Monday, 21 February 2022

ইউক্রেন সীমান্তে পাঁচজনকে গুলি করে হত্যা করল রাশিয়া'

ইউক্রেন সীমান্তে পাঁচজনকে গুলি করে হত্যা করল রাশিয়া'


রোস্তভ প্রদেশের ইউক্রেন সীমান্ত দিয়ে রাশিয়ার প্রবেশ করার চেষ্টা করা ইউক্রেন সেনাবাহিনীর একটি দলকে ঠেকিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে রাশিয়া। 

রাশিয়ার গণমাধ্যম ইন্টারফ্যাক্স দেশটির সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে জানিয়েছে, নাশকতা করতে রাশিয়ায় প্রবেশের চেষ্টা চালায়  ইউক্রেনের সেনাদের একটি দল।  তাদের ঠেকাতে গুলি ছোড়া হয়। এ ঘটনায় ইউক্রেনের পাঁচ অনুপ্রবেশকারী নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে রাশিয়ার দক্ষিণ ফেডারেল বিভাগ।  

এ ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছিল, দক্ষিণ-পূর্ব রোস্তভ প্রদেশের সীমান্তে থাকা তাদের একটি স্থাপনা ইউক্রেনের গোলাবর্ষণে পুরোপুরি ধসে পড়েছে।  যেখানে হামলা চালানো হয়েছে সেখান থেকে ১৫০ মিটার দূরে ইউক্রেনের সীমান্ত। 

তবে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে দুটি ঘটনাই মিথ্যা বলে দাবি করা হয়েছে।  দেশটির পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, রাশিয়ায় নাশকতা চালাতে ইউক্রেনে কোনো দল যায়নি। 

তাছাড়া ইউক্রেনের সেনাবাহিনী কোনো গোলা ছোড়েনি। 

এদিকে রোস্তভের এ ঘটনাকে বেশ গুরুতর মনে করা হচ্ছে।  কারণ রাশিয়ার সেনাবাহিনী সরাসরি ইউক্রেনকে দায়ি করেছে। এর আগে রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এরকম অভিযোগ করে আসছিল। 


সূত্র: আলজাজিরা, ইন্টারফ্যাক্স 
রায়হানের পর সিলেটে ফের পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগঃ যুবকের মৃত্যু

রায়হানের পর সিলেটে ফের পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগঃ যুবকের মৃত্যু


সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় পুলিশের নির্যাতনে এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠেছে। এমন অভিযোগ তুলে সড়ক অবরোধ করেছে এলাকাবাসী।

মারা যাওয়া যুবকের নাম উজির মিয়া (৪০)। তার বাড়ি উপজেলার শত্রুমর্দন গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত কাঁচা মিয়ার ছেলে।

সোমবার সকালে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান উজির মিয়া। এর পর দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের পাগলাবাজার এলাকায় স্থানীয় লোকজন সড়কে লাশ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন এলাকাবাসী।

সেখানে তার লাশ রেখে এলাকাবাসী বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এসময় রাস্তায় নামে স্থানীয় হাজারো মানুষ।

মরদেহ সড়কে রেখে সড়ক অবরোধের কারণে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়। অবরোধস্থল স্থানীয় পাগলাবাজার এলাকার উভয় পাশে সড়কে দীর্ঘ প্রায় ১০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়।

এদিকে অবরোধকারীদের শান্ত করতে শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনোয়ারুজ্জামান ঘটনাস্থলে গিয়ে তোপের মুখে পড়েন। পরে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তিনি।

এসময় ইউএনওর গাড়ি লাশের ওপর দিয়ে চলে গেছে- এমন কথা প্রচার হলে স্থানীয় জনতা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। যদিও এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

এলাকাবাসী প্রতিবাদ সমাবেশে বলেন, ৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাতে শান্তিগঞ্জ উপজেলার শত্রুমর্দন গ্রামের উজির মিয়াকে থানার এসআই দেবাশীষ, এসআই প্লাটন কুমার সিংহ ও এএসআই আক্তারুজ্জান তাকে নিজ বাড়ি থেকে সন্দেহজনক আটক করে থানায় নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে তাকে ব্যাপক মারধর করা হয়।

পরের দিন বুধবার তাকে সুনামগঞ্জ আদালতে নিয়ে যাওয়া হলে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। পরে গুরুতর আহত উজির মিয়াকে প্রথমে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে এবং সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
 
