الثلاثاء، 28 سبتمبر 2021

গোলাপগঞ্জে এমসি একাডেমির শিক্ষকের বিরুদ্ধে দাড়ি-টুপি নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ



নিজস্ব প্রতিবেদক: সিলেটের গোলাপগঞ্জে ‘এমসি (মোহাম্মদ চৌধুরী) একাডেমি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ’র উজ্জ্বল কুমার দেব নামের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে দাড়ি-টুপি নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ ওঠেছে। এ বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠে। অনেকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ারও দাবি জানান। 

তবে ঘটনাটার পর ওই ছাত্র বিদ্যালয়ে কোন লিখিত অভিযোগ করেননি। এছাড়াও ছাত্রের কোন বক্তব্য বা পরিচয় পাওয়া যায়নি। 

ফেইসবুকের বিভিন্ন পোস্ট থেকে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ১০ম শ্রেণির মানবিক শাখার ৫জনের কাছে মোবাইল পান একজন শিক্ষক। এই ৫ জনের মধ্যে একজনের মুখে দাড়ি ও মাথায় টুপি ছিলো। তখন ওই স্যার এ ছাত্রকে জামাত-শিবির তকমা দিয়ে গালিগালাজ করা শুরু করেন বলে তারা পোস্টে অভিযোগ করে। ওই ছাত্রটি তখন স্যারকে জানায় সে তবলীগে ছিলো তাই বাড়িতে মোবাইল রেখে আসার সুযোগ পায়নি। প্রমাণস্বরূপ তার সঙ্গে থাকা কিছু কাপড়ও সে স্যারকে দেখায়। কিন্তু ওই স্যার এতে কর্ণপাত না করে তাকে চরম অপমান করেন ও গালিগালাজ করেন। 

সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা ফেইসবুকে আরো অভিযোগ করে লেখেন, ওই স্যারের মূল উদ্দেশ্য ছিল দাড়ি-টুপির বিরুদ্ধে কথা বলা। আর শিবির নাম নেয়া ছিলো একটি কৌশলমাত্র। তিনি ৫জনের কাছে মোবাইল পেয়েছেন, তাই ৫ জনকেই সমানভাবে শাস্তি দিবেন। তা না করে শুধু দাড়ি-টুপিওয়ালা ছাত্রকেই কেন টার্গেট করলেন? এর আগেও ওই স্যার এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ ছাত্রদের। 

এদিকে বিষয়টি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরে আসা মাত্র সোমবার রাতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুজিত কুমার তালুকদার প্রতিষ্ঠানের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে একটি ক্ষুদেবার্তা প্রদান করেন। এতে তিনি লেখেন, ‘স্নেহের ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ, আমি প্রাতিষ্ঠানিক কাজে ঢাকায় ছিলাম। আজ দুপুরে বাসায় এসেছি। কিছুক্ষণ আগে এমসি একাডেমির একটি বিষয় আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এমসি একাডেমি একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। আগামীকাল আমি প্রতিষ্ঠানে এসে তোমাদের সাথে নিয়ে আমরা দেখবো। এখন পরীক্ষার্থীসহ কলেজ সেকশনের আমার যে সকল ছাত্র ফেইসবুকে এ কমেন্ট করছো তা প্রতিষ্ঠানের কথা বিবেচনা করে ডিলিট করে দাও। এটা তোমাদের প্রতি আমার বিশেষভাব অনুরোধ। তা না হলে মানুষের মনে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি হবে। বিষয়টি আমরা সবাই বসে গুরুত্ব দিয়ে দেখবো। আশা করি তোমরা আমার কথাটি দায়িত্ব নিয়ে বিবেচনা করবে। সবাই ভালো থেকো।’

এমসি (মোহাম্মদ চৌধুরী) একাডেমি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ’র ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুজিত কুমার তালুকদার সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বসবে। 

এ ব্যাপারে শিক্ষক উজ্জ্বল কুমার দেবের বক্তব্য নেওয়ার জন্য তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এজন্য তার কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।  

এদিকে এই খবরটি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে এই ঘটনাটাকে কেন্দ্র করে যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এজন্য গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ তৎপরতা শুরু করে। 

এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ হারুনূর রশীদ চৌধুরী জানান, বিষয়টি সমাধানে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বৈঠকে বসেছে। আর যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে এজন্য পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

শেয়ার করুন