Saturday, 4 September 2021

সীমানা নির্ধারণ ছাড়াই করা যাবে সংসদ নির্বাচন

সীমানা নির্ধারণ ছাড়াই করা যাবে সংসদ নির্বাচন



সীমানা নির্ধারণ ছাড়াই করা যাবে সংসদীয় নির্বাচন। দৈব-দুর্বিপাকে কোনো এলাকার সংসদ নির্বাচনের সীমানা নির্ধারণ করা সম্ভব না হলে বিদ্যমান সীমানায় নির্বাচন হওয়ার বিধান রেখে একটি আইন পাস হয়েছে। ‘জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ বিল-২০২১’ নামে বিলটি আইনমন্ত্রী পাসের প্রস্তাব করলে সংসদে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।

এর আগে আইনটি পাস না করে কয়েকজন এমপি জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাব দেওয়ার জন্য পুনরায় পাঠানোর দাবি জানালে তা কণ্ঠভোটে বাতিল হয়ে যায়। এ আইন কার্যকর হলে ১৯৭৬ সালের ‘দ্য ডিলিমিটেশন অব কন্সটিটিউয়েন্সিস অর্ডিনেন্স’ রহিত হবে।

শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে বিলটি পাস হয়। এর আগে বেলা ১১টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। পাস হওয়া বিলে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ স্বাক্ষর করলেই তা কার্যকর হবে।

গত ৩ জুন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিলটি সংসদে উত্থাপন করেছিলেন। পরে তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।


আইনে নির্বাচন কমিশনকে বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা বিদ্যমান আইনে নেই। এছাড়াও এটি আগে ইংরেজিতে ছিল, এখন আইনটি বাংলায় করা হয়েছে।

নতুন বিলে বিদ্যমান আইনের ৮ নম্বর ধারায় একটি উপধারা যুক্ত করা হয়েছে। সেখানে বলা আছে, দৈব-দুর্বিপাকে বা অন্য কোনো কারণে আঞ্চলিক সীমানা নির্ধারণ করা না গেলে বিদ্যমান সীমানার আলোকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংসদের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এবং বাংলায় আইন করতেই মূলত বিলটি আনা হয়েছে।

সামরিক সরকারের আমলে জারি হওয়া ‘দ্য ডিলিমিটেশন অব কন্সটিটিউয়েন্সিস অর্ডিনেন্সের’ সংশোধন করতে নির্বাচন কমিশন বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছিলো। তবে সেগুলো আমলে নেওয়া হয়নি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নিয়ে রোডম্যাপ ঘোষণা করে বিদ্যমান আইনগুলোর সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইনটি সংস্কারের ঘোষণাও দেয়। কিন্তু সেটা হয়নি। পরে বিদ্যমান আইনেই সীমানা পুনর্বিন্যাস করে ওই নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়।

২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর আইনটির খসড়া চূড়ান্ত করে সরকারের কাছে পাঠায় ইসি। কমিশন খসড়ায় বিদ্যমান জনসংখ্যা কোটার ভিত্তিতে আসন বণ্টনের সঙ্গে ভোটার সংখ্যা যুক্ত করার প্রস্তাব করেছিল। এছাড়া সিটি করপোরেশন, বড় বড় শহর ও পল্লী এলাকার ভারসাম্য রক্ষার কথাও বলা হয়েছিল ইসির প্রস্তাবে।

সংবিধান ও সীমানা নির্ধারণ আইন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সংবিধানের ১১৯ (গ) অনুচ্ছেদে ইসিকে সংসদীয় নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ করার কথা বলা হয়েছে। ১২৪ অনুচ্ছেদে ইসিকে সংসদ আইনের দ্বারা নির্বাচনী এলাকার সীমা নির্ধারণ করার কথা বলা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সংসদ নির্বাচন এলাকা সীমানা নির্ধারণ বিধান অধ্যাদেশ-১৯৭৬ জারি করা হয়। এরপর থেকেই এ অধ্যাদেশের বলে সংসদ নির্বাচনের সীমানা পুনর্বিন্যাস হয়ে আসছে। নতুন আইন হলে এর বিধানে এসব কার্যক্রম পরিচালিত হবে।


