الأحد، 27 يونيو 2021

গোলাপগঞ্জে মসজিদ পরিচালনা কমিটি নিয়ে জটিলতা, মুসল্লীদের সংবাদ সম্মেলন



গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধিঃ গোলাপগঞ্জ চৌমূহনী জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটি নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা বিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়েছে। রবিবার বিকাল সাড়ে ৫ টায় গোলাপগঞ্জ পৌরশহরের একটি হলরোমে মুসল্লী সমাজের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবী ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি হাজী ফখরুল ইসলাম। মুসল্লী সমাজ আয়োজিত সংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে তিনি বলেন প্রায় ৭০ বছর ধরে গোলাপগঞ্জ চৌমূহনী জামে মসজিদ স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও দানশীল ব্যক্তিদের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মসজিদটি দীর্ঘ সময়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের মাধ্যমে আজ বহুতল বিল্ডিং-এ পরিণত হয়েছে।

দেওবন্দি উলামায়ে কেরামদের নিয়ম নীতির আলোকে এতোদিন মসজিদটি পরিচালিত হলে কোন ধরণের সমস্যা বা জটিলতার সৃষ্টি হয়নি। গত ১০ এপ্রিল ২০১৯ইং তারিখে গোলাপগঞ্জ পৌর এলাকার টিকরবাড়ী গ্রামের মৃত মসাহিদ আলীর পুত্র জামাল আহমদ এর আবেদনের প্রেক্ষিতে ১১ফেব্রুয়ারি ২০২০ইং তারিখে মসজিদটি বাংলাদেশ ওয়াকফ্ প্রশাসন তাদের আওতাভুক্ত করে। একই সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সভাপতি ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমিকে সচিব করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ওয়াকফ্ প্রশাসনের পক্ষ থেকে গঠন করে দেয়া হয়।

বিষয়টি সম্পর্কে গোলাপগঞ্জ চৌমূহনী জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটি বা মুসল্লী সমাজ অবগত নন। প্রায় ৭০ বছর ধরে ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও ব্যবসায়ী সমাজের প্রতিনিধি কর্তৃক গঠিত কমিটি মসজিদটি সুন্দর ভাবে পরিচালনা করাকালীন সময়ে হঠাৎ ব্যক্তি বিশেষ কর্তৃক আবেদনের প্রেক্ষিতে ওয়াকফ্ প্রশাসন তাদের ইচ্ছা মাফিক লোক দিয়ে কমিটি গঠন করায় মুসল্লীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

এ ব্যপারে ক্ষুব্দ মুসল্লী সমাজ ও ব্যবসায়ীরা ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিবাদ স্বরূপ পৌর মিলনায়তনে সভা করে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করেন। তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব প্রদান করে মুসল্লীদের মতামতের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করলেও তিনি কোন কাজ করেননি বলে লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়।

পরবর্তীতে ঐ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অন্যত্র বদলী হয়ে গেলে বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী, গোলাপগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আমিনুল ইসলাম রাবেল, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি অনুপমা দাস, গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রফিক আহমদ সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে প্রায় ৩ মাস পূর্বে উপজেলা সম্মেলন কক্ষে এ ব্যাপারে বৈঠক করে মসজিদের সব বিষয়ে তিনি দেখবেন বলে আশ্বস্থ করেন। পরবর্তীতে বর্তমান ইউএনও কোন কিছু না করে অনেকটা নিরবতা পালন করায় জনৈক ব্যক্তি মসজিদের আর্থিক বিষয়াদি সহ সব বিষয়ে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে থাকেন। মুসল্লী সমাজের পক্ষ থেকে বার বার ওয়াকফ্ প্রশাসন কর্তৃক গঠিত কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে মসজিদের দুরবস্থার কথা অবহিত করলেও তিনি এ ব্যাপারে কোন গুরুত্ব না দেয়ায় বর্তমানে মুসল্লী সমাজ খুবই ক্ষিপ্ত বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে মসজিদের নিচ তলায় এসি লাগানো সহ বিভিন্ন মেরামতের কাজের বিষয়েও যথেষ্ট অস্বচ্ছতা রয়েছে বলে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়।

মসজিদের বর্তমান দুরবস্থার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে মুসল্লী সমাজের পক্ষ থেকে দায়ী করা হয়েছে। মুসলমানদের ইবাদতখানা আল্লাহর ঘর মসজিদ অর্থাৎ গোলাপগঞ্জ চৌমূহনী জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে মুসল্লী সমাজের পক্ষ থেকে আবারও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মুসল্লিরা অভিযোগ করে বলেন, ওয়াকফ কমিটির ৩নং সহ সভাপতিকে দিয়ে এককভাবে সাধারণ সম্পাদক, কোষাধক্ষ্য, এমনকি সভাপতির দায়িত্বও পালন করাচ্ছেন।

এছাড়াও মসজিদের মুসল্লি কর্তৃক দান অনুদানের টাকা কোন ব্যাংক হিসাবে জমা না রেখে হাতে রেখে উপজেলা নির্বাহী অফিসার খরছ করছেন বলে তারা অভিযোগ করেন ।

সংবাদ সম্মেলনে বিশিষ্ট ব্যবসায়ীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, এ. ওয়াহাব প্লাজা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাহেদ সিদ্দিকী, আমরা গোলাপগঞ্জবাসীর সভাপতি সৈয়দ আব্দুল মালেক, গোলাপগঞ্জ নাগরিক ফোরামের সহ-সভাপতি ছাদেক আহমদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আল সামছ টাওয়ারের স্বত্ত্বাধিকারী মাওলানা মুমিন আহমদ শাকিল, গোলাপগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সদস্য মাহবুবুর রহমান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাজী কবির আহমদ, হাজী নুরুর রহমান রুনু, আব্দুল হক সওদাগর, আপ্তাব উদ্দিন সোনা, মোহাম্মদ জোবায়ের, খলিলুর রহমান, সেলিম আহমদ প্রমুখ।


শেয়ার করুন