Tuesday, 30 September 2025

গোলাপগঞ্জে সাংবাদিক আব্দুল আহাদ এর উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত

গোলাপগঞ্জে সাংবাদিক আব্দুল আহাদ এর উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত



সিলেটের গোলাপগঞ্জে সাংবাদিক আব্দুল আহাদ এর উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে গোলাপগঞ্জ সদর ইউনিয়নবাসীর উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২৯ সেপ্টেম্বর (সোমবার) সন্ধ্যায় চৌঘরি বাজারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় যৌথভাবে পরিচালনা করেন সুলতানা মাহমুদ ও শিপু আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন গোলাপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুলতান আহমদ মজনু এবং কোরআন তেলাওয়াত করেন মাওলানা মাহতাব উদ্দিন।

প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন মফিজুর রহমান স্বপন, অনলাইন প্রেস ক্লাবের সভাপতি এম. আব্দুল জলিল, সাংবাদিক কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি দেলওয়ার হোসাইন মাহমুদ, গোলাপগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বিলাল আহমদ, মওদুদ চৌধুরী সুমন, শাকিল আহমদ চৌধুরী, কাশেম ছামী, সাহেদ আহমদ, আব্দুল মান্নান, মামুনুর রশীদ, আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ।

বক্তারা সাংবাদিক আব্দুল আহাদের উপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা। তারা হামলাকারী কাওসারকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।

প্রতিবাদ সভায় আরোও উপস্থিত ছিলেন গোলাপগঞ্জের কর্মরত সাংবাদিকরা—গোলাপগঞ্জ সাংবাদিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. বদরুল আলম, শাহ আলম, জেলয়ার হোসেন স্বপন, আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, ইমন আহমদ, সৈয়দ রাসেল আহমদ, শামিল হোসেন, হুমায়ুন কবির তামিম, ডিএইচ মান্না, কে এম আব্দুল্লাহ, রিমন আহমদ, ফাহিম আহমদ, সাকেল উদ্দিন, অলিউর রহমান তামিমসহ আরও অনেকে।

সভায় ঘোষণা দেওয়া হয়, আগামী মঙ্গলবার গোলাপগঞ্জ চৌমুহনীতে সাংবাদিক আব্দুল আহাদের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে। এ মানববন্ধনে গোলাপগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষকে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানানো হয়।

শেষে সমাপনী বক্তব্যে সুলতান আহমদ মজনু এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সন্ত্রাসী কাওসারকে অবিলম্বে গ্রেফতারের জোর দাবি জানান। সভা শেষে উপস্থিত এলাকাবাসী হামলাকারীর গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।

Monday, 29 September 2025

সাংবাদিক আব্দুল আহাদের ওপর হামলার ঘটনায় গোলাপগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিক ও বণিক সমিতির নিন্দা

সাংবাদিক আব্দুল আহাদের ওপর হামলার ঘটনায় গোলাপগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিক ও বণিক সমিতির নিন্দা


সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আব্দুল আহাদের ওপর সন্ত্রাসী  হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন গোলাপগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিক সমাজের নেতৃবৃন্দ ও গোলাপগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির নেতৃবৃন্দ।

গতকাল রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) গোলাপগঞ্জ বাজার বণিক সমিতি, গোলাপগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন গোলাপগঞ্জ প্রেসক্লাব, গোলাপগঞ্জ সাংবাদিক কল্যাণ সমিতি ও গোলাপগঞ্জ অনলাইন প্রেসক্লাবের এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। রাত সাড়ে ৮টায়  বণিক সমিতি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তারা বলেন, গত ২৭ সেপ্টেম্বর (শনিবার) গোলাপগঞ্জ থানা-সহ সিলেটের বিভিন্ন থানার মামলার আসামি ও কথিত সাংবাদিক সেলিম হাসান কাওছার কিছু অজ্ঞাত ব্যক্তিকে সাথে নিয়ে পুলিশ  পরিচয়ে মব সৃষ্টি করে গোলাপগঞ্জের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও ব্যবসায়ী নেতা  সর্বজন  সমাদৃত আব্দুল আহাদের ওপর হামলা ও তাকে হেনস্তা করে। এছাড়া পরিকল্পিতভাবে ঘটনার ভিডিও ধারন করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় গোলাপগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিক সমাজ ও ব্যবসায়ী সমাজ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা।

