Saturday, 26 February 2022

রাশিয়ান জাহাজ আটক করেছে ফ্রান্স

রাশিয়ান জাহাজ আটক করেছে ফ্রান্স


ইংলিশ চ্যানেলে রাশিয়ার একটি কার্গো জাহাজ আটক করেছে ফরাসি নৌবাহিনী। জাহাজটি রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবুর্গের দিকে যাচ্ছিল।

ফরাসি বাহিনী সূত্রে জানানো হয়েছে, টহলদারির সময় ইংলিশ চ্যানেলে একটি পণ্যবাহী জাহাজ চোখে পড়ে তাদের। তাতে রাশিয়ার পতাকা লাগানো ছিল। সঙ্গে সঙ্গে সেটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়, তারপরে গাড়িভর্তি ওই জাহাজটিকে নিয়ে আসা হয়েছে ফ্রান্সের বুলন-সু-মেহ বন্দরে। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর রাশিয়ার ওপর একাধিক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপের একাধিক দেশ এবং আমেরিকা। সেই কারণেই এমন পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এ ঘটনায় ফ্রান্সের কর্মকর্তারা বিবিসিকে বলেন, ‘ইউক্রেইনে আক্রমণের কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার ওপর নতুন করে যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তার আওতায় রাশিয়ার জাহাজটি আটকে দেওয়া হয়। সেটিকে ফ্রান্সের বুলন-সু-মেহ বন্দরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রাশিয়ার এই জাহাজটির নাম ‘বাল্টিক লিডার’। এর দৈর্ঘ্য ১২৭ মিটার। জাহাজটিতে গাড়ি বহন করা হচ্ছিল। ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রমকালে শুক্রবার দিবাগত রাতে তার গতিরোধ করে ফরাসি নৌবাহিনী।

তারা আরও বলেন, ‘ফ্রান্স সরকারের অনুরোধে জাহাজটিকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাশিয়ার যে কোম্পানির পণ্য ওই জাহাজে যাচ্ছিল সেটি ইইউর নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে। ফ্রান্সে সীমান্তরক্ষীরা পণ্যবাহী জাহাজটি পরীক্ষা করে দেখছে। জাহাজের ক্রুরা সহযোগিতার মনোভাব দেখাচ্ছেন।’

এ ঘটনায় পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে রাশিয়া। ফ্রান্সে নিযুক্ত রুশ দূতাবাস জাহাজ জব্দে প্যারিসের কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করেছে। এ খবর রাশিয়ার সরকারি সংবাদসংস্থা আরআইএ দূতাবাসের বরাত দিয়ে জানিয়েছে।

একটি সূত্র জানায়, জাহাজটিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। জাহাজের মাল পরিবহনের সঙ্গে রাশিয়ার আর্থিক স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে তদন্তে। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অন্তত ৪৮টি ঘণ্টা সময় লাগবে বলে জানানো হয়েছে।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ফ্রান্সের সমুদ্র পুলিশের ক্যাপ্টেন ভেরোনিক ম্যাগনিন বলেছেন, রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গগামী ওই জাহাজ গাড়ি পরিবহন করছিল।

ফ্রান্সের সংবাদপত্র লা ভইক্স ডু নর্ড ইংলিশ চ্যানেলে ওই জাহাজ জব্দের ঘটনা নিয়ে প্রথম সংবাদ প্রকাশ করে। সংবাদপত্রটি বলেছে, সামুদ্রিক যান চলাচলের তথ্য রাখা ওয়েবসাইট মেরিনইট্রাফিক ডটকমের তথ্য অনুযায়ী, জাহাজটি রুশ কোম্পানি বাল্টিক লিডারের এবং এটি রাশিয়ার পতাকাবাহী ছিল।

ম্যাগনিন বলেছেন, জাহাজটির মালিক একজন রুশ ব্যবসায়ী। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আছেন।

