الجمعة، 30 أبريل 2021

গোলাপগঞ্জে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে কর্মহীন মানুষকে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার

গোলাপগঞ্জে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে কর্মহীন মানুষকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার



বাংলাদেশে বিশ্ব মহামারি করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে গৃহবন্দী হওয়া গোলাপগঞ্জের কর্মহীন মানুষের 
মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে দেওয়া নগদ অর্থ বিতরণ প্রদান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) বেলা ২টায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা অডিটোরিয়ামে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ গোলাম কবিরের সভাপতিত্বে ও উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা জামাল মিয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী, পৌরসভার মেয়র আমিনুল ইসলাম রাবেল, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দ মিছবাহ উদ্দিন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মনসুর আহমদ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজিরা বেগম শিলা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনুপমা দাস, উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা অভিজিৎ কুমার পাল, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আব্দুল আহাদ, সমাজসেবা কর্মকর্তা নুরুল হক, দৈনিক সিলেট ডাক পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার ইউনুছ চৌধুরী প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে ৫০ জন কর্মহীন মানুষের মধ্যে ১ হাজার টাকা করে মোট ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়। পরে জেলা প্রশাসক উপজেলা কমপ্লেক্সে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদ ও উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ভূমিহীনদের জন্য নির্মাণাধীন আশ্রায়ন প্রকল্পের ঘর পরিদর্শন করেন।
গোলাপগঞ্জে আনারস বাগান পরিদর্শনে সিলেটের ডিসি এম কাজী এমদাদুল ইসলাম

গোলাপগঞ্জে আনারস বাগান পরিদর্শনে সিলেটের ডিসি এম কাজী এমদাদুল ইসলাম



গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিণে মরহুম চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন চাঁন মিয়া আনারস বাগন পরিদর্শন করলেন সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলায় প্রথম বারের মতো বানিজ্যিকভাবে সফল এই আনারস বাগন পরিদর্শনে আসেন তিনি।

এসময় উপস্থিত ছিলেন সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম সহধর্মিণী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ গোলাম কবির, আনারস বাগানের উদ্যোক্তা কাওছার রাজা রতন সহ তার পরিবারের সদস্যগণ।

আনারস বাগন পরিদর্শন শেষে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, সিলেটের প্রতিটি উপজেলায় এরকম পরিত্যক্ত ভূমি কৃষির আওতায় আনা হলে দেশের খাদ্য ঘাটতি নিরসন করা যাবে।

الأحد، 18 أبريل 2021

আতাউর রহমান আফতাব'র কবিতাঃ করোনা ভাইরাস

আতাউর রহমান আফতাব'র কবিতাঃ করোনা ভাইরাস



করোনা ভাইরাস
আতাউর রহমান আফতাব

বছর ঘুরে এলো রমজান 
বেড়ে গেলো করোনা,
বৃষ্টি এলো বর্ষা এলো
সৃষ্টি হলেো ঝর্ণা। 

কাজের অভাব,লকডাউন,পাতে পড়ে আলু আর নুন,কাঁচা মরিচ ভর্তা,
আলু করুর স্বাদটা যদি 
পেত বড় কর্তা! 

রমজান এলো বছর ঘুরে 
সাথে এলো করোনা,
দ্বিগুণ বেগে প্রবাহিত 
মাধবকুণ্ডুর ঝর্ণা। 

ধার্মিকেরা জিকির করে 
মসজিদে বসে,
মরুভূমির খাজুরগুলি
ভরা মধুর রসে।

الاثنين، 12 أبريل 2021

গীতিকার ফজলুর রহমান ফলু'র নতুন গান 'পুড়া মনে ঘর বান্ধিয়া'

গীতিকার ফজলুর রহমান ফলু'র নতুন গান 'পুড়া মনে ঘর বান্ধিয়া'

পুড়া মনে ঘর বান্ধিয়া

কথাঃ গীতিকার ফজলুর রহমান ফলু।
কণ্ঠ ও ভিডিও চিত্রঃ  অংকন ইয়াসমিন।


الاثنين، 5 أبريل 2021

জাফলংয়ের পথে ১১তম ভ্রমনঃ আতাউর রহমান আফতাব

জাফলংয়ের পথে ১১তম ভ্রমনঃ আতাউর রহমান আফতাব


জাফলংয়ের পথে ১১তম ভ্রমন
স্মৃতি কথা কয়-------
আতাউর রহমান আফতাব


১৯৮৬ সনে আমরা প্রথম ভ্রমন করি জাফলং। সাথী ছিলাম তিন জন। আমি, আমার মামাতো ভাই কবির মিয়া ও মুক্তিযোদ্ধা আমান উদ্দিন শেখ। 