বিদ্যমান আইনের ৮টি ধারার স্থলে নতুন আইনে ৯টি ধারার প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন ধারাটিতে আইনের অধীনে বিধি প্রণয়নের সুযোগ রাখা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে বিধি প্রণয়নের সুযোগ নেই। বিদ্যমান আইনের ধারা-১-এ একটি নতুন উপধারার প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে আইনটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিলে আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে সংবিধানের ৬৫(২) অনুচ্ছেদে উল্লিখিত সংখ্যক সংসদ সদস্য নির্বাচিত করতে পুরো দেশকে সে সংখ্যক একক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকায় বিভক্ত করার কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে ভৌগলিক অখণ্ডতা বজায় রাখা এবং আদমশুমারির ভিত্তিতে যতদূর সম্ভব বাস্তবভিত্তিক বণ্টনের কথা বলা হয়েছে।

বিলের ৭ ধারায় বলা হয়েছে, ইসির সীমানা নির্ধারণের বিষয় নিয়ে দেশের কোনো আদালত বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন তোলা যাবে না।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন-২০১১ এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ে সামরিক ফরমান দ্বারা জারিকৃত দ্য ডিলিমিটেশন অব কন্সটিটিউয়েন্সিস অর্ডিনেন্স-১৯৭৬ এর কার্যকারিতা লোপ পায়। যার প্রেক্ষিতে জনস্বার্থে আবশ্যক বিবেচনায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হতে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল তারিখ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে জারিকৃত কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকরকরণ (বিশেষ বিধান) আইন-২০১৩ দ্বারা অন্যান্য কতিপয় অধ্যাদেশের সাথে এই অর্ডিনেন্সকেও কার্যকর রাখা হয়। পরে সরকার সামরিক শাসনামলে জারিকৃত অধ্যাদেশগুলো সকল স্টেকহোল্ডার এবং সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামত গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জন করে বাংলায় নতুন আইন প্রণয়ন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ওই সিদ্ধান্তের আলোকে অর্ডিনেন্সটির প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে তা রহিত করে সংশোধনসহ পুনঃপ্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রস্তাবিত বিলটি প্রস্তুত করা হয়েছে।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রস্তাবিত বিলে সংবিধানের ৬৫(২) অনুচ্ছেদে উল্লিখিত সংখ্যক একক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, নির্বাচন কমিশনের কার্যপদ্ধতি, ক্ষমতা অর্পণ ও কমিশনকে সহায়তা প্রদান এবং কমিশন কর্তৃক বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা প্রদান-সংক্রান্ত বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এটি আইনে পরিণত হলে জাতীয় সংসনের একক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ কাজ সুচারুরূপে সম্পাদন করা সম্ভব হবে।’

সূত্রঃ জাগো নিউজ
এবার ১৮ বছরের নিচে শিক্ষার্থীদের ফাইজার-মডার্নার টিকা দেওয়া হবে

এবার ১৮ বছরের নিচে শিক্ষার্থীদের ফাইজার-মডার্নার টিকা দেওয়া হবে



১৮ বছরের নিচে শিক্ষার্থীদের ফাইজার এবং মডার্নার টিকা দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। 


শনিবার সকালে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কোর্সে কম্প্রেহেনসিভ পরীক্ষায় তেজগাঁওয়ের একটি কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন। 

মন্ত্রী বলেন, বয়স ১৮ বছরের উপরে হলে যেকোনো টিকা দেওয়া যাবে। যদি বয়স ১৮ বছরের নিচে হয় তাহলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যে নির্দেশনা রয়েছে এবং অন্যান্য দেশে যেমন আমেরিকা ও ব্রিটেনে ১২ বছরের ওপরে বয়সীদের ফাইজার ও মডার্নার টিকা দেওয়া হয়েছে। আমাদেরকেও এ পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।  

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়াসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনার বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আগামীকাল রোববার এ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।


ক্যাম্পেইনের দ্বিতীয় ডোজের টিকা মজুত আছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে যাদের প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে তাদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে। প্রথম ডোজ যে কেন্দ্র দেওয়া হয়েছে, দ্বিতীয় ডোজও একই কেন্দ্রে নিতে হবে। গ্রামের টিকা নেওয়ার জন্য মানুষের আগ্রহ কম ছিল, আমরা তাদের অনুপ্রাণিত করতেই এ কর্মসূচি হাতে নিয়েছেলাম।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টিকা পাওয়ার ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে বাকিদেরও টিকা নিশ্চিত করা হবে। চীনের সঙ্গে নতুন করে ছয় কোটি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে সাড়ে ১০ কোটি টিকা চাহিদা দেওয়া হয়েছে। আগামী বছরের জানুয়ারি নাগাদ এসব টিকা পাওয়ার আশা করা হচ্ছে। এ সাড়ে ১৬ কোটি টিকা পেলে সংকট কেটে যাবে।
জয়ের সম্ভাবনা দেখছেন হাবিবঃ তবে ফলাফল যাই হোক মেনে নেয়ার ঘোষণা