এদিকে, ইউক্রেন-রাশিয়ার সেনাবাহিনী মুখোমুখি অবস্থান করছে ইউক্রেনের রাস্তায়। ইউক্রেনে হামলা করতেই বিশ্বের একাধিক দেশ নিন্দায় মুখর হয়েছে। সরাসরি সেনা পাঠিয়ে সাহায্য না করলেও নানাভাবে পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা। তার সঙ্গেই রাশিয়ার উপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরাসরি যুদ্ধ না করে রাশিয়াকে আর্থিকভাবে ধাক্কা দেওয়াই মূল লক্ষ্য ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং আমেরিকার। বিশ্বের বিভিন্ন দেশগুলির কাছে রাশিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক অসহযোগিতা করার আবেদন করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টও।

এর আগে, শুক্রবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো ইউরোপে থাকা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সম্পত্তি জব্দের সিদ্ধান্ত নেয়। ইউক্রেনে আগ্রাসনের জবাবে তাদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইইউ। চলতি মাসের শুরুর দিকে রাশিয়ার কিছু নাগরিকের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। 
নতুন নির্বাচন কমিশনারদের নিয়ে যা বললেন ফখরুল

নতুন নির্বাচন কমিশনারদের নিয়ে যা বললেন ফখরুল


নতুন গঠিত নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিএনপির আগ্রহ নেই বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন কমিশন গঠনের পর তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফখরুল বলেন, আমরা আগেও বলেছি এখনও পরিষ্কার করে বলছি, শুধু নির্বাচন কমিশন নয় আওয়ামী লীগ যা কিছু করবে সব তাদের নিজেদের লোকদের দিয়ে করবে। সুতরাং, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররা আমাদের কাছে অর্থবহ নয়, তাই নির্বাচন কমিশন নিয়ে আমাদের কোনো আগ্রহ নেই।

এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং চারজনের কমিশনের নাম দিয়ে শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।

কমিশনার হলেন- জেলা ও দায়রা জজ (অবসরপ্রাপ্ত) বেগম রাশিদা সুলতানা, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আহসান হাবীব খান, সিনিয়র সচিব (অবসরপ্রাপ্ত) মো. আলমগীর, সিনিয়র সচিব (অবসরপ্রাপ্ত) আনিছুর রহমান।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের লক্ষ্যে ১০ জনের নাম সুপারিশের জন্য গত ৫ ফেব্রুয়ারি ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করেন রাষ্ট্রপতি। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে এর প্রধান করা হয়।

যোগ্য ব্যক্তিদের নাম বাছাই করতে গত ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে তিনটি বৈঠক করে সার্চ কমিটি। এর আগে সার্চ কমিটির পক্ষ থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে এবং ব্যক্তি পর্যায়ে সবার কাছে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে যোগ্য ব্যক্তিদের নাম চাওয়া হয়।

সার্চ কমিটির কাছে মোট ৩২২ জনের নাম জমা পড়ে। এরপর তারা কয়েকটি বৈঠক করে ওই ৩২২ জন থেকে ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে ১০ জনের এ তালিকা জমা দেন সার্চ কমিটির সদস্যরা। 
সিলেটে রোমানিয়া পাঠানোর নামে আমিন রহমান ট্রাভেলসের প্রতারণা

সিলেটে রোমানিয়া পাঠানোর নামে আমিন রহমান ট্রাভেলসের প্রতারণা


সিলেটে রোমানিয়া পাঠানোর নামে প্রায় ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছেন এক ট্রাভেল অ্যাজেন্টের মালিক। প্রায় ৩শ' যুবক তার প্রতারণার স্বীকার বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

আজ শনিবার দুপুরের দিকে আমিন রহমান ট্রাভেলসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন প্রতারিতদের কয়েকজন। তাদের দাবি, প্রতারক আমিন রহমানকে গ্রেফতার ও টাকা উদ্ধার।
 