বক্তারা বলেন, একজন  প্রবীণ সাংবাদিকের ওপর এ ধরনের আচরণ দেশের সাংবাদিক সমাজ ও গণমাধ্যমের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপের শামিল। আমরা এ ঘটনার ইন্ধনদাতাসহ জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। 


সভায় উপস্থিত ছিলেন গোলাপগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বিলাল আহমদ, কোষাধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, সহ-সাধারন সম্পাদক ছালেক উদ্দিন, সদস্য সেলিম আহমদ, মাছুম আহমদ, শহীদুর রহমান সুহেদ, কাওছার আহমদ, সোহেল আহমদ, নাজিম আহমদ, নাছির উদ্দিন, শাকিল আহমদ। 

কর্মরত  সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এম আব্দুল জলিল, মাহফুজ আহমদ চৌধুরী, সৈয়দ জেলওয়ার হোসেন স্বপন, ইমরান আহমদ, মোহাম্মদ বদরুল আলম, জাহিদ উদ্দিন, সৈয়দ রাসেল, সাইদুর রহমান, সাকেল উদ্দিন, আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, ইমন আহমদ, তামিম আহমদ, ফাহাদ হোসাইন, মোঃ শাহ আলম, ফাহিম আহমদ, তামিম আহমদ,দেলওয়ার হোসেন মান্না,আব্দুল আজিজ বাবর, সামিল হোসেন, দেলওয়ার হোসেন মাহমুদ, কে এম আব্দুল্লাহ, সালমান কাদির দিপু প্রমুখ।

Wednesday, 13 August 2025

চন্দরপুর আল-এমদাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে ইংরেজী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

চন্দরপুর আল-এমদাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে ইংরেজী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি



সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার চন্দরপুরে অবস্থিত আল-এমদাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে ইংরেজি বিষয়ে পাঠদানে দক্ষ ও অভিজ্ঞ ১ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আগ্রহী প্রার্থীকে লিখিত ও মৌখিক (ভাইভা) উভয় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা হতে হবে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর। বেতন আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারিত হবে।

যোগ্য প্রার্থীদেরকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, সাম্প্রতিক ছবি এবং মোবাইল নম্বরসহ আবেদনপত্র প্রধান শিক্ষক, আল-এমদাদ উচ্চ বিদ্যালয় চন্দরপুর, ডাক: চন্দরপুর, উপজেলা: গোলাপগঞ্জ, জেলা: সিলেট বরাবর জমা দিতে হবে।


বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, যোগ্য ও অভিজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে শিক্ষার মান উন্নয়নই তাদের প্রধান লক্ষ্য।

বিজ্ঞপ্তি

Sunday, 25 May 2025

ফ্রেন্ডস সার্কেলের পক্ষ থেকে আল-এমদাদ ডিগ্রী কলেজে সিসি ক্যামেরা স্থাপন

ফ্রেন্ডস সার্কেলের পক্ষ থেকে আল-এমদাদ ডিগ্রী কলেজে সিসি ক্যামেরা স্থাপন


গোলাপগঞ্জের চন্দরপুরে আল এমদাদ ডিগ্রি কলেজের এডহক কমিটিতে বিদ্যোৎসাহী সদস্য হিসেবে মনোনীত হন জায়েদুল ইসলাম শিপু। তরুণ এ সমাজকর্মী বিদ্যোৎসাহী সদস্য মনোনীত হওয়ায় এলাকার সমাজসেবী ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গসহ তার সহপাঠী ও বন্ধুবান্ধবগণ ব্যাপক খুশি হন। এ উপলক্ষে তাকে সংবর্ধনা স্মারক স্বরূপ পুরো কলেজ ক্যাম্পাসকে সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসার উদ্যোগ গ্রহণ করেন তার সহপাঠী ও বন্ধুবান্ধবগণ। তাদের এ উদ্যোগে ইতোমধ্যে পুরো কলেজ ক্যাম্পাস সিসি ক্যামেরার আওতায় চলে এসেছে। এতে কলেজ ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা আরোও জোরদার হওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ।

শনিবার (২৪ মে) দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, সহকারী অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, মানিক মিয়া, আবুল হোসেন,  মাসুক মিয়া-সহ অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ। এসময় আরোও উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য সালমান কাদের দিপু, জায়েদুল ইসলাম শিপুর সহপাঠী তারেক আহমদ ও জাফর আহমদ মান্না।