জয়ের সম্ভাবনা দেখছেন হাবিবঃ তবে ফলাফল যাই হোক মেনে নেয়ার ঘোষণা



নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তা মেনে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব। তবে ভোটারদের মধ্যে যে উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে তাতে দিন শেষে তার প্রতীক নৌকার বিজয়ই হবে বলে মনে করছেন তিনি।


শনিবার সকালে দক্ষিণ সুরমার কামাল বাজার সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেয়ার পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

হাবিব বলেন, সকালে মা-বাবার কবর জিয়ারত করে তিনি ভোট দিতে এসেছেন। ভোটারদের মধ্যে যে উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে তাতে বিকেল ৪টার পর নৌকা প্রতীকেরই বিজয় হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তবে ফলাফল যাই হোক না কেন জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তা মেনে নেয়ার কথাও জানান হাবিব। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চলছে। ভোটাররা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোট দিচ্ছেন।


প্রতিদ্বন্দ্বি জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিকের বিরুদ্ধে টাকা বিতরণের অভিযোগ করে হাবিব বলেন, সিলেট-৩ আসনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক অবৈধভাবে টাকা উড়ানো শুরু করেন। এতে নির্বাচনী পরিবেশ কলুষিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
ইভিএম নিয়ে অভিযোগ শফির

ইভিএম নিয়ে অভিযোগ শফির


ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে ভোট দিতে এখনো মানুষ অভ্যস্ত নয়। ভোট দিতে মানুষকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সিলেট-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী, সাবেক সাংসদ ও বিএনপির বহিস্কৃত কেন্দ্রীয় নেতা শফি আহমেদ চৌধুরী।


শনিবার দুপুরে ভোট কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ অভিযোগ করেন। ভোটের আগে ইভিএম নিয়ে ভোটার ও নির্বাচনী কর্মকর্তাদের আরো প্রশিক্ষণের প্রয়োজন ছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শফি আহমেদ চৌধুরী বলেন, মানুষ ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিতে অভ্যস্ত নয়। তিনি নিজেও জানতেন না ইভিএমের মাধ্যমে কিভাবে ভোট দিতে হয়। অনেক পোলিং অফিসারও ইভিএম বুঝেন না।

নারী ভোটাররা ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিতে এসে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন মন্তব্য করে শফি আহমেদ চৌধুরী বলেন, নারী ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে ব্যালট খুঁজছেন। ইভিএম পদ্ধতি সম্পর্কে তারা কিছুই জানে না। তাই অনেকে সুষ্টুভাবে ভোট দিতে পারছেন না।


নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশের পাশাপাশি জয়ের ব্যাপারেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন শফি। তিনি বলেন, নির্বাচনে যারাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তারা সবাই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী থাকেন। তিনিও একইভাবে আশাবাদী।

জয়ের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ১৯৮৬ সাল থেকে তিনি রাজনীতি করে আসছেন। সাংসদ থাকাকালে এলাকায় অনেক উন্নয়ন করেছেন। ব্যক্তিগত উদ্যোগেও এলাকার উন্নয়ন করেছেন। মানুষ এই উন্নয়নের কথা মনে রেখেছে। তাই তাদের সমর্থন তার প্রতীকেই থাকবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি।
সিলেট ৩ উপনির্বাচনের ভোট প্রয়োগে ভোটারদের উপস্থিতি কম

সিলেট ৩ উপনির্বাচনের ভোট প্রয়োগে ভোটারদের উপস্থিতি কম




বহূল প্রতীক্ষিত সিলেট-৩ আসনে উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে চলছে ভোটগ্রহণ। চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। তবে প্রথমবারের মতো এ আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ করা হলেও কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের তেমন ঝটলা নেই।