দীর্ঘ ১৫ বছর পর কবির মিয়া ইংল্যাণ্ড থেকে দেশে এসেছেন। তার ইচ্ছে জাফলং ভ্রমন করবেন। ইতিপূর্বে আমি কোথাও ভ্রমন করতে যাইনি দর্শনীয় স্থানে। আমি তখন আছির গঞ্জ হাইস্কুলের শিক্ষক। 

ভোরে ঘুম থেকে উঠে আমরা ৩ জন লাইন বাসে চড়ে জাফলংয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে গেলাম। তখন দুপুর ১২ টা বাজেঁ। 

চোঁখ জুড়ানে দৃশ্য, পিয়াইন নদীর শীতল জলে দর্শনার্থীরা জলকেলী করছে। তখন চা-নাস্তার একটা ভালো রেষ্টুরেন্ট ও ছিল না। মেঘালয় থেকে নিসৃত ঝর্ণাধারা থেকে পিয়াইন নদী সৃষ্টি হয়েছে। হাত ক্যামেরা দিয়ে মানুষ ছবি তুলছে। তবে, প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে সেখানে দৈনন্দিন হাজার হাজার মানুষ,শত শত যানবাহন নিয়ে যায়, আসে। 


পরবতী' সময়ে বহুবার জাফলং ভ্রমন করি আমি একাকী ও দলগতভাবে। সেখানে আমার বোনের বাড়ি ছিল। ১৯৮৮ বা ১৯৮৯ সালের দিকে তারা সেখানে একটি বাড়ি কিনেছিল। আত্মীয়তার সম্পর্কে আমাকে সেখানে যেতে হত।

স্মরণীয় ভ্রমন বৃত্তান্তের মধ্যে ১৯৯৮ সনের জাফলং ভ্রমন  ও ২০০৪ সনের ঘটনাবলি চিত্মাকর্ষক ছিল।

১৯৯৮ সনে হাজী আরকান আলী মিয়া বৃটেন থেকে ফিরে জাফলং ভ্রমনের সিদ্ধান্ত নিলেন। আমার সাথে নতুন পরিচয় তিনি ভাল কবিতা লিখেন। হাজী আরকান আলী সাহেব সে বছর আমাকে একটি ডাইরী উপহার করেন। 

আমি আমার মাদ্রাসার ছাত্রদের নিয়ে ২০০৪  সালে শিক্ষা সফরের উদ্দেশ্যে জাফলং ভ্রমন করি। তখন ছিল বর্ষাকাল। আমার প্রিয় ছাত্রদের নিয়ে জাফলংসহ বিভিন্ন স্থানে বহুবার ভ্রমন করি। জাফলংসহ বিভিন্ন স্থানের ভ্রমন কাহিনী নিয়ে আমি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি করেছি। 


২০২০ সনের ডিসেম্বর মাসের জাফলংয়ের উদ্দেশ্যে ১১ তম ভ্রমন আমার স্মরণীয় আরেকটি অধ্যায়। আমি ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে অবসর গ্রহন করলেও আমার ভ্রমন পিপাসু ছাত্ররা আমাকে সেখানে টেনে নিয়ে যায়। ছবিতে ছাত্রদের মধ্যে রয়েছে সালাম, সুহেল, মাসুম,আতিক-সহ আরো অনেকে। আমি আমার ছাত্রদের জন্য দোয়া করি, তাদের ভালোবাসি।

الأحد، 4 أبريل 2021

আইপিএল খেলতে গেলেন মুস্তাফিজ

আইপিএল খেলতে গেলেন মুস্তাফিজ



দুঃস্বপ্নের সফর শেষে নিউজিল্যান্ড থেকে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। দেশে ফিরে বিমানবন্দর থেকে বাকি খেলোয়াড়রা বাড়ি ফিরলেও ব্যতিক্রম ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। বাড়ি ফেরেননি কাটার মাস্টার। সরাসরি আইপিএলে অংশ নিতে ভারতে গেছেন তিনি।

আইপিএলের ১৪তম আসর শুরু হতে যাচ্ছে ৯ এপ্রিল। এবারের আসরে বাংলাদেশ থেকে অংশ নিচ্ছেন দুই ক্রিকেটার। সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমান। সাকিব খেলবেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে, অন্যদিকে মুস্তাফিজ মাঠে নামবেন রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে। রাজস্থান রয়্যালস নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলবে ১২ এপ্রিল। 

ইনজুরির কারণে রাজস্থানের শুরুর ম্যাচগুলোতে খেলতে পারবেন না ইংলিশ পেসার জোফরা আর্চার। আর তাই দলের প্রয়োজনে মুস্তাফিজ রাখতে পারেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। মুম্বাইয়ে পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলবে রাজস্থান রয়্যালস।

