Tuesday 29 June 2021

সালিসে কিশোরীকে বিয়ে, আলোচিত সেই চেয়ারম্যান বরখাস্ত


সালিস বৈঠকে কিশোরীকে বিয়ে করা আলোচিত সেই চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। সোমবার (২৮ জুন) রাতে স্থানীয় সরকার বিভাগের একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। 

জানা গেছে, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ৬ নম্বর কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদার সালিশ করতে গিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোরীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪ (৪) (ঘ) ধারার অপরাধ সংঘটিত করায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এছাড়া কেন তাকে চূড়ান্তভাবে অপসারণ করা হবে না তা পত্র প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে জবাব পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে। 

বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বিষয়টি শুনেছি। লিখত অফিস আদেশ এখনও হাতে পাইনি।

জানা গেছে, কনকদিয়া ইউনিয়নের নারায়নপাশা গ্রামের বাসিন্দা মো. রমজান (২৫) একই ইউনিয়নের চুনারপুল এলাকার অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি মেয়েটির বাবা। তিনি বিষয়টি কনকদিয়া ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদারকে জানান। পরে চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার আনুষ্ঠানিকভাবে ওই যুবক ও কিশোরীর বিয়ে দেওয়ার কথা বলে কনকদিয়া ইউপি কার্যালয়ে সালিস বৈঠকের আয়োজন করেন। সে অনুযায়ী গত শুক্রবার সকাল ৯টায় দুই পরিবারের সদস্যরা ইউপি কার্যালয়ে যান। 

সেখানে মেয়েটিকে দেখে পছন্দ হয়ে যায় চেয়ারম্যানের। তিনি মেয়েটিকে বিয়ে করার আগ্রহ দেখান। মেয়ের বাবা এতে রাজি হলে বিকেলেই কাজি ডেকে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে মেয়েটিকে বিয়ে করেন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। বিয়ের কাবিন নামায় মেয়েটির জন্মতারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ২০০৩ সালের ১১ এপ্রিল। কিন্তু বিদ্যালয়ে দেওয়া জন্মনিবন্ধন ও পিএসসি পাসের সনদ অনুযায়ী মেয়েটির জন্মতারিখ ২০০৭ সালের ১১ এপ্রিল। বিয়ের পর মেয়েটিকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান চেয়ারম্যান। তবে বাড়িতে তার প্রথম স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন না।

বিয়ের পর দিন শনিবার (২৬ জুন) কিশোরী নসিমন বেগম (১৪) চেয়ারম্যানকে তালাক দেন। এরপর সোমবার (২৮ জুন) সকালে প্রেমিক রমজান হাওলাদারের বড় ভাই হাফেজ মো. আল ইমরান বাদী হয়ে হাওলাদারসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আমলি আদালতে মামলা করেন।

ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি গত ২১ জুন অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার স্ত্রী আছে। সেই সংসারে তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ছেলেকেও বিয়ে দিয়েছেন।


শেয়ার করুন