সকাল থেকে ভোটগ্রহণের শুরুতে কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটারদের মোটামুটি উপস্থিতি থাকলেও বেশিরভাগ কেন্দ্র প্রায় ফাঁকা দেখা গেছে। তবে যেসব কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি আছে সেগুলোতে পুরুষের চেয়ে নারী ভোটার বেশি ছিল। এছাড়া কেন্দ্রে কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য।

সকাল সাড়ে ৮টায় ও পৌনে ৯টার দিকে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার পূর্বভাগ সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাজী মোহাম্মদ রাজা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে ভোটারের দেখা মেলেনি। তবে বেলা বাড়ার পর হাতেগোনা কিছু ভোটার কেন্দ্রে গিয়ে প্রথমবারের মতো ইভিএম মেশিনে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।

সকাল সোয়া ৮টায় ভোট দেন এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব। তিনি তার নিজ কেন্দ্র দক্ষিণ সুরমার কামালবাজারের ধরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দেন। এসময় সঙ্গে ছিলেন তার সহধর্মিনী ও দলীয় নেতাকর্মীরা। এছাড়াও অন্যান্য প্রার্থীরা নিজ নিজ কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন।

সিলেট-৩ আসনে উপ-নির্বাচনে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী যুক্তরাজ্য প্রবাসী হাবিবুর রহমান হাবিব (নৌকা), জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান আতিক (লাঙ্গল), বিএনপির বহিষ্কৃত প্রার্থী শফি আহমদ চৌধুরী (মোটরগাড়ি) এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী যুক্তরাজ্য প্রবাসী জুনায়েদ মোহাম্মদ মিয়া (ডাব)।


সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলার ভোটকেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে পুলিশ, আনসার ও গ্রাম পুলিশের ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। আর গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে নিয়োজিত রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৮ থেকে ১৯ জন করে সদস্য। এছাড়া পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে গঠিত ২১টি মোবাইল ফোর্স, ১২টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, র্যাবের ১২টি টহল টিম ও ১২ প্লাটুন বিজিবি নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা মোকাবিলায় বিজিবির সঙ্গে ২১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের মনিটরিং করছেন তিনজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক।

সিলেটের দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-৩ আসনটিতে মোট ভোটার তিন লাখ ৫২ হাজার ও ভোটকেন্দ্র ১৪৯টি।

গত ১১ মার্চ করোনায় সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে আসনটি শূন্য হয়। তফসিল অনুযায়ী গত ২৮ জুলাই এই আসনের উপ-নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় এর দুইদিন আগে ভোটগ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করেন আদালত। পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশন ৪ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণের দিন নির্ধারণ করে।
রাত পোহালেই সিলেট-৩ আসনের নির্বাচন, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন

রাত পোহালেই সিলেট-৩ আসনের নির্বাচন, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন



রাত পোহালেই অর্থাৎ ৪ সেপ্টেম্বর শনিবার সিলেট-৩ শূন্য আসনের উপনির্বাচন। নানা বাধা-বিপত্তির পর অবশেষে এ আসনের উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে ভোটগ্রহণ।

ভোটগ্রহণ হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএমে)।

করোনাকালীন এ নির্বাচনে দু’বার তারিখ দিয়েও পেছাতে হয়েছে ইসিকে। প্রথমবার জাতীয় পার্টির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে, দ্বিতীয়বার উচ্চ আদালতের নির্দেশে। এছাড়া এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অন্তত ছয় ভোট কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। মারা গেছেন প্রথমবার দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইসরাইল হোসেন। যিনি জীবনে প্রথম কোনো নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হতে পেরেছিলেন। পরবর্তীতে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিলেটের জেলা প্রশাসককে।

উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ ওঠে যাওয়ার পর নতুর তারিখ দিয়ে ভোটের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ইসি। কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছানো হয়েছে ভোটের সামগ্রী। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও নিয়োজিত আছেন ভোটের এলাকায়।

ইসির যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, ৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদের সিলেট-৩ শূন্য আসনের নির্বাচন। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচনী জিনিসপত্র ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের কাছে বিতরণ করা হয়েছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, সাধারণ কেন্দ্রে ১৮ জন ও ঝূঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে মোতায়েন রয়েছে ১৯ জনের ফোর্স। রয়েছে র‌্যাব, বিজিবি, মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স।