السبت، 3 أبريل 2021

মোদী বিরোধী আন্দোলন ও বাংলাদেশের বাস্তবতা

মোদী বিরোধী আন্দোলন ও বাংলাদেশের বাস্তবতা



মোঃ আব্দুল মালিকঃ

বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আগমন ঠেকাতে বাংলাদেশে হেফাজতে ইসলামসহ ইসলামপন্থী কিছু দল ও তাদের সমমনা ব্যক্তি, দল ও প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচী গ্রহণ করে।তাদের অভিযোগ নরেন্দ্র মোদী বাবরী মসজিদ ভেঙ্গে মন্দির নির্মাণ করেছেন, গুজরাটে মুসলিম হত্যার সাথে জড়িত, ফারাক্ষা ও তিস্তা সমস্যার সমাধান না করা, বাংলাদেশে গরু ও পিয়াঁজ রপ্তানী বন্ধ করা ইত্যাদি ইত্যাদি। এর অনেক অভিযোগ অবশ্য সত্য।

এখন প্রশ্ন হলো মোদীকে আমন্ত্রণ জানানো হলো কেন ? এসব
অভিযোগের প্রেক্ষিতে সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে মোদীকে আমন্ত্রণ না
করলে মোদীর কী কোন ক্ষতি হতো ? আর বাংলাদেশের এবং মুসলমানদের কী লাভ
হতো ?

প্রথমেই মোদীকে আমন্ত্রণ জানানোর কারণ-
১) বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানের সাথে ভারত ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালো রাতে যখন আমাদের মুসলিম পশ্চিমা ভাইয়েরা রাতের অন্ধকারে, ঘুমন্ত অবস্থায় আমাদেরকে কাফির ফতোয়া দিয়ে নির্বিচারে হত্যা করা শুরু করে, আমাদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, খাদ্য গোদাম ইত্যাদিতে অগ্নি সংযোগ করে, মা বোনকে নির্যাতন করে তখন কেউই আমাদের সাহায্যে এগিয়ে আসে নাই। সেদিন সকল মুসলিম দেশও
ছিল নিরব। তখন এগিয়ে এসেছিল একমাত্র প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারত। ভারত তার সীমান্ত খুলে দিয়ে এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দেয়, নয় মাস ব্যাপী থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে, অস্ত্র, প্রশিক্ষণ, সর্বোপরি ভারতীয় বাহিনী আত্মাহুতি দিয়ে আমাদের স্বাধীনতাকে তরান্বিত করে। তাই ভারতকে নিমন্ত্রণ করা বাংলাদেশের নৈতিক দায়িত্ব।

২) ভারতের সাথে আঞ্চলিক ও আর্ন্তজাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অনেক সম্পর্ক রয়েছে। ভারত সার্ক, জোট নিরপেক্ষ, কমনওয়েলথ ও জাতিসংঘের প্রভাবশালী সদস্য। সেসব সংস্থায় বাংলাদেশও সদস্য। পররাষ্ট্র বিষয়ে বাংলাদেশের সাফল্যের জন্য ভারতের সাথে সু-সম্পর্ক বজায় রাখা অবশ্যই প্রয়োজন।