কলেজ ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করায় জায়েদুল ইসলাম শিপু ও তার সহপাঠী বন্ধুবান্ধবদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ। তিনি তাদের ভূয়সী প্রশংসা করেন, এবং আগামীতেও তারা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় সর্বদা এগিয়ে আসার প্রত্যয় ব্যক্ত করে দেশ ও প্রবাসে অবস্থানরত সকলের মঙ্গলকামনা করেন। এসময় উপস্থিত অন্যান্য শিক্ষকগণও তাদের প্রশংসা করে সকলের সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল কামনা করেন।

এসময় জায়েদুল ইসলাম শিপুও তার সহপাঠী, বন্ধুবান্ধবদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

Sunday, 23 March 2025

সিলেটে ধানক্ষেত থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার

সিলেটে ধানক্ষেত থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার


সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলায় ধান ক্ষেত থেকে মাখন মিয়া  (৩৫) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে ওসমানীনগর থানা পুলিশ।

২২ মার্চ (শনিবার) সকাল সাড়ে ১২ টায় উপজেলার আইলাকান্দি গ্রামের বাড়ীর পাশে ধানক্ষেতে শরীরে জখম ও রক্তমাখা অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

মাখন মিয়ার বর্তমান ঠিকানা তাজপুর ইউনিয়নের আইলাকান্দি গ্রামে হলেও স্থায়ী ঠিকানা একই উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের কুরুয়া গ্রামের মৃত মফিজ মিয়ার ছেলে বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ শে মার্চ  রাত ১১ টার সময় প্রয়োজনীয় কাজে মাখন মিয়া বাড়ী হতে বেড় হন। রাতভর বাড়ীতে না আসায় তার  স্ত্রী রেনু বেগম আত্মীয়স্বজনকে বিষয়টি অবগত করেন। সকালবেলা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে দুপুরে বাড়িরপাশে ধানক্ষেতে জুতা এবং রক্ত দেখে মামাতো ভাই ফটিক মিয়ার সন্দেহ হলে পাশেই ধানক্ষেতে  মাখন মিয়াকে খুজেন তিনি। একপর্যায়ে তিনি ধান ক্ষেতে রাতের আধারে কে বা কারা হত্যা করে মাখন মিয়ার লাশ পড়ে থাকতে দেখে  দ্রুত  পুলিশে খবর দেন।

খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ওসমানীনগর) সার্কেল মো. আশরাফুজ্জামান, অফিসার্স ইনচার্য (ওসি) মো.মোনায়েম মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। উদ্ধারকৃত লাশটির শরীরের বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়ালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 
গোলাপগঞ্জে ট্রাক চাপায় যুবকের মৃত্যু

গোলাপগঞ্জে ট্রাক চাপায় যুবকের মৃত্যু


সিলেটের গোলাপগঞ্জে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে ট্রাক চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

নিহত যুবকের নাম মামুন আহমদ (২৪)। সে উপজেলার ফুলবাড়ি ইউপির সিংপুর পাঁচামাইল গ্রামের মাহবুবুর রহমান টেফন মিয়ার  ছেলে।

শনিবার ( ২২ মার্চ) বিকেলে উপজেলার হেতিমগঞ্জ চৌমুহনীর অদূরে রফিপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, মামুন আহমদ নিজ বাড়ি থেকে উপজেলার হেতিমগঞ্জ বাজারে মোটরসাইকেলে আসার পথে ফুলবাড়ি ইউনিয়নের রফিপুর এলাকার নয়া মসজিদের পাশে আশা মাত্র বিপরীত দিক থেকে আসা একটি অজ্ঞাত ট্রাক মামুন আহমদকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়।

পরে তাকে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার অবস্থা অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেটের বেসরকারি হাসপাতাল ইবনে সিনায় নিয়ে আসেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মামুন আহমদের মৃত ঘোষণা করেন।

গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান মোল্যা বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘাতক ট্রাক চালককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। 

Saturday, 22 March 2025

রাজনীতিতে ‘হস্তক্ষেপের এখতিয়ার’ সেনাবাহিনীর নেই: নাহিদ ইসলাম

রাজনীতিতে ‘হস্তক্ষেপের এখতিয়ার’ সেনাবাহিনীর নেই: নাহিদ ইসলাম


রাজনীতি নিয়ে কোনো ‘প্রস্তাব বা সিদ্ধান্ত দেওয়ার এখতিয়ার’ সেনাবাহিনী কিংবা রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

শুক্রবার রাতে দলের জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি বলেন, "নির্বাচন ও আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়টি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। সরকার, জনগণ ও বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোরই এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার রয়েছে।