মৃত উজির মিয়ার ছোট ভাই ডালিম মিয়া জানান, তার ভাইকে পুলিশ ধরে নিয়ে থানায় নির্যাতন করে। পরদিন তাকে একটি চুরির মামলায় আদালতে পাঠালে জামিনে মুক্ত হন। এরপর থেকে উজির মিয়া গুরুতর অসুস্থ হন। এ অবস্থায় সোমবার সকালে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।

উজির মিয়ার ভাতিজা ছাত্রলীগ কর্মী ইমরান বলেন, আমার চাচাকে চুরি মামলা দিয়ে আটক করে থানা হাজতে নিয়ে নির্মমভাবে মারধর করেছে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে শান্তিগঞ্জ থানাকে নির্যাতনের কথা জানাই। তারা বিষয়টি দেখি দেখছি করতে আমার চাচার মৃত্যু হয়েছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, শান্তিগঞ্জ থানার এসআই দেবাশীষ ও এসআই প্লাটন কুমার সিংহ  তার চাচার ওপর অমানবিকভাবে নির্যাতন করেছেন। চাচা জামিন পেয়ে পরিবারের কাছে পুলিশি নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন।

উজির মিয়ার পরিবার ও তার স্বজনরা এ ঘটনায় শান্তিগঞ্জ থানার এসআই আলাউদ্দিন, এসআই দেবাশীষ, এসআই প্লাটন কুমার সিংহের বিচারের দাবি জানান। অবরোধ চলাকালে স্থানীয়রা এসব পুলিশ অফিসারদের গ্রেফতারেরও দাবি জানান।

অবরোধ-বিক্ষোভের খবর খবর পেয়ে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার-উল-হালিম ঘটনাস্থলে যান। তাদের হস্তক্ষেপে বিকাল ৫টার দিকে বিক্ষুব্ধ লোকজন সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করেন।

এদিকে উজির মিয়ার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণের জন্য নেওয়ার সময় তার সুরতহাল সবার সামনে করার দাবি জানান বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। পরে সবার সামনে তার সুরতহাল করা হয় বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা  জানিয়েছেন, উজির মিয়ার শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনে চিহ্ন রয়েছে- যা তারা ভিডিও করে রেখেছেন।

এ বিষয়ে শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মুক্তাদীর হোসেনের বক্তব্যের জন্য তার মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ ঘটনাস্থলে গিয়ে বলেন, ওই ঘটনায় কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিচার হবে। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শান্তিগঞ্জের ইউএনও আনোয়ারুজ্জামান বলেন, উজির মিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ করে। তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য ওখানে গিয়েছিলাম আমি। লোকজন আমার ওপর চড়াও হলে আমি দ্রুত ওখান থেকে চলে আসি। আমার গাড়ি লাশের ওপর দিয়ে আসেনি।

সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, আসামিকে আটক করা হয়েছিল ৯ ফেব্রুয়ারি। একদিন হাজতে রেখে পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়ি চলে যান। এরপর কোনো একদিন হয়তো তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। শুনেছি আজকে সকালে নাকি তার মৃত্যু হয়েছে।

স্থানীয়দের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ও তাদের অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ ঘটনাস্থলে গেছেন। তিনি না আসা পর্যন্ত এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না।
বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার চেষ্টা চলছে: প্রধানমন্ত্রী

বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার চেষ্টা চলছে: প্রধানমন্ত্রী


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করেছি। নৃ-গোষ্ঠিদের ভাষা ও বর্ণমালাকে বিলুপ্তি থেকে রক্ষা করার জন্য ২০১৭ সাল থেকে তাদের ভাষায় পাঠ্যপুস্তক প্রবর্তন করেছি। এবছর তাদের নিজস্ব ভাষায় প্রায় ৩৩ হাজার বই বিতরণ করেছি। আমরা বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ‘মহান শহিদ দিবস’ ও ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২২’ উপলক্ষে রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। 

দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে বহুভাষায় জ্ঞানার্জন: সংকট এবং সম্ভাবনা’।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালির মুক্তি-সংগ্রামের ইতিহাসে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়েই একটি অসম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠনের ভিত রচিত হয়েছিল।

তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনে বাঙালি কৃতি সন্তানদের চরম আত্মত্যাগের মাধ্যমেই বাঙালি জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়। এই জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে পূর্ব বাংলার মানুষের জন্য একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মহানায়ক, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে গত ১৩ বছরে দেশের আর্থ-সামাজিক খাতের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেছি।
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে আমরা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছি। সম্প্রতি আমরা ‘এসডিজি প্রোগ্রেস অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেছি। আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছি এবং মুজিববর্ষ উদযাপন করছি। রূপকল্প-২০৪১ অর্জনকে সামনে রেখে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করেছি। আমরা ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০’ বাস্তবায়ন করছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, অচিরেই আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ ও আত্মমর্যাদাশীল ‘সোনার বাংলাদেশ' প্রতিষ্ঠা করব।
 
বাণীতে ‘মহান শহীদ দিবস’ এবং ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উপলক্ষে বাংলাসহ বিশ্বের সব ভাষাভাষী ও সংস্কৃতির মানুষের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ইউনেস্কো ২০০০ সাল থেকেই এ দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করে আসছে। আওয়ামী লীগ সরকার ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে।
 
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৫২ সালের এ দিনে আমাদের মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষা করতে প্রাণোৎসর্গ করেছিলেন আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, আবদুস সালাম, রফিকউদ্দিন আহমদ, শফিউর রহমানসহ আরও অনেকে। আমি বাংলাসহ বিশ্বের সব ভাষা-শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। সেই সঙ্গে পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করি বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেতৃত্বদানকারী সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সব ভাষাসৈনিকদের, যাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ এবং সংগ্রামের বিনিময়ে আমাদের মা, মাটি ও মানুষের মর্যাদা সমুন্নত হয়েছে।

তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির পিতা সব দাপ্তরিক কাজে বাংলা ভাষা ব্যবহারের নির্দেশ দেন। তিনি সংবিধানে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করেন। বাংলায় জাতিসংঘের ২৯তম সাধারণ অধিবেশনে বক্তৃতা দিয়ে আমাদের মাতৃভাষাকে বিশ্ব সভায় মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেন।
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকারের ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে কানাডা প্রবাসী রফিক এবং ছালাম নামে দু’জন বাংলাদেশি কয়েকজন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সদস্য মিলে ‘মাতৃভাষা সংরক্ষণ কমিটি’ গঠন করে। ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উদযাপনের জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাব প্রেরণ করে। জাতিসংঘ রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রস্তাবটি ইউনেস্কোতে প্রেরণ করার পরামর্শ দেয়।
 
তিনি বলেন, আমরা দ্রুত মাতৃভাষা সংরক্ষণ কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করে ১৯৯৯ সালের ৯ অক্টোবর ইউনেস্কোকে আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাবটি পুনরায় প্রেরণ করি। ফলে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। আমরা ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠা করেছি। বিলুপ্তপ্রায় ভাষা সংরক্ষণ ও তাদের মর্যাদা রক্ষার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
  
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৭ থেকে ১৯৫২ বাঙালির গৌরবময় ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস যুগে যুগে আমাদের জাতীয় জীবনে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করছে। জাতির পিতা ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে বার বার কারাবরণ করেছেন। ১৯৪৭ সালের ২৭ নভেম্বর করাচিতে অনুষ্ঠিত শিক্ষা সম্মেলনে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা করার সিদ্ধান্ত হয়।
 
তিনি বলেন, ঢাকায় এ খবর পৌঁছামাত্রই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা খাজা নাজিমুদ্দিনের বাসভবনের সামনে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করে। এর কিছুদিন পরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র শেখ মুজিব তার সাংগঠনিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ঢাকায় ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনে কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত বাংলাকে গণপরিষদের ভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে এক সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করেন। প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করে খাজা নাজিমুদ্দিন আইন পরিষদে ঘোষণা দেয়, পূর্ব বাংলার জনগণকে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মেনে নিতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, নাজিমুদ্দিনের এই হঠকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে ছাত্রলীগ, তমুদ্দিন মজলিস ও অন্যান্য দলের সমন্বয়ে সর্বদলীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। ১১ মার্চের ধর্মঘটে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে শেখ মুজিবসহ অনেক ভাষাসৈনিক সচিবালয়ের সামনে থেকে গ্রেফতার হন এবং ১৫ মার্চ মুক্তি পান। মুক্তি পাওয়ার পরদিন অর্থাৎ ১৬ মার্চ শেখ মুজিবের নেতৃত্বে পুনরায় ছাত্ররা প্রাদেশিক পরিষদ ভবন ঘেরাও করে, সেখানে পুলিশের লাঠিচার্জে অনেকেই আহত হন। জিন্নাহ ২১ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে উর্দুর পক্ষে বক্তব্য রাখে এবং ২৪ মার্চ কার্জন হলে আয়োজিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বলে ঘোষণা দিলে ছাত্ররা তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করে।

তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনকে জাতীয় আন্দোলনে রূপদান করতে শেখ মুজিব দেশব্যাপী সফরসূচি তৈরি করে ব্যাপক প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেন এবং সভা-সমাবেশে বক্তব্য দেন। তিনি ১৯৪৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর থেকে গ্রেফতার হন এবং ১৯৪৯ সালের ২১ জানুয়ারি মুক্তি পান। ১৯ এপ্রিল আবার গ্রেফতার হয়ে জুলাই মাসে মুক্তি পান। এরপর তিনি ১৯৪৯ সালের ১৪ অক্টোবর গ্রেফতার হলে ১৯৫২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পান।
 
শেখ হাসিনা বলেন, শেখ মুজিব ১৯৫০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্তরীণ থেকেও ভাষাসৈনিক ও ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছেন এবং আন্দোলনকে বেগবান করতে নানা পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি ৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ তিনজন দূত মারফত খবর পাঠান, ২১ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী হরতাল ডাকতে হবে এবং মিছিল করে ব্যবস্থাপক পরিষদের সভাস্থল ঘেরাও করতে হবে। ৪ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদের মিছিল শেষে এই ঘোষণা জানিয়ে দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে শেখ মুজিব আমরণ অনশন ঘোষণা করলে ১৬ ফেব্রুয়ারি কারা কর্তৃপক্ষ তাকে ঢাকা থেকে ফরিদপুর জেলে স্থানান্তরিত করে।তিনি বলেন, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পূর্ব-বাংলা ব্যবস্থাপক পরিষদের বাজেট অধিবেশনের জন্য নির্ধারিত ছিল। শেখ মুজিবের পরামর্শ ও নির্দেশ অনুযায়ী ওইদিন সারা দেশে সাধারণ ধর্মঘট আহ্বান করা হয়। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য মুসলিম লীগ সরকার ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকা শহরে এক মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি এবং সব সভা, সমাবেশ, মিছিল ইত্যাদি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
 
শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমবেত ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করে এবং সেখানে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালালে কতগুলো তাজা প্রাণ নিমেষেই ঝরে যায়, অনেকে আহত হন, অনেকে গ্রেফতার হন। প্রাদেশিক পরিষদের কয়েকজন সদস্য অধিবেশন কক্ষ থেকে ওয়াকআউট করেন। পরদিন ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল পালিত হয়। নিরুপায় হয়ে সরকার সেনাবাহিনী তলব করে, কারফিউ জারি করে এবং প্রাদেশিক পরিষদে বাংলা ভাষার প্রস্তাব গ্রহণ করে।
 
তিনি বলেন, ১৯৫৪ সালের ৮ মার্চ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্ট নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে। আওয়ামী লীগ সদস্যগণ বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এরই মধ্যে ৩০ মে পাকিস্তানের গভর্নর ৯২(ক) ধারা জারি করে যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভাকে ভেঙে দেয়। শেখ মুজিবসহ সব নেতা গ্রেফতার হন।
 
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় মন্ত্রিসভা গঠন করে, বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেয়, প্রথম ২১শে ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে এবং এই দিনে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে। সেই সরকারই শহীদ মিনার তৈরি, বাংলা একাডেমি থেকে সাহিত্য-বিজ্ঞানের বই প্রকাশ এবং বাংলা টাইপ-রাইটার উদ্ভাবনের জন্য প্রথম প্রকল্প গ্রহণ করে। দুর্ভাগ্য, ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর সামরিক শাসন জারির ফলে সেই আকাঙ্ক্ষাগুলো আর পূরণ হয়নি। 
অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস: বাঙালির শোক ও গৌরবের দিন আজ

অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস: বাঙালির শোক ও গৌরবের দিন আজ


অমর একুশে ফেব্রুয়ারি আজ। প্রতিটি বাঙালির শোক ও গৌরবের দিন। বোধ শানিত করে বাংলাকে সঙ্গী করে দৃপ্ত পায়ে এগিয়ে যাওয়ার সংকল্পের দিন। এই দিনটি শুধু বাঙালির নয়, পৃথিবীর সব ভাষাভাষী মানুষের। মর্যাদার একুশ একাধারে শহিদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।

বাংলার কোটি মানুষের মুখের ভাষা ‘বাংলা’কে মুছে ফেলার পাকিস্তানি ষড়যন্ত্রকে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ধূলিষাৎ করে দিয়েছিলেন দামাল ছেলেরা। বুকের তাজা রক্ত ঢেলে বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার মধ্য দিয়ে ইতিহাসের পাতায় চিরঅম্লান হয়ে আছেন তারা। বাঙালি আজ শ্রদ্ধাভরে স্মারণ করছে তাদের। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

আজ প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে ভাষাশহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শুরু হয়। করোনা মহামারির কারণে গতবারের মতো এবারও শহিদ মিনারে প্রবেশের ক্ষেত্রে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হচ্ছে। কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনায় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক প্রতিটি সংগঠনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ৫ জন প্রতিনিধি ও ব্যক্তিপর্যায়ে একসঙ্গে সর্বোচ্চ দুজন শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে পারছেন। শহিদ মিনারের সব প্রবেশমুখে হাত ধোয়ার জন্য বেসিন ও লিকুইড সাবান রাখা হয়েছে। মাস্ক ছাড়া কাউকে শহিদ মিনার চত্বরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। বাঙালিদের পাশাপাশি পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষও দিনটি শ্রদ্ধাভরে পালন করছে। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য দিনটি অন্যরকম আবেগের। কারণ রক্তস্নানের মধ্য দিয়ে ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হয়েছে বাঙালিকে। বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য এদিন সালাম, বরকত, রফিকসহ অনেকে আত্মাহুতি দেন।

দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বাংলাসহ বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষী জনগণ ও জাতিগোষ্ঠীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, কালের আবর্তে পৃথিবীতে অনেক ভাষাই বিপন্ন। একটা ভাষার বিলুপ্তি মানে একটা সংস্কৃতির বিলোপ, জাতিসত্তার বিলোপ, সভ্যতার অপমৃত্যু। তাই মাতৃভাষা ও নিজস্ব সংস্কৃতির বিকাশসহ সব জাতিগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় বিশ্ববাসীকে সোচ্চার হতে হবে। 

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাঙালির মুক্তি-সংগ্রামের ইতিহাসে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়েই একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, ভাষা-ভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠনের ভিত রচিত হয়েছিল। ভাষা আন্দোলনে বাঙালি কৃতি সন্তানদের চরম আত্মত্যাগের মাধ্যমেই বাঙালি জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়। 

আজ সরকারি ছুটির দিন। প্রতি বছরের মতো এবারও যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ পালনের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর বিশেষ অবদানের বিষয়টি শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচিতে যুক্ত হয়েছে। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সরকারি, আধা- সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনগুলোতে সঠিক নিয়মে, সঠিক রং ও মাপে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে আজ। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনসমূহ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আজিমপুর কবরস্থানে ফাতেহা পাঠ ও কোরআনখানির আয়োজনসহ দেশের সব উপাসনালয়ে ভাষা শহিদদের রুহের মাগফিরাতের জন্য প্রার্থনা করা হবে। 

দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে ঢাকা শহরের বিভিন্ন সড়কদ্বীপ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহ বাংলাসহ অন্যান্য ভাষার বর্ণমালা সম্বলিত ফেস্টুন দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে। সংবাদত্রগুলো প্রকাশ করেছে বিশেষ ক্রোড়পত্র। টেলিভিশন ও রেডিও চ্যানেলগুলো প্রচার করছে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা। 

গণযোগাযোগ অধিদপ্তর ঢাকা মহানগরীতে ট্রাকের মাধ্যমে রাজপথে ভ্রাম্যমাণ সংগীতানুষ্ঠান এবং নৌযানের সাহায্যে ঢাকা শহরসংলগ্ন নৌপথে সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজনসহ জেলা-উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেছে। চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর তিন ধরনের পোস্টার প্রকাশ করেছে। বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, জাতীয় জাদুঘর, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর, আরকাইভ ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তর, লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, শিশু একাডেমি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙামাটি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক একাডেমি, বিরিশিরি, নেত্রকোনা, রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমি, মণিপুরী ললিতকলা একাডেমি, কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গ্রন্থমেলা, আলোচনা সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, সুন্দর হাতের লেখা ও রচনা প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। জাতীয় জাদুঘর ও অধীনস্থ শাখা জাদুঘরসমূহ এবং প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সব প্রত্নতত্ত্বস্থল ও জাদুঘরগুলোতে শিশু-কিশোর, শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন (অটিস্টিক) শিশুদের বিনা টিকিটে পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। 

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি : দিবস উপলক্ষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে আওয়ামী লীগ। এর মধ্য রয়েছে- একুশে ভোর সাড়ে ৬টায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবনসহ সারা দেশে সংগঠনের সব শাখা কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন। সকাল ৭টায় কালো ব্যাজ ধারণ, প্রভাতফেরি সহকারে আজিমপুর কবরস্থানে ভাষা শহিদদের কবরে ও কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন। 

এ ছাড়া বিকাল সাড়ে ৩টায় দলের পক্ষ থেকে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখবেন তিনি। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সব কর্মসূচি স্বাস্থ্যবিধি মেনে পালনের জন্য আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনসমূহের সর্বস্তরের নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
চন্দরপুরে পিচ্ছিল সড়কে নোহা-কার খাঁদে (ভিডিও)

চন্দরপুরে পিচ্ছিল সড়কে নোহা-কার খাঁদে (ভিডিও)


গোলাপগঞ্জের চন্দরপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি মাইক্রোবাস (কার) খাঁদে এবং অপর আরেকটি মিনিবাস (নোহা) গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, সিলেট থেকে বিয়ানীবাজারগামী মাইক্রোবাস(কার) চন্দরপুরের যুক্তরাজ্য প্রবাসী আতিকুর রহমানের বাড়ির নিকট আসলে হঠাৎ করে গাড়িটির চাকা ফুটো হয়ে যায়। এসময় চালক গাড়িটিকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও রাস্তা মারাত্মক পিচ্ছিল হওয়ায় তা খাঁদে পড়ে যায়। এঘটনার সময় অপর আরেকটি নোহা গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়।


মাইক্রোবাস(কার) চালক জাহাঙ্গীর আলম জানান, রাস্তাটি মারাত্মক পিচ্ছিল থাকায় কোনোভাবে গাড়িটিকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় নি। রাস্তা থেকে পিচ্ছিল খেয়ে গাড়িটি সোজা পাশের কাদাযুক্ত জমিনে পড়ে যায়। এতে গাড়িটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

তবে এ দুর্ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও গাড়ি দুটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে চন্দরপুর-বিয়ানীবাজার সড়ক দিয়ে মাটি পরিবহন করে আসছে খোলা ট্রলি। আর এতে করে ট্রলি থেকে অতিরিক্ত মাটি উপচে পড়ায় পাকা রাস্তায় মাটির আস্তরণ সৃষ্টি হয়েছে। রোববার বিকেল থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির ফলে রাস্তাটি মারাত্মক পিচ্ছিল আকার ধারণ করে যান ও জনসাধারণের চলাচলে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, এধরণের বাহন দিয়ে অতিরিক্ত মাটি পরিবহনের ফলে পাকা রাস্তায় মাটির আবরণ তৈরি হয়েছে। আজ সামান্য বৃষ্টির ফলে রাস্তাটি মারাত্মক পিচ্ছিল আকার ধারণ করে। এতে যান ও জনসাধারণের চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

তাদের দাবী, এ ধরণের মাটি পরিবহনে জান-মালের নিরাপত্তা যেমন ঝুঁকিতে পড়ে ঠিক তেমনি বিটুমিন নষ্ট হয়ে সড়কটিও হয়ে পড়ে দুর্বল। এব্যাপারে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন।




Sunday, 20 February 2022

ছবিতে দেখুন বানিগাজীতে পুড়ে যাওয়া বসতঘরের ধ্বংসাবশেষ

ছবিতে দেখুন বানিগাজীতে পুড়ে যাওয়া বসতঘরের ধ্বংসাবশেষ

রান্নাঘরের ধ্বংসাবশেষ।
গত শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ন'টায় গোলাপগঞ্জের বানিগাজী গ্রামের দুটি বসতঘরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সৌদি আরব প্রবাসী আব্দুল ফয়েজ মাস্টার এবং বুধবারীবাজার ইউনিয়ন যুবলীগের কোষাধ্যক্ষ ও পূবালী ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল হামিদের যৌথঘরের ৬টি রুমই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
অগ্নিকাণ্ডের ছবি।
আব্দুল ফয়েজ ও আব্দুল হামিদের এই সেই যৌথ বসতঘর। যার পুরোটাই পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া একটি কক্ষের ধ্বংসাবশেষ।
অপর আরেকটি কক্ষের পুড়ে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ।
পুড়ে যাওয়া একটি ঝুলন্ত ফ্যান।
অগ্নিকাণ্ডে ধ্বংসপ্রাপ্ত ঘরের দেয়াল।
অগ্নিকাণ্ডে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মায়া আর মমতা দিয়ে গড়া অনেক শখের ঘরটি
মেঝেতে পড়ে আছে পুড়ে যাওয়া জিনিসপত্র
ছাই হয়ে পড়ে আছে ঘরের আসবাবপত্র।
মেঝেতে পুড়ে ছাই হয়ে পড়ে আছে ব্যবহৃত জিনিসপত্র
ব্যবহারযোগ্য কিছুই নেই আর অবশিষ্ট।
এছাড়া, অগ্নিকাণ্ডের সময় আগুনের ব্যাপকতায় পার্শ্ববর্তী আব্দুল মুহিতের বসতঘরেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে আব্দুল মুহিতের বসতঘরেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
আব্দুল মুহিতের আংশিক পুড়ে যাওয়া ঘর।

আরোও পড়ুনঃ 

বানিগাজীতে দু'টি বসতঘরে অগ্নিকাণ্ডঃ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি






আগামী ২ মার্চ চন্দরপুর ইসলামি যুব সংঘের সুন্নি মহাসম্মেলন

আগামী ২ মার্চ চন্দরপুর ইসলামি যুব সংঘের সুন্নি মহাসম্মেলন


আগামী ০২ মার্চ (বুধবার) চন্দরপুর ইসলামি যুব সংঘের ২০তম সুন্নি মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এদিন সকাল ১০টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চন্দরপুর স্থায়ী মাঠে (চন্দরপুর-আছিরগঞ্জ রোডের পার্শ্ববর্তী মাঠে) ইসলামি এ সুন্নি মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

চন্দরপুর ইসলামি যুব সংঘ আয়োজিত এ সুন্নি মহাসম্মেলনে আছিরগঞ্জ আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হযরত মাওলানা নুরুল হুদা'র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নসিহত পেশ করবেন হযরত আল্লামা হাফিজ ফখর উদ্দিন চৌধুরী, ছাহেব জাদায়ে ফুলতলী।

বিশেষ অতিথির নসিহত পেশ করবেন হযরত আল্লামা নেছার আহমদ চাঁদপুরী, হযরত মাওলানা মোঃ আব্দুল আউয়াল ফয়সাল বিন তাহেরী কুমিল্লা, হযরত মাওলানা মুফতি নেছার উদ্দিন চট্টগ্রামী।

আমন্ত্রিত উলামায়ে কেরাম হিসেবে উপস্থিত থেকে নসিহত পেশ করবেন রায়গড় পুরান বাজার হাফিজিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার হযরত মাওলানা আব্দুর রউফ, রায়গড় পুরান বাজার হাফিজিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক হযরত মাওলানা আসাদ উদ্দিন ফারুকী এবং হযরত মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ নুরী চন্দরপুরী।

এছাড়া আরোও দেশ বরেণ্য উলামায়ে কেরাম নসিহত পেশ করবেন। চন্দরপুর ইসলামি যুব সংঘের পক্ষ থেকে এ সুন্নি মহাসম্মেলনে সকলের দোয়া ও সার্বিক সহযোগিতা কামনা করে সকলকে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।