৩) ভারত হচ্ছে বাংলাদেশের নিকট প্রতিবেশি বৃহৎ একটি রাষ্ট্র। বাংলাদেশের তিনদিকে ভারতের দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। বহুক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো ভারতের উপর নির্ভরশীল। প্রতিবেশির সাথে সু-সম্পর্ক বজায় না রাখলে বহুবিদ সমস্যা হয়। আর সেই প্রতিবেশি যদি হয় প্রভাবশালী, তাহলে তো কথা নেই। উপরন্তু প্রতিবেশির সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা ইসলামেরও নীতি। ভারতকে নিমন্ত্রণ না করে অন্যান্য প্রতিবেশি রাষ্ট্রকে, ভারতের মিত্র রাষ্ট্রকে নিমন্ত্রণ করা যেত না, নিমন্ত্রণ করলেও আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যেত না, আন্তঃদেশীয় সম্পর্ক, পররাষ্ট্রনীতি অন্য বিষয়। পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার আগেই ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু ভারতের বিরোধিতা সত্ত্বেও পাকিস্তানে ও আইসির সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে পাকিস্তানকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান না আসতে পেরে বাণী পাঠিয়েছেন, এটাই বাস্তবতা। বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে ব্যক্তি নরেন্দ্র মোদীকে নিমন্ত্রণ করা হয় নি। করা হয়েছে ভারতের সরকার প্রধানকে। সেই রাষ্ট্রের নির্বাচিত সরকার প্রধান হিসেবে মোদী এসেছেন। তিনি কোন কারণে আসতে না পারলে
তাঁর প্রতিনিধি পাঠালেও বাংলাদেশ গ্রহণ করতো, যেমনটি অন্য দেশের ক্ষেত্রে হয়েছে। এই গেলো সংক্ষেপে নরেন্দ্র মোদীকে নিমন্ত্রণের কারণ।বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভারতকে, নরেন্দ্র মোদীকে নিমন্ত্রণ না করলে তাঁদের কি কোন ক্ষতি হতো ? এক কথায় না। বাংলাদেশের মতো ক্ষুদ্র রাষ্ট্র ভারতকে নিমন্ত্রণ না করলে তার মোটেই ক্ষতি হতো না। বর্হিবিশ্বের কোন দেশ ভারতকে জিজ্ঞাসা করতো না, ‘তোমাদেরকে বাংলাদেশ নিমন্ত্রণ করে নাই কেন ?’ বরং বাংলাদেশকে অনেক রাষ্ট্র বলতো, তোমরা ভারতকে নিমন্ত্রণ করো, না হলে আমাদের পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়। ভারতকে নিমন্ত্রণ না করলে বাংলাদেশের কী কোন লাভ হতো ? না। মোটেই লাভ হতো না বরং বর্তমানে যতটুকু সু-সম্পর্ক রয়েছে তার আরো অবনতি ঘটত। ভারত ও কাশ্মীরের মুসলমান, বাংলাদেশের জনগণ নানা সমস্যার সম্মুখীন হতো। তার প্রমাণ বাবরী মসজিদ, গুজরাট হত্যাকান্ড ইত্যাদি।

ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ভারতীয় বা বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মুসলমানদের সম্পদ নয়, এটা বিশ্ব মুসলিমের একটি সম্পদ। বিশ্বের মুসলিম বা ওআইসি এ বিষয়ে কী করেছে ? কিছু কি করতে পেরেছে ? পারে নাই। যদি নিমক হারামের মতো বাংলাদেশ ভারতকে নিমন্ত্রণ না করতো, আর ভারত সে দেশের ২৫ কোটি মুসলমানের উপর, বাংলাদেশের সীমান্তে অত্যাচার নির্যাতন বাড়িয়ে দিতো, অর্থনৈতিক, পররাষ্ট্র সংক্রান্ত বিষয়ে নেতিবাচক ভূমিকা গ্রহণ করতো তা কী বাংলাদেশের জন্য, মুসলমানদের জন্য সুফল বয়ে আনতো।এক কথায় না। বরং যতটুকু সম্পর্ক রয়েছে, যতটুকু সুবিধা পাচ্ছে তাও পেতো না। যে দেশে করোনার টিকা উৎপাদিত হয়েছে সেদেশের সাধারণ মানুষ টিকা পাওয়ার আগে ভারতের সহযোগিতায় বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ আগে টিকা পেয়েছে। হেফাজতের বর্ষিয়ান নেতা সদ্য প্রয়াত আল্লামা আহমদ শফি ভারতে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পেরেছেন। আরো বহুক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় অনেক বিষয়ে বাংলাদেশ ভারত থেকে সুবিধা পাচ্ছে। হ্যাঁ তিস্তা সহ অনেক ইস্যুতে সমস্যা আছে। তার সমাধান করতে হবে সু-সম্পর্কের মাধ্যমে, কূটনৈতিকভাবে। উগ্রতা দিয়ে ক্ষতি ছাড়া কোন লাভ হয় না। সাদ্দাম হোসেন, মোল্লা ওমর, উসামা বিন লাদেন উগ্রতা দিয়ে ধ্বংশ হয়েছেন, দেশ ও জাতিকে ধ্বংশ করেছেন। এটা ইসলামও সমর্থন করে না। আল্লাহর নবী মক্কাশরীফের ভিতর মূর্তি রেখে নামায আদায় করেছেন, হজ¦ আদায় করেছেন। যখন তাঁর পরিপূর্ণ শক্তি অর্জিত হয়েছে কেবল তখনই তিনি মূর্তি ভেঙ্গে ফেলেছেন। তাই পবিত্র কুরআনে ধৈর্য্য ধারনের কথা একাধিক বার বলা হয়েছে।