প্রতারিতদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, মাত্র তিন মাসের মধ্যে রোমানিয়ায় পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয় নগরীর জিন্দাবাজারস্থ আমিন রহমান ট্রাভেলস। বিজ্ঞাপন দেখে তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, রোমানিয়ায় যেতে খরচ লাগবে ৬ লাখ টাকা।বুকিং মানি হিসেবে ৫০ হাজার টাকা ও ওয়ার্কপারমিট আসার পর দিতে হবে আরও ৫০ হাজার টাকা। বাকি ৫ লাখ দিতে হবে ভিসা হওয়ার পর। এমন কথা শোনার পর স্ট্যাম্পে চুক্তি করে আমিন রহমানের হাতে টাকা তুলে দেন ভুক্তভোগীরা।

২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে রোমানিয়ায় ফ্লাইট শুরুর কথা থাকলেও সেদিন বিকেল থেকে মোবাইল ফোন বন্ধ করে গা ঢাকা দেন তিনি আমিন রহমান। পরে যাদের ভিসা লাগানো হয়েছিল তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তাদের পাসপোর্টে লাগানো ভিসাও ছিল জাল।

জকিগঞ্জের পশ্চিম গোটারগ্রামের অধিবাসী রুহুল আমিন জানান, তিনি ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা তিনি আমিনকে দিয়েছিলেন। তাকে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তিও করেন আমিন। ৩ মার্চ তার ফ্লাইট হওয়ার কথা। কিন্তু তিনি তার পরিচিত একজনের মাধ্যমে ভারতস্থ রোমানিয়া অ্যাম্বেসিতে ভিসার কপি পাঠালে তারা জানায়, ওই ভিসা নকল। ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে আমিনের মোবাইল বন্ধ পেয়ে তিনি বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। একইভাবে প্রতারিত হয়েছেন মৌলভীবাজারের রাজনগরের মাহবুবুর রহমান মঞ্জুসহ আরও অনেকে। শনিবার দুপুরে আমিন রহমান ট্রাভেলসের কর্মী মারওয়া বেগম চৌধুরী জানান, আমিন রহমান তাদের সাথে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, সমস্যায় পড়ে তিনি তার মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছেন। এক সপ্তাহের মধ্যে সবার ফ্লাইট দেবেন। আর যদি না পারেন তবে সবার টাকা ফেরত দেবেন।

তবে ভূক্তভোগীরা জানান, আমিন যে হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার থেকে কথা বলেছেন, সেটি দুবাই’র। তাদের ধারনা, আমিন রহমান দেশে থেকেই দুবাইর নম্বর ব্যবহার করে প্রতারণা বা ধোঁকাবাজী চালিয়ে যাচ্ছে। 
চন্দরপুরে ২ সন্তানের জননীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার: হত্যা, নাকি আত্মহত্যা?

চন্দরপুরে ২ সন্তানের জননীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার: হত্যা, নাকি আত্মহত্যা?


বিশেষ প্রতিবেদনঃ গোলাপগঞ্জের চন্দরপুরে দুই সন্তানের জননীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তৈরি হয়েছে রহস্যের ধুম্রজাল। গতকাল (শুক্রবার) রাত ৮টার দিকে শিউলী বেগম নামের ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। সে চন্দরপুর গ্রামের আমকোনী বাড়ির ইকবাল হোসেনের স্ত্রী। তাদের দুটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান রয়েছে।

শিউলী বেগমের পিত্রালয়ও একই এলাকায়। সে লামা-চন্দরপুর গ্রামের হারুন মিয়ার মেয়ে।

দুই সন্তানের ওই জননীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনাটি হত্যা? নাকি আত্মহত্যা? এমন প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের মনে।

ইকবাল হোসেনের পরিবার ঘটনাটি আত্মহত্যা দাবী করলেও বিপরীত দাবী জানিয়েছেন শিউলী বেগমের পরিবার। তাদের দাবী পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের পর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে শিউলী বেগমের নিথর দেহ।