“সেনাবাহিনী বা রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য বা পরিকল্পনা, সিদ্ধান্ত বা প্রস্তাব দেওয়ার এখতিয়ার নেই। এ ধরনের চর্চা যেন বাংলাদেশে না হয়। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিকভাবেই হবে এবং সামনে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াতেই আমরা উত্তরণ করতে চাচ্ছি।"

শুক্রবার রাতে বাংলা মোটর রূপায়ন টাওয়ারে এনসিপির প্রধান কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকে দলটি।

আওয়ামী লীগের 'পরিশীলিত' নেতাদের নিয়ে নতুন করে দলটি গোছানোর জন্য দেশ ও দেশের বাইরে থেকে প্রচেষ্টা চলছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। এ নিয়ে সোচ্চার হয়েছে গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্র নেতাদের এই অংশটি।

সংবাদ সম্মেলনে এনসপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, আজ থেকে সাত মাস আগে ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে দেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করেছিল। আমাদের আশা ছিল বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের চ্যাপ্টার ক্লোজ হয়ে গেছে।

“কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায় থেকে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। বিদেশি শক্তিগুলো অনেক সময় আওয়ামী লীগের পক্ষে সম্মতি উৎপাদনের চেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগ নিয়ে এসব দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জাতীয় নাগরিক পার্টি শক্ত অবস্থান ব্যক্ত করছে।”

লিখিত বক্তব্যে নাহিদ বলেন, গণঅভ্যুত্থানের সাত মাস অতিবাহিত হলেও গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের খুনিদের বিচারের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি।

"আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। আমরা তার বক্তব্যের নিন্দা জানাই। আওয়ামী লীগের পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা হত্যাকাণ্ড, আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড, গুম-ক্রসফায়ার, ভোট ডাকাতিসহ জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রশ্নে কার্যকর অগ্রগতি দৃশ্যমান হওয়ার আগে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল পদ থেকে এ ধরনের বক্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত।"


তিনি বলেন, "এনসিপি মনে করে বিচারিক কার্যক্রমের পরিণতি দৃশ্যমান হতে হবে। কৃত অপরাধের বিচার, দায় স্বীকার, অনুশোচনা, পাপমোচন ছাড়া আওয়ামী লীগের দল হিসেবে ক্রিয়াশীল থাকার পক্ষে যেকোনো ধরনের তৎপরতা ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনের শামিল।

“এনসিপি জুলাই গণহত্যাসহ বিগত ফ্যাসিবাদী রেজিমে সংঘটিত অপরাপর গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের নিশ্চয়তা চায়। বিচার চলাকালীন আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে এবং এ মাফিয়াগোষ্ঠীর রাজনীতিতে ফেরার যেকোনো প্রচেষ্টাকে এনসিপি প্রতিহত করবে।”

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি রাজনৈতিক দল কেন নিষিদ্ধ থাকবে, সেই প্রশ্নের উত্তরে নাহিদ বলেন, "আওয়ামী লীগ কোনো গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক দল নয়; বরং এটি একটি ফ্যাসিবাদী দল। নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পরাজয় ঘটেনি।

“দল হিসাবে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী রেজিম বাংলাদেশ থেকে উৎখাত হয়েছে। ফলে আওয়ামী লীগ এ মুহূর্তে গণতান্ত্রিক ফ্রেমওয়ার্কের বাইরে অবস্থান করছে।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নাহিদ বলেন, “ বিচার অনিষ্পন্ন রেখে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়ার যেকোনো ধরনের আলোচনা ও প্রস্তাব এনসিপি দৃঢ়তার সাথে প্রত্যাখ্যান করে। আওয়ামী মতাদর্শ, দল ও মার্কার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণ ৩৬ জুলাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে।

“ফলে দল ও মতাদর্শ হিসাবে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার হারিয়েছে। গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিচার চলাকালে আওয়ামী লীগ ও ফ্যাসিবাদের সব সহযোগী ব্যক্তি ও সংগঠনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।" 

ক্যান্টনমেন্টে কী ঘটেছিল?