আমাদের দেশের আলেম সমাজ ও একশ্রেণির রাজনীতিবিদ কী এসব জানেন না বা বুঝেন না ? উনারা ঠিকই জানেন এবং বুঝেন। এটা ভারত বা মোদী বিরোধিতা নয়, এটা আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ
বিরোধিতা। কয়েক মাস আগে উনারা ভাস্কর্য বিরোধিতা করে মাঠ গরম করতে না পেরে এখন মোদী বিরোধিতায় নেমেছেন। এই ভারত বিরোধিতা শুরু হয়েছে ১৫ আগস্ট ৭৫ এর পর থেকে। দেখা যাক কোন সরকারের সময় ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক কেমন ছিল, কোন সরকার ভারত থেকে কতটা সুবিধা আদায় করেছিলেন- বঙ্গবন্ধুর সরকার অতি অল্প সময়ের মধ্যে ভারতীয় সৈন্য ফেরত পাঠাতে সক্ষম হয়েছিলেন, বিশ্বের ইতিহাসে যার নাজির নেই। বঙ্গবন্ধুর সরকার ফারাক্ষার পানিচুক্তি করেছিলেন ৪৪ হাজার কিউসেকের বিনিময়ে। বঙ্গবন্ধুর সরকারকে উৎখাত করে এক পর্যায়ে জেনারেল জিয়ার সরকার ক্ষমতায় আসেন। এই সেই
জেনারেল জিয়া যিনি একাত্তর সালে যুদ্ধরত কমান্ডারদের মধ্যে প্রথম ভারতে যান এবং স্বাধীনতার পর সকলের শেষে দেশে ফিরে আসেন। তিনি ফারাক্কা চুক্তি করেছিলেন ৩৪ হাজার কিউসেকে। এক পর্যায়ে জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় আসেন। এই জেনারেল ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ২ বার বাংলাদেশে এসেও মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন নাই। ৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তিনি ছিলেন ভারতে উচ্চতর প্রশিক্ষণে। ১৫ আগস্টের ঘঠনা শুনেই তিনি প্রশিক্ষণ ফেলে বাংলাদেশে চলে আসেন এবং জেনারেল জিয়া এক পর্যায়ে তাকে সেনা প্রধান নিয়োগ করেন। সেই এরশাদ ভারতের সাথে ফারাক্ষার পানি চুক্তি করেন ২৪ হাজার কিউসেকে। পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসেন বেগম জিয়া। তিনি ভারতের সাথে কোন পানি চুক্তি করতে পারেন নাই। ভারত সফর শেষে দেশে আসার পর এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ‘পানি বিষয়ে আলোচনা করতে তিনি ভুলে গিয়েছিলেন।’

জাগপা নেতা শফিউল আলম প্রধানের হুমকির প্রেক্ষিতে বেগম খালেদা জিয়া একাধিক বার সার্ক শীর্ষ সম্মেলন পিছাইয়া ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরসীমা রাওকে শেষ পর্যন্ত শফিউল আলম প্রধানকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশে এনে
সম্মেলন করেছিলেন। সীমান্ত হত্যা সহ অন্যান্য বিষয়ে বাংলাদেশের কোন্ধসঢ়; সরকার বা কোন জেনারেল ভারতের নিকট থেকে কতটা সুবিধা আদায় করেছিলেন, ভারতকে কতটা সুবিধা দিয়েছিলেন এর তুলনামূলক আলোচনা করলে বেরিয়ে আসবে প্রকৃত সত্য, বাংলাদেশে কারা ভারতের তাবেদার বা দালাল।


মোঃ আব্দুল মালিক
শিক্ষক, কলামিস্ট

সহ-সভাপতি
বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদ, সিলেট জেলা, শাখা।
সাধারণ সম্পাদক
বঙ্গবন্ধু গবেষণা সংসদ, সিলেট জেলা, শাখা।
০২-০৪-২০২১খ্রিঃ।
বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ কিঞ্চিত আলোচনা

বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ কিঞ্চিত আলোচনা



মোঃ আব্দুল মালিক

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাঙালি জাতি রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা, বিশে^র নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের কণ্ঠস্বর, বাঙালি জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু, হালের বিশ^বন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম-শতবার্ষিকী-‘মুজিববর্ষ’ বাংলাদেশ সহ বিশে^র বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সংস্থায় অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে, গুরুত্ব সহকারে পালিত হচ্ছে। এমনটি অন্য কোন বিশ^ নেতার বেলায় হয় নি। কিন্তু কেন ? কী ছিল তাঁর জীবনাদর্শ ? বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ বিশাল ও বহুমাত্রিক। তাঁর উচ্চমার্গের জীবনাদর্শ নিয়ে আলোচনার যোগ্যতা আমি রাখি না। তবে এখানে বঙ্গবন্ধুর জীবনের একেবারে প্রাথমিক ও সাধারণ কিছু জীবনাদর্শ নিয়ে কিঞ্চিত আলোচনা করছি।