স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, শিউলী বেগম ও ইকবাল হোসেনের মাঝে পারিবারিক কলহ ছিলো। এমনকি তা তালাক পর্যন্ত গড়ায়। তালাকের ঘটনায় প্রায় দুই মাস শিউলী বেগম তার পিত্রালয়ে ছিলেন। পরবর্তীতে উভয় পরিবার, চেয়ারম্যান-মেম্বার ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সালিশ-বৈঠকের মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধান করেন, এমনকি হাসিমুখে গত শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) শিউলী বেগম তার স্বামীর বাড়িতে ফিরেন। সালিশ-বৈঠকে শিউলী বেগম চেয়ারম্যান-মেম্বারগণকে স্বামীর বাড়িতে ফেরার পূর্ণ অনুমতিও দিয়েছিলেন। অথচ, স্বামীর বাড়ি ফেরার এক সপ্তাহের মাথায় (২৫ ফেব্রুয়ারি) রহস্য ঘেরা ঝুলন্ত লাশ হলেন শিউলী বেগম(২৫)।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টায় গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ এসে ঘরের দরজা ভেঙ্গে শিউলী বেগমের লাশ উদ্ধার করে। এসময় শিউলী বেগমের নিথর দেহ ফ্যানের সাথে ঝুলছিলো। তবে দু'পা বিছানায় লেপ্টে থাকায় সন্দেহের উদ্রেক দেখা দিয়েছে। এছাড়া শিউলী বেগমের স্বামী ইকবাল হোসেন ও দেবর রাজন আহমদ ঘটনার সময় বাড়িতে থাকলেও পুলিশের আগমন এবং লাশ উদ্ধারের পূর্বে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। এতে এলাকার লোকজনের মাঝে রহস্য ঘনীভূত হয়।

এদিকে ইকবাল হোসেনের পরিবারের দাবী, ইকবাল গত বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ব্যবসার জন্য বড়লেখা উপজেলার দাসের বাজার গিয়েছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যার কিছু পূর্বে সে বাড়িতে ফিরে। তবে ঠিক কি কারণে ইকবাল হোসেন ও রাজন আহমদ ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেলেন তার সদুত্তর মিলেনি।

পরিবার সূত্র আরোও জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যার কিছু পূর্বে ইকবাল হোসেন বাড়িতে আসলে শিউলী বেগমকে তার বন্ধ কক্ষে ডাকাডাকি করেন। এসময় শিউলী বেগম ঘুমিয়ে আছেন মনে করে ইকবাল আবারও বাড়ির বাইরে চলে যান। পরবর্তীতে তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ঘরের ভেতর শিউলী বেগমের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে চিৎকার করেন। এসময় আশপাশের লোক জড়ো হলে পুলিশে খবর দেয়া হয়। পরে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার এসআই মোফাখখারুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেন।

গোলাপগঞ্জ মডেল থানার এসআই মোফাখখারুল ইসলাম লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, ঘটনাটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা? তা ময়না তদন্তের রিপোর্ট না আসলে বলা যাবে না। লাশের অবস্থা দেখে এটাকে প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলেই মনে করছেন তিনি। তবে ময়না তদন্ত শেষেই ঘটনার সত্যতা জানা যাবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।

এঘটনায় শিউলী বেগমের পিতৃ পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

তবে স্থানীয় এলাকাবাসীর মনে রয়েছে সংশয়। ঘটনাটি হত্যা? নাকি আত্মহত্যা? এ প্রশ্নের সঠিক খোঁজ পেতে প্রশাসনের সর্বাত্মক তৎপরতা কামনা করেন তারা। তবে এ পর্যন্ত ময়না তদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষাই করতে হচ্ছে সবাইকে।

আরোও পড়ুনঃ

চন্দরপুরে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হওয়া শিউলীর দাফন সম্পন্ন

চন্দরপুরে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হওয়া শিউলীর দাফন সম্পন্ন


গোলাপগঞ্জের চন্দরপুরে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা সেই শিউলী বেগমের জানাযা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বাদ সন্ধ্যায় লামা-চন্দরপুর শাহী ঈদগাহ ময়দানে তার জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

এর আগে ময়না তদন্ত শেষে শিউলী বেগমের মরদেহ নিয়ে আসা হয় তার পিত্রালয়ে। তার পিতার বাড়ি একই এলাকার লামা-চন্দরপুর গ্রামে। সে লামা-চন্দরপুর গ্রামের হারুন মিয়ার মেয়ে।