নির্বাচনী অপরাধ আমলে নিয়ে বিচার কাজ সম্পন্ন করতে দায়িত্ব পালন করছেন তিনজন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট, নির্বাচনী তদন্ত কমিটি ও ২১টি ভ্রাম্যমাণ আদালত।


ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখা জানিয়েছে, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান, জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের জুনায়েদ মোহাম্মদ মিয়া ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শফি আহমেদ চৌধুরী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সিলেট-৩ আসনটি ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ ও দক্ষিণ সুরমা নিয়ে গঠিত। এতে ৩ লাখ ৫০ হাজারের মতো ভোটার রয়েছে।

এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী গত ১১ মার্চ মারা যান। পরবর্তীতে জাতীয় সংসদ সচিবালয় আসনটি শূন্য ঘোষণা করলে ১৪ জুলাই ভোটের তারিখ দেয় ইসি। ওইদিন জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকী হওয়ায় দলটি ভোট পেছানোর দাবি করে। সেই দাবি আমলে নিয়ে পরবর্তীতে ২৮ জুলাই ভোটের পুনর্তারিখ দেয় কমিশন। কিন্তু একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত ৫ আগস্ট পর্যন্ত ভোটের ওপর স্থগিতাদেশ দেন এবং ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভোট করার নির্দেশনাও দেন। সেই নির্দেশনার আলোকে কমিশন ২৩ আগস্ট ভোটের নতুন তারিখ দেন আগামী ৪ সেপ্টেম্বর।
নৌকার ধাক্কায় ভেঙ্গে পড়লো বিশাল ব্রিজ

নৌকার ধাক্কায় ভেঙ্গে পড়লো বিশাল ব্রিজ



ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার বনগজ-কৃষ্ণনগর সংযোগ খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছিল একটি সেতু। কিন্তু দুই পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি দিয়ে পার হতে পারেনি কোনো যানবাহন। সেতু ব্যবহার করে যাতায়াত করেননি কোনো মানুষও। শুক্রবার সকালে ইটবাহী একটি নৌকা ধাক্কা দিলে ভেঙে যায় দুই যুগ ধরে কাজে না লাগা সেতুটি।

সকাল সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের বনগজ ও চরনারায়নপুর গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে খালের ওপরে থাকা সেতুটি ভেঙে যায়। এতে নৌকায় থাকা দুই শ্রমিক সামান্য আহত হয়েছেন। তারা হলেন নৌকার মালিক আব্দুল খালেক এবং হাবিব। তাদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের রাজবাড়িয়া গ্রামে।

জানা গেছে, বনগজ-কৃষ্ণনগর সংযোগ খালের ওপর প্রায় দুই যুগ আগে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। তবে সেতুর দুই পাশে সড়ক না থাকায় সেতুটি দিয়ে যানবাহন এবং মানুষ চলাচল করতে পারত না। এর ফলে বনগজ ও কৃষ্ণনগর গ্রামের মানুষ বর্ষার সময় নৌকায় এবং অন্য সময়ে পানি ভেঙে খালটি পার হন। এতে তাদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।

শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর তিনটি পিলারের উপরের অংশ ভেঙে কাত হয়ে নৌকার ওপর পড়ে আছে। কিছু অংশ ইটবোঝাই নৌকার ওপর পড়ে আছে।

নৌকার শ্রমিক সফর আলী বলেন, সকাল ৭টার দিকে জেলার শাহবাজপুর ডিজিটাল ব্রিকফিল্ড থেকে ৭ হাজার ইট নিয়ে একটি নৌকা আখাউড়ার ঘোলখার এলাকায় যাচ্ছিল। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সেতুটির কাছে পৌঁছার পর প্রবল স্রোতের কারণে মাঝি নৌকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এতে নৌকাটি পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে সেতুটির একটি অংশ নৌকার ওপর ভেঙে পড়ে।


বনগজ গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমি নৌকা নিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি নৌকাটি ঘুরতে ঘুরতে সেতুর পিলারে ধাক্কা দেয়। এতে সেতুটি ভেঙে পড়ে যায়।

নৌকার মালিক সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের রাজবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল খালেক জানান, নৌকায় ১১জন লোক ছিল। তাদের মধ্যে দুইজন আহত হয়েছেন।

সূত্র : ঢাকা পোস্ট