এনপিপির সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, "গত ৫ অগাস্টের পর সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের বিভিন্ন সময় দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে। কিন্তু ১১ মার্চের সাক্ষাতের প্রেক্ষাপট ভিন্ন ছিল। আমাদেরকে সেখানে আহ্বান জানান হয়েছিল। অপর প্রান্তে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিলেন।”

সেনা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যে আলাপ হয়েছে, তা ফেইসবুকেই স্পষ্ট করা হয়েছে উল্লেখ করে হাসনাত বলেন, "এটা রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা বলে আমরা মনে করছি। রাজনীতির ঘটনা প্রবাহ রাজনীতিবিদদের হাতে থাকা উচিত।

“কিছু দিন আগে সেনাপ্রধানের একটা বক্তব্য আপনার লক্ষ্য করেছেন। রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে এটাকে অশোভন হিসেবে ধরা হয়েছে। সেখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানকে যেভাবে এড্রেস করা হয়েছে, আওয়ামী লীগসহ ইনক্লুসিভ নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে।”

নিরাপত্তার ঝুঁকি অনুভব করছেন কিনা, এমন প্রশ্নে হাসনাত বলেন, "ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যতক্ষণ ঐক্যবদ্ধ, ততক্ষণ নিরাপত্তার কোনো ঝুঁকি অনুভব করছি না।

“আওয়ামী লীগ যে একটা গণহত্যা চালাইছে, সে এটাই স্বীকার করে নাই। তার মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই। সেজন্য আমরা বলছি, আগে তার বিচার নিশ্চিত করতে হবে, দল হিসেবে বিচার নিশ্চিত করতে হবে, অপরাধ স্বীকার করতে হবে, তারপর অন্য কোনো আলোচনা হইলে হইতে পারে। এর আগে আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা অসম্ভব, ইম্পসিবল।"

একাত্তর প্রসঙ্গ

এনসিপি ২০২৪ সালের পাশাপাশি ১৯৭১ সালের গণহত্যার বিচার নিয়ে কী ভাবছে- এমন প্রশ্নে নাহিদ বলেন, "আমরা জুলাই গণহত্যার বিচার নিয়ে অনেক বেশি কনসার্ন। কারণ একাত্তরের গণহত্যার বিচার নিয়ে এখনও অনেক প্রশ্ন আসছে। সেটা আমাদের পুরাতন প্রজন্মের দায়।

“আমরা একাত্তরের পরে একাত্তরে সংগঠিত গণহত্যার বিচার নিষ্পন্ন করতে পারি নাই। রাজনৈতিক প্রশ্নগুলোর সমাধান করতে পারিনি। এরকম পরিস্থিতির যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সেজন্য আমরা আওয়ামী লীগের বিচার নিয়ে খুবই কঠোর অবস্থানে। এবং এই বিচারটা আমরা নিষ্পন্ন দেখতে চাই। ৭১ থেকে শুরু করে বাংলাদেশে যত গণহত্যা হয়েছে, সব বিচারই আমরা চাই। তবে রাজনৈতিকভাবে এ মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি হচ্ছে আওয়ামী লীগ।"

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটিকে নিষিদ্ধ করার জন্য বিভিন্ন সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়।

গত অক্টোবরে আওয়ামী লীগের ওপর ‘নিষেধাজ্ঞা চেয়ে’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তখনকার সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ রিট আবেদন করেছেন বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর আসে।

পরে এ বিষয়ে একই বক্তব্য আলাদাভাবে ফেইসবুকে পোস্ট করে তারা বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা আদেশ চেয়ে রিট আবেদন করা হয়নি। তারা দুটো রিট আবেদন করেছেন আওয়ামী লীগের বিগত তিনটি নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণার আর্জি জানিয়ে। সেখানে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়নি, মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দলটিকে ‘রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখার’ কথা বলা হয়েছে।

এর মধ্যে সবশেষ গত বৃহস্পতিবার রাতে হাসনাতের দেওয়া ফেইসবুক পোস্ট ঘিরে নতুন করে আলোচনায় আসে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ‘দাবি’।

ফেইসবুক পোস্টে হাসনাত অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে সেনা প্রশাসন তাদের ‘চাপ দিচ্ছে’।

তার এ দাবির বিষয়ে অবশ্য সেনা সদর কিংবা আইএসপিআরের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

হাসনাতের পোস্টের পর শুক্রবার জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এদিন এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, “আওয়ামী লীগ পুরনো দল, এখন সেই দলের যারা অপরাধী, অপরাধের বিচার হলে তারপরে তারা জনগণের কাছে গিয়ে, জনগণ যদি তাদের রাজনীতি করার সুযোগ দেয় সেখানে তো আমাদের কিছু বলার নেই।”