الخميس، 1 يوليو 2021

লকডাউনে নিরব-নিস্তব্ধ সিলেট

ছবি : ইদ্রিছ আলী


পিচঢালা রাস্তা ধরে যতদূর চোখ যায়, নেই যান আর জনমানুষের রুদ্ধশ্বাস ছুটে চলা। সড়কবাতিগুলো ঠায় দাঁড়িয়ে আছে নি:সঙ্গ, একা। নেই রিকশার টুংটাং আর কান বিদীর্ণ করা গাড়ির হর্নের বিকট শব্দ। বিপণিবিতান আর দোকানপাটে ঝুলছে তালা। প্রায় জনমানবশূন্য গা ছমছমে এক শহর সিলেট।

করোনার ভয়াবহ সংক্রমণ ঠেকাতে ৩ দিনের ‘সীমিত লকডাউন’ শেষে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) ভোর থেকে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো সিলেটেও শুরু হয়েছে ‘কঠোর লকডাউন’।

কঠোর লকডাউনের প্রথম দিনে (বৃহস্পতিবার) প্রায় যান ও জনশূণ্য অবস্থায় ছিলো সিলেটের রাস্তাঘাট। ব্যস্ততম সড়কগুলোও ছিলো ফাঁকা। খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া বাসা-বাড়ি থেকে বের হননি মানুষজন।

দিনমান শহর ঘুরে দেখা যায়, নগরীর প্রবেশদ্বার ও রাস্তার মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। এছাড়া লকডাউন বাস্তবায়নে রাস্তায় টহল দিচ্ছে র‍্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনী।

এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউনের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার সকালে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মধ্যে নগরীর কোর্ট পয়েন্ট, চৌহাট্টা পয়েন্ট, আম্বরখানা, মদিনামার্কেট, শেখঘাট জিতু মিয়ার পয়েন্ট ও পাঠানটুলাসহ বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসায় পুলিশ। রাস্তায় বের হওয়া লোকজন ও যানবাহন আটকে ঘর থেকে বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞাস করেন তারা। সদুত্তর না পেলে যাত্রীদের ফিরিয়ে দেয় পুলিশ। আর যানবাহনের কাগজপত্র না থাকলে হাতে ধরিয়ে দেয়া হয় মামলার কাগজ।

সকাল থেকে নগরীর রাস্তায় রিকশা চলাচল করলেও তা অন্যদিনের তুলনায় ছিলো কম। বাস, সিএনজি অটোরিকশা, লেগুনাসহ সবধরণের গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। অতি জরুরি প্রয়োজনে কেউ প্রাইভেট গাড়ি বা মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় বের হলে পড়তে হয় পুলিশি জেরা ও তল্লাশির মুখে। রিকশা আটকেও যাত্রীদের ঘর থেকে বের হওয়ার কারণ জানতে চাচ্ছে পুলিশ।

এছাড়া নগরীর প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত চন্ডিপুল, হুমায়ূন রশিদ চত্বর, টিলাগড়, বিমানবন্দর সড়ক, কুমারগাঁওয়ে চৌকি বসিয়ে যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচল রোধ করে পুলিশ।

এদিকে, নগরীতে দিনের বেলা নিত্যপণ্য, ফার্মেসি ও জরুরি সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়া সবধরণের দোকানপাট ও শপিংমল বন্ধ ছিলো। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান খোলা থাকলেও ক্রেতাসমাগম খুবই কম।

তবে সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে সিলেট নগরীতে দেখা যায় অন্যরকম এক চিত্র। যে শহরে মধ্যরাত পর্যন্ত থাকে কোলাহল, সেই শহর সন্ধ্যার সঙ্গে সঙ্গে হয়ে পড়ে ভুতুড়ে। যে অল্পসংখ্যক মানুষ জরুরি প্রয়োজনে বাইরে ছিলেন তাদেরকেও ত্রস্ত পায়ে ফিরতে দেখা যায় নিজ নীড়ের দিকে। অনেক্ষণ পর পর দেখা যায় একটা-দুটা রিকশা বা মোটরসাইকেল।


সৌজন্যেঃ সিলেট ভিউ২৪ ডটকম


শেয়ার করুন