সাধারণভাবে বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ ছিল-

১) অধিকার আদায়ে সচেষ্ট হওয়া।

২) অন্যায়ের কাছে মাথানত না করা।

৩) ভয়ে পালিয়ে না যাওয়া।

৪) অকপটে সত্য স্বীকার করা।

৫) আত্মসম্মান বজায় রাখা।

৬) লোভ না করা।

৭) জাতিকে ভালোবাসা।

৮) মানুষের উপর আস্থা ও বিশ^াস।

৯) আত্মচিন্তা না করা।

১০। মহান স্রষ্টার উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ^াস।


১) অধিকার আদায়ে সচেষ্ট হওয়াঃ বঙ্গবন্ধু ছিলেন খুবই অধিকার সচেতন। তিনি যখন মাত্র সপ্তম শ্রেণির ছাত্র তখন অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা একে ফজলুল হক ও বাণিজ্যমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গোপালগঞ্জ আসেন। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মিশন হাইস্কুল পরিদর্শনে এলে তরুণ শেখ মুজিব তাঁর পথ আগলে ধরে স্কুলের হোস্টেলের ছাদের সমস্যার বিষয়টি উত্থাপন করেন। তারপর ভারতবাসীর অধিকার আদায়ের জন্য তিনি স্বদেশী আন্দোলনে যোগদেন। স্বাদেশী আন্দোলন যখন হিন্দু জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে রূপ নিল, যখন মুসলমানদের অধিকারের প্রশ্নটি সামনে চলে আসলো তখন তিনি পাকিস্তান আন্দোলনে যোগদেন। পাকিস্তান আন্দোলনের সফল সমাপ্তির পর তিনি যখন দেখলেন বাঙালিদের বঞ্চিত করা হচ্ছে তখন তিনি বাঙালির অধিকার আদায়ে আজীবন সংগ্রাম করে বাঙালি জাতির পূর্ণ অধিকার প্রতিষ্ঠিত করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ উপহার দিয়ে গেছেন। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের কর্মচারীদের অধিকার আদায় করতে গিয়ে তিনি বিশ^বিদ্যালয় থেকে বহিস্কার হয়েছিলেন। অধিকারের প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু কখনো আপোষ করেন নি।


২) অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করাঃ অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করার আদর্শ তিনি সেই ছোটবেলা থেকেই লালন করে আসছেন। তাঁর বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি অনিয়ম করলে তিনি এর প্রতিবাদ করেন। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের কর্মচারীদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অপরাধে তাঁকে যখন মুচলেকা ও জরিমানা দিতে বলা হয়, তিনি তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করে স্বেচ্ছায় বহিস্কারাদেশ মেনে নেন। তবুও অন্যায়ের কাছে মাথানত করেন নি। তিনি এমন সময় ফিলিস্তিনি মুসলমানদের পক্ষাবলম্বন করেছিলেন, যখন প্রভাবশালী মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানরা চুপ করে বসেছিলেন। তিনি বলেছিলেন,‘ আমার অবস্থা যদি চিলির আলেন্দের মতো হয় তবুও আমি সাম্রাজ্যবাদীর কাছে মাথা নত করব না।’ আমৃত্যু তিনি কারো কাছে মাথা নত করেন নি।


৩) ভয়ে পালিয়ে না যাওয়াঃ ভয়ে পালিয়ে না যাওয়ার আদর্শ বঙ্গবন্ধু সেই ছোট বেলায়ই অর্জন করেন। তাঁর বাল্য বন্ধু আব্দুল মালেক কে হিন্দু মহাসভার নেতা তাঁর বাড়িতে বেঁধে রাখেন, তখন তাকে ছাড়িয়ে আনতে গিয়ে হিন্দুদের সাথে মারামারি করার জন্য প্রভাবশালী হিন্দু নেতারা তাঁর বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। পুলিশ তাঁকে ধরে নিতে এসে, পালিয়ে যাবার সুযোগ দিয়েছিল কিন্তু তিনি পালিয়ে যান নি। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ ইচ্ছা করলে তিনি আত্মগোপনে যেতে পারতেন কিন্তু তিনি প্রাণের ভয়ে আত্মোগোপনে বা পালিয়ে যান নি। অথচ সৈনিক মেজর জিয়া ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে শত্রুর কোন হুমকি ছাড়াই চট্টগ্রাম শহর ছেড়ে তার বাহিনী নিয়ে পটিয়ার দিকে পালিয়ে যান। বিপ্লবী উসামা-বিন-লাদেন প্রাণভয়ে আফগানিস্তানের তোরা বোরা পাহাড়ে লুকিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু কখনো এ কাজটি করেন নি।


৪) অকপটে সত্য স্বীকার করাঃ বঙ্গবন্ধু যা সত্য বলে জানতেন তা অকপটে স্বীকার করতেন, কখনো মিথ্যার আশ্রয় নিতেন না। সেই বাল্যকালে হিন্দুদের সাথে মারামারির বিষয়টি বাবা শেখ লুৎফর রহমান যখন তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন তখন তিনি চুপ থেকে বাবাকে বুঝাতে চাইলেন হ্যাঁ মারামারি করেছি। এভাবে তিনি যখন স্বাধীন বাংলাদেশের কর্ণধার তখন বললেন, ‘মানুষ পায় স্বর্ণের খনি, আমি পেয়েছি চোরের খনি। আমার সামনে চোর, ডানে চোর, বামে চোর, পিছনে চোর’। জাতিসংঘে গিয়ে তিনি বললেন, ‘বিশ^ আজ দুই শিবিরে বিভক্ত শোষক আর শোষিত, আমি শোষিতের পক্ষে।’ এভাবে তিনি সারাজীবন অকপটে সত্য স্বীকার করে গেছেন।


৫) আত্মসম্মান বজায় রাখাঃ বঙ্গবন্ধু সারাজীবন আত্মসম্মান বজায় রেখে চলেছেন। তাঁর রাজনৈতিক গুরু সোহরাওয়ার্দী যখন তাঁকে ঘড় নড়ফু বলেন, তখন তিনি এর তীব্র প্রতিবাদ করে বলেছিলেন আমি প্রমাণ করব ‘আমি ঝড়সব নড়ফু.’ পরে সোহরাওয়ার্দী সাহেব তাঁকে স্বসম্মানে ফিরিয়ে নেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার জবানবন্দী প্রদানের সময়, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাঁকে যখন গ্রেফতার করে বিমান বন্দরে নিয়ে রাখে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট যখন ঘাতকরা তাঁর বাড়ি আক্রমণ করে তাঁকে হত্যা করে তখনো তিনি তাঁর আত্মসম্মান বজায় রেখে কথা বলেছেন। দেশ স্বাধীনের পর স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে আমেরিকার রাষ্ট্রপতি জেরাল্ড ফোর্ড ও সউদি আরবের বাদশা ফয়সলসহ অন্যান্যদের সাথে কথা বলার সময় নিজের ও দেশের আত্মসম্মান বজায় রেখে কথা বলেছেন। তিনি সবসময় নিজের, দেশের ও জাতির আত্মসম্মান বজায় রাখতে সচেষ্ট ছিলেন।


৬) লোভ না করাঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একমাত্র ভারত উপমহাদেশীয় রাজনীতিবিদ যিনি স্বেচ্ছায় মন্ত্রীত্ব ত্যাগ করে পার্টির সেক্রেটারীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। ’৭০ সালের নির্বাচনের পর বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে আপোষ করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীত্বের প্রস্তাব তিনি সবিনয়ে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। আর্ন্তজাতিক খ্যাতি সম্পন্ন রাজনীতিবিদ ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি থাকাবস্থায় তিনি তাঁর দুই ছেলেকে সাধারণ ঘরের মেয়েদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেছিলেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি হয়েও নিজের বাড়িতেই সাধারণভাবে থাকতেন। এভাবে তিনি সকল জাগতিক লোভ লালসার উর্ধে ছিলেন।


৭) জাতিকে ভালোবাসাঃ তিনি সব সময় তাঁর জাতিকে ভালোবাসতেন। তাইতো ভারতবাসীর স্বাধীনতার জন্য ইংরেজদের বিরুদ্ধে স্বদেশী আন্দোলনে, তারপর মুসলমান জাতির পক্ষে পাকিস্তান আন্দোলনে, পরে বাঙালি জাতির স্বাধিকার-স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। তিনি কখনো স্বজাতি-স্বভূমির বিরুদ্ধে অবস্থান নেন নি। উল্লেখ্য ১৯০৬ সালে যখন মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয় তখন পাকিস্তানের জনক খ্যাত তরুণ ব্যারিস্টার মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ কংগ্রেসে যোগদান করেছিলেন। এদিক থেকে বঙ্গবন্ধু সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। পাকিস্তানি কারাগারে যখন তাঁর জন্য কবর খোঁড়া হয় তখন তিনি তাদেরকে বলেছিলেন আমাকে ফাঁসি দেও, আপত্তি নেই, তবে আমার লাশ আমার বাঙালির কাছে পাঠিয়ে দিও, এই আমার অনুরোধ। স্বাধীনতার পর এক বিদেশী সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছিলেন, “আমার সবচেয়ে বড় দূর্বলতা আমি আমার মানুষকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসি।”


