  

জানাযা শেষে নিজ গ্রাম রফিপুরস্থ পারিবারিক কবরস্থানে প্রবীন এ রাজনীতিবিদের দাফন সম্পন্ন করা হবে। 

প্রসঙ্গত,বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, দেশের প্রগতিশীল রাজনীতির অন্যতম ব্যক্তিত্ব, শিক্ষা আন্দোলন থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গনতান্ত্রিক আন্দোলনে মুক্তিকামী মানুষের পক্ষে জীবন অতিবাহিত করা এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুতে গোলাপগঞ্জ-সহ পুরো সিলেটে নেমে এসেছে শোকের ছায়া ।
গোলাপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান এড.ইকবাল চৌধুরী’র মৃত্যুতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর শোক

গোলাপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান এড.ইকবাল চৌধুরী’র মৃত্যুতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর শোক


সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী আর নেই। ( ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার রাত ১২টা ২০ মিনিটে সিলেট নগরীর মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। 

মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিলো ৮০ বছর। তিনি আত্মীয়-স্বজন, রাজনৈতিক কর্মী-সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষীসহ অগণিত গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।

তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাধ্যর্ক জনিত ও বিভিন্ন রোগী ভুগছিলেন। শনিবার দুপুরে (২৯ জানুয়ারি) তাঁর শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে তাকে সিলেট নগরীর একটি হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়।

এদিকে,বর্ষিয়ান রাজনীবিদ এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি।

সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি এক শোকবার্তায় বলেন, প্রবীণ রাজনৈতিক নেতা, গোলাপগঞ্জ আওয়ামী লীগের সভাপতি, উপজেলা চেয়ারম্যান, ছাত্রজীবন থেকে আজ পর্যন্ত  দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের অগ্রসেনানী আমাদের সকলের প্রিয় নেতা ইকবাল আহমদ চৌধুরীর ইন্তেকালে গভীর মর্মাহত হয়েছি। তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। 

তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
এক বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদের চিরবিদায়

এক বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদের চিরবিদায়

এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী
জন্ম : ১৭ জুলাই ১৯৪২
মৃত্যু: ২৯ জানুয়ারী ২০২২।

মৃত্যু এক অমোঘ নিয়ম। জগতের এই অমোঘ নিয়মে দূর আকাশে হারিয়ে গেলেন গোলাপগঞ্জ তথা সিলেটের রাজনীতির এক উজ্জল নক্ষত্র এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী। নিজের কর্মময় আলোকিত জীবনের মাধ্যমে আলোকবর্তিকা হয়ে তিনি থাকবেন পুরো সিলেটের মানুষের মাঝে।

জাগতিক সব অধ্যায় থেকে চির প্রস্থান করলেও মানুষের মনের হীরক দ্যুতিতে চিরদিন জ্বলে থাকবেন এ কীর্তিমান মানুষ। ক্ষণজন্মা এই উজ্জ্বল নক্ষত্রের বিদায়ে গোলাপগঞ্জসহ পুরো সিলেট জুড়ে দলমত নির্বিশেষে সবার মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
 
তাঁর প্রস্থানে সিলেটের রাজনৈতিক অঙ্গনে যে শূণ্যতা তৈরি হয়েছে তা নিঃসন্দেহে অপূরণীয়। তবুও মৃত্যুতে কারো হাত নেই, সব মৃত্যুই সুনির্দিষ্ট। এই চরম সত্যটা আমাদের মেনে নিতে হয়।

রাজনৈতিক জীবন: বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ ১৯৪২ সালের ১৭ জুলাই গোলাপগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রাবস্থায় তিনি ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। মিছিলে অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। শিক্ষা জীবনে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ এবং পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নকালে সক্রিয় ছাত্র রাজনীতি করেন। আমির হোসেন আমু, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, মতিয়া চৌধুরী, তোফায়েল আহমদের মতো জাতীয় নেতারা ছিলেন তার রাজনৈতিক সহযোদ্ধা।

ইকবাল আহমদ চৌধুরী ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হন। এর আগে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি প্রথম দফায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হন। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ইকবাল আহমদ চৌধুরী ২০০৪ সালে গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন। এরপর আমৃত্যু সে দায়িত্ব পালন করে গেছেন।

তিনি স্কাউটসে বিশেষ অবদানের জন্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ রৌপ্যপদক লাভ করেন। ১৯৫০-৬০ এর দশকে প্রগতিশীল ছাত্রনেতাদের মধ্যে অন্যতমদের একজন ছিলেন ইকবাল আহমদ চৌধুরী। ১৯৬২ সালে আইয়ুব শাসনবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ১৯৬৪-এর শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ এর ৬ দফা আন্দোলনের পথ বেয়ে ১৯৬৯-এর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখ সারির নেতা হিসেবে নিজের স্থান করে নিয়েছিলেন । অপার সংগ্রামী পথ ধরে ঢাকার কেন্দ্রীয় ছাত্র নেতৃবৃন্দের বন্ধুত্বে-ভালোবাসায় সিক্ত হোন।

বহুবিধ প্রতিভার অধিকারী, মানবকল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ, উচ্চ শিক্ষার অনুরাগী, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী সিলেট জেলার অন্তর্ভুক্ত গোলাপগঞ্জ উপজেলার রফিপুর গ্রামে ১৯৪২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন।

বর্তমানে তিনি গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান এবং নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এনইইউবি)-এর চেয়ারম্যান (বোর্ড অব ট্রাস্টিজ) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী ইচ্ছে করলেই ষাটের দশকে রাজধানী ঢাকা শহরে চাকচিক্যময় জীবন সাজাতে পারতেন, সেই সুযোগ ও সম্ভাবনা তাঁর সামনে পূর্ণমাত্রায় ছিল। কিন্তু লালিত স্বপ্ন ও প্রতিজ্ঞার প্রতি সম্মান দেখাতেই নিজের জীবন নিবেদিত করেছেন সমাজপ্রগতি ও মানুষের কল্যাণে।

অবদান রেখে চলেছেন বিভিন্ন শিক্ষামূলক ও মানবকল্যাণমূলক কাজে। ১৯৯৮ সালে স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উন্নয়নের প্রয়াসে নিজেকে নিবেদিত করেন ‘নর্থ ইস্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল’ প্রতিষ্ঠায় উদ্যোক্তা ও পরিচালক হিসেবে, যেখানে স্বল্প খরচে ছাত্র-ছাত্রীরা এমবিবিএস পড়াশোনা করার সুযোগ পাচ্ছে এবং সাধারণ মানুষ স্বল্প মূল্যে পাচ্ছে চিকিৎসাসেবা।

ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষানুরাগী ও মধ্যবিত্তের উচ্চশিক্ষা অর্জনের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দিতে এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী ২০১২ সালে ‘নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এনইইউবি) প্রতিষ্ঠা করেন। যেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান এবং দরিদ্র অথচ মেধাবী শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগ।

পরিশেষে বলি সব বিদায় বিদায় নয়; আপনি চিরকাল বেঁচে থাকবেন মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায়। মহান আল্লাহ পাক আপনাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসীব করুন, আমীন।

সৌজন্যেঃ সিলেট প্রতিদিন