উল্লেখ্য, গতকাল (শুক্রবার) রাত ৮টার দিকে শিউলী বেগমের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। শিউলী বেগম(২৫) চন্দরপুর গ্রামের আমকোনী বাড়ির ইকবাল হোসেনের স্ত্রী। তাদের দুটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান রয়েছে।

এদিকে, এ ঘটনাটি আত্মহত্যা নাকি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। ইকবাল হোসেনের পরিবার ঘটনাটি আত্মহত্যা দাবী করলেও বিপরীত দাবী জানিয়েছেন শিউলী বেগমের পরিবার। আর প্রত্যক্ষদর্শী-সহ এলাকাবাসী রয়েছেন রহস্যের বেড়াজালে।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, শিউলী বেগম ও ইকবাল হোসেনের মাঝে পারিবারিক কলহ ছিলো। এমনকি তা তালাক পর্যন্ত গড়ায়। তালাকের ঘটনায় প্রায় দুই মাস শিউলী বেগম তার পিত্রালয়ে ছিলেন। পরবর্তীতে উভয় পরিবার ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সালিশ-বৈঠকের মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধান করলে গত শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) শিউলী বেগম তার স্বামীর বাড়িতে ফিরেন। স্বামীর বাড়ি ফেরার এক সপ্তাহের মাথায় (২৫ ফেব্রুয়ারি) রহস্য ঘেরা ঝুলন্ত লাশ হলেন শিউলী বেগম(২৫)।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টায় গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ এসে ঘরের দরজা ভেঙ্গে শিউলী বেগমের লাশ উদ্ধার করে। এসময় শিউলী বেগমের নিথর দেহ ফ্যানের সাথে ঝুলছিলো। তবে দু'পা বিছানায় লেপ্টে থাকায় সন্দেহের উদ্রেক দেখা দিয়েছে। এছাড়া শিউলী বেগমের স্বামী ইকবাল হোসেন ও দেবর রাজন আহমদ ঘটনার সময় বাড়িতে থাকলেও পুলিশের আগমন এবং লাশ উদ্ধারের পূর্বে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। এতে এলাকার লোকজনের মাঝে রহস্য ঘনীভূত হয়।

এদিকে ইকবাল হোসেনের পরিবারের দাবী, ইকবাল গত বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ব্যবসার জন্য বড়লেখা উপজেলার দাসের বাজার গিয়েছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যার কিছু পূর্বে সে বাড়িতে ফিরে। তবে ঠিক কি কারণে ইকবাল হোসেন ও রাজন আহমদ পালিয়ে গেলেন তার সদুত্তর মিলেনি।

পরিবার সূত্র আরোও জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যার কিছু পূর্বে ইকবাল হোসেন বাড়িতে আসলে শিউলী বেগমকে তার বন্ধ কক্ষে ডাকাডাকি করেন। এসময় শিউলী বেগম ঘুমিয়ে আছেন মনে করে ইকবাল আবারও বাড়ির বাইরে চলে যান। পরবর্তীতে তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ঘরের ভেতর শিউলী বেগমের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে চিৎকার করেন। এসময় আশপাশের লোক জড়ো হলে পুলিশে খবর দেয়া হয়। পরে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার এসআই মোফাখখারুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেন।

তবে শিউলী বেগমের পরিবারের দাবী, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তারা।

গোলাপগঞ্জ মডেল থানার এসআই মোফাখখারুল ইসলাম লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে জানান, লাশের অবস্থা দেখে এটাকে প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। ময়না তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা জানা যাবে।
নির্বাচন কমিশনার হলেন যারা

নির্বাচন কমিশনার হলেন যারা


সার্চ কমিটির দেওয়া নামের তালিকা থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত আলাদা দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদে দেওয়া ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি এ নিয়োগ দিয়েছেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়। জারি করা প্রজ্ঞাপনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালকে নিয়োগ দেওয়ার তথ্য জানানো হয়।

নিয়োগপ্রাপ্ত চার কমিশনার হলেন- সাবেক জেলা ও দায়রা জজ রাশিদা সুলতানা, ব্রি. জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব খান, সাবেক সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর এবং সাবেক সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের লক্ষ্যে ১০ জনের নাম সুপারিশের জন্য গত ৫ ফেব্রুয়ারি ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করেন রাষ্ট্রপতি। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে এর প্রধান করা হয়।

যোগ্য ব্যক্তিদের নাম বাছাই করতে গত ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে তিনটি বৈঠক করে সার্চ কমিটি। এসব বৈঠকে অংশ নেওয়া বিশিষ্টজনরা নির্বাচন কমিশনার হিসেবে যোগ্য ব্যক্তিদের কিছু নাম প্রস্তাব করেন।

সার্চ কমিটির কাছে মোট ৩২২ জনের নাম জমা পড়ে। এরপর তারা কয়েকটি বৈঠক করে ওই ৩২২ জন থেকে ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে ১০ জনের এ তালিকা রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেন সার্চ কমিটির সদস্যরা। ওই ১০ জন থেকে ৫ জনকে নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করলেন রাষ্ট্রপতি। 
সিইসি হলেন কাজী হাবিবুল আউয়াল

সিইসি হলেন কাজী হাবিবুল আউয়াল


কাজী হাবিবুল আউয়ালকে নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।তাকে নিয়োগ দিয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে শনিবার এ তথ্য জানানো হয়।

সিইসির দায়িত্ব পাওয়া কাজী হাবিবুল আউয়াল সর্বশেষ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন।

এর আগে বিচার বিভাগের কর্মকর্তা হাবিবুল আউয়াল আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগে সুপার নিউমারারি (স্বল্প সময়ের জন্য) সচিব ছিলেন। সেখান থেকে তাকে রাষ্ট্রপতির ১০ শতাংশ কোটায় প্রথমে ধর্ম সচিব এবং পরে প্রতিরক্ষা সচিব হিসেবে প্রেষণে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে ২০১৪ সালের ১৮ জুন তার চাকরির মেয়াদ এক বছর বাড়ায় সরকার। 

২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) যাওয়ার কথা ছিল হাবিবুল আউয়ালের। কিন্তু ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি পিআরএল বাতিল করে তাকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে এক বছরের চুক্তিতে নিয়োগ দেয় সরকার। পরে সেই চুক্তির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়। ২০১৭ সালে অবসরে যান তিনি।

এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে গিয়ে সিইসি এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য যোগ্য ১০ জনের নাম রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে জমা দেন সার্চ কমিটির সদস্যরা। 

গত ২৭ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রথমবারের মতো আইন প্রণয়ন করে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় ৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে দেন রাষ্ট্রপতি। এরপর সার্চ কমিটির প্রথম বৈঠকে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ও সুধীজনের কাছ থেকে নাম আহ্বানের সিদ্ধান্ত হয়। একইসঙ্গে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বৈঠক আহ্বান করে সার্চ কমিটি। সরাসরি ও ইমেইলের মাধ্যমে সার্চ কমিটির কাছে প্রায় পাঁচশজনের নাম জমা পড়ে।

এসব নাম থেকে প্রথম দফায় ১৪ ফেব্রুয়ারি কমন নাম বাদ দিয়ে ৩২২ জনের তালিকা প্রকাশ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এরপর বিশিষ্টজনদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের মাধ্যমেও বেশ কিছু নাম পায় সার্চ কমিটি। সেখানেও কিছু কমন নাম বাদ দিয়ে তালিকায় প্রস্তাবিত নামের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩২৯ জনে। এসব নাম থেকে একাধিক দফায় বৈঠক করে ২০ জনের নাম বাছাই হয়, দ্বিতীয় দফায় সেটা ১২-১৩ জনে আসে। গত মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সার্চ কমিটির সর্বশেষ বৈঠকে ১০ জনের নাম চূড়ান্ত হয়। কিন্তু এ দশজনের নাম প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নেয় সার্চ কমিটি।

উল্লেখ্য, কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন সর্বশেষ বিদায়ী ইসির মেয়াদ গত ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়।