৮) মানুষের উপর আস্থা ও বিশ^াসঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মানুষকে ভালবাসতেন, মানুষকে বিশ^াস করতেন। এই বিশ^াষে তিনি কখনো জিতেছেন আবার কখনো হেরেছেনও। ৭ই মার্চের ভাষণে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি, তোমরা বন্ধ করে দিবে।’ হ্যাঁ বাঙালিরা ঠিকই বন্ধ করে দিয়েছিল, বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিল। আবার তিনি যাদেরকে বিশ^াস করেছিলেন তাদের হাতেই শহীদ হয়েছিলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী তাঁকে সতর্ক করেছিলেন কিন্তু তিনি বিশ^াস করেন নি। আর বিশ^াস না করেই স্ব-পরিবারে তাঁকে শাহাদৎ বরণ করতে হয়েছে। তবে তাঁর এই বিশ^াস ও আত্মত্যাগ বৃথা যায় নি। তিনি বীরের মতো বাঙালি জাতির হৃদয়ে, বিশ^বাসীর হৃদয়ে অবস্থান করছেন। আর ঘাতক ও তাদের সহযোগিরা মীরজাফর উপাধি পেয়ে ইতিহাসের আস্থাকূড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।


৯) আত্মচিন্তা না করাঃ বঙ্গবন্ধু সারাজীবন কখনো আত্মচিন্তা করেন নি। তিনি সব সময় মানুষের, জাতির ও বিশ^বাসীর চিন্তা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তিনি যদি আত্মচিন্তা করতেন তাহলে যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভার সর্বকনিষ্ঠ মন্ত্রী হওয়ার পরও ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। তারপর গৃহ নির্মাণ ঋণ নিয়ে ধানমন্ডির বাড়ি নির্মাণ করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী-রাষ্ট্রপতি হয়েও সেই বাড়ির ঋণ শোধ করতে পারেন নি। মৃত্যুর পর তাঁর বাড়ি ঋণের দায়ে নিলাম হওয়ার উপক্রম হয়েছিল।


১০) মহান স্রষ্টার উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ^াসঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন একজন খাঁটি বাঙালি ছিলেন তেমনি একজন খাঁটি মুসলমানও। ছয় দফা আন্দোলন থেকে তাঁকে বিরত রাখতে শাসক গোষ্টী আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দিয়ে ফাঁসি কাষ্টে ঝুলাতে চাইলেও তিনি ছয় দফা থেকে সরে আসেন নি। ২৫ মার্চ ’৭১ প্রাণের ভয়ে তিনি পালিয়ে যান নি। এমনকি পাকিস্তানী কারাগারে তাঁর জন্য যখন কবর খোঁড়া হয় তখনও তিনি ভয়ে ভীত হন নি বা যখন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁকে সতর্ক করেন তখনও তিনি নিজের বাসা ছেড়ে সরকারী সুরক্ষিত বাসায় উঠেন নি। এর থেকে প্রমাণ হয় তিনি শুধু মুখে ইসলাম লালন করতেন না, তিনি অন্তর দিয়ে ঈমান ও ইসলাম লালন করতেন। তিনি তাওয়াক্কালতু আলাললায় পূর্ণ আস্থা ও বিশ্ববাসী ছিলেন।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই জীবনাদর্শ বাঙালি জাতি ও বিশ^বাসীর জন্য এক অমূল্য সম্পদ। স্বাধীন বাংলাদেশ বার বার পথ হারিয়েছে আবার বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথেই, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পথেই দিশা পেয়েছে। যতদিন বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর এই আদর্শ লালন করবে ততদিন বাংলাদেশ বিশে^র বুকে গৌরবের সাথে, সম্মানের সাথে টিকে থাকবে। তাই মুখে নয় কাজে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করতে হবে।


লেখক: শিক্ষক ও কলামিস্ট।

الجمعة، 2 أبريل 2021

আতাউর রহমান আফতাব'র কবিতাঃ গ্রীষ্মকালের ডাক

আতাউর রহমান আফতাব'র কবিতাঃ গ্রীষ্মকালের ডাক




গ্রীষ্মকালের ডাক
আতাউর রহমান আফতাব

গ্রীষ্মকাল এলো বলে চারিদিকে মেঘের গর্জন,
চৈত্রমাসের শেষ পক্ষ
বাংলাদেশে বোশেখের ডাক,
বোরো ধান পাকেঁনি তো কৃষক বুনে কল্পনার জাল
এক পশলা বৃষ্টি পাতে পুটি মাছের ফাল। 

গ্রীষ্মকাল আসবে বলে
নববর্ষের শুরু হবে গান,
বাঙালীর ঘরে ঘরে দিন রাত 
হবে কত অনুষ